Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংবাদ -- ২০১৪/৮/১৮
  2014-08-18 17:23:30  cri
১. বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানালেন রাষ্ট্রপতি

বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে মন্তব্য করে বিদেশিদের প্রতি বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শনিবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে 'ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ'-এফআইসিসিআইয়ের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি এসময় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি দেশে বিদেশি বিনিয়োগের শতভাগ নিশ্চয়তা আছে বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশিদের জন্য স্বল্পমূল্যে শ্রমিক প্রাপ্তি, উত্পাদিত পণ্যের বিশাল বাজার, ট্যাক্স হলিডে, ট্রান্সপোর্টেশন ও বন্দর ব্যবহারের সুবিধাসহ নানাবিধ ইনসেনটিভ কার্যক্রম রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এফআইসিসিআইকে এগিয়ে আসারও আহ্বানও জানান তিনি।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ আরো উন্নয়নে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, শিল্প ও উত্পাদনশীল প্রকল্পে বিনিয়োগের ফলে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়। বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রসারে সরকার বিনিয়োগ-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, আইন ও বিধি সংস্কার তথা সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ‌এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে ১৭৩০.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি। এ ছাড়া, ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এফআইসিসিআই সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, "একটি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশের বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সম্পর্কে সকলকে অবগত করা আপনাদের সকলের দায়িত্ব। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আপনারা নিরলস ও আন্তরিক তত্পরতা অব্যাহত রাখবেন-এ বিশ্বাস আমার রয়েছে।"

এফআইসিসিআইর সভাপতি রূপালী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি'র ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ইয়ুংওয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সাঙ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী জিম ম্যাকাবে বক্তব্য দেন।

২. বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়ছে

বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়ছে। জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট ২৪ হাজার ৩০৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৬০২ কোটি টাকা সুদ-আসল বাবদ তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। এ হিসাবে গত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের (২০১২-১৩) চেয়ে ১৫ গুণেরও বেশি।

২০১২-১৩ অর্থবছরে পরিবার সঞ্চয়পত্রসহ মোট ২৩ হাজার ৩২৭ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসলসহ ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা তুলে নেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে নিট বিক্রি ছিল ৭৭৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর পরিমাণ কমেছে ৪৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখতের উদ্ধৃতি দিয়ে বিডিনিউজ জানায়, ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ হওয়ায় একদিকে যেমন নতুন নতুন বিনিয়োগকারী সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছে; অন্যদিকে যাদের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে তারাও আসলটা না তুলে ফের বিনিয়োগ করছেন। এ কারণেই নিট বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে।

এদিকে, গত অর্থবছর বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের ৮০ শতাংশই ছিল পারিবারিক সঞ্চয়পত্র। এছাড়া ১৫ শতাংশ পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং বাকি ৫ শতাংশ অন্যান্য সঞ্চয়পত্র।

উল্লেখ্য, জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের মাধ্যমে বর্তমানে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ছাড়াও প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ছয় মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়।

৩. বিদেশি লগ্নি ও কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা টানতে দশটি জায়গাকে 'স্মার্ট সিটি' হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। রোববার থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর সফরের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। তার কারণ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ শনিবারই তাঁর একদিনের সিঙ্গাপুর সফর শেষে বলেছেন, স্মার্ট সিটি প্রকল্পে সহায়তা করতে রাজি সিঙ্গাপুর। শনিবার ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েলটর্স এবং রিয়েলটর্স অ্যান্ড এস্টেট কনসালট্যান্টস অ্যাসোসিয়েশন অব কলকাতা আয়োজিত আলোচনাসভায় জানানো হয়, স্মার্ট সিটি-র মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে, নিউটাউন, বোলপুর, দুর্গাপুর, বাউড়িয়া, রঘুনাথপুর, জয়গাঁ, ফুলবাড়ি, গঙ্গাসাগর, হুগলি, কল্যাণীকে।

৪. পাকিস্তানে রপ্তানি আয় কমেছে

পাকিস্তানে রপ্তানি আয় চলতি বছরের জুলাই মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ কমেছে। গত বছরের জুলাই মাসে যেখানে রপ্তানি আয় হয়েছিল ২০৯ কোটি মার্কিন ডলার, সেখানে চলতি বছরের জুলাই মাসে আয় নেমে এসেছে ১৯৩ কোটি মার্কিন ডলারে। দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরো শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পাকিস্তানের রপ্তানি আয় হয়েছিল ২৫১৩ কোটি মার্কিন ডলার, যার আগের বছরের তুলনায় ২.৭৫ শতাংশ বেশি।

এদিকে, বাণিজ্যমন্ত্রী খুররম দস্তগির খান বলেছেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে রপ্তানি আয় কমার একটি কারণ হচ্ছে দেশের বন্দরসমূহ প্রায় ১১ দিন বন্ধ থাকা। তিনি বলেন, সরকার রপ্তানি আয় রাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

ওদিকে, চলতি বছরের জুলাই মাসে আমদানিও গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ১১.৮০ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে যেখানে আমদানি হয়েছে ৩৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য, সেখানে তার আগের বছরের জুলাইয়ে আমদানি হয়েছিল ৩৮১ কোটি ডলারের পণ্য।

৫. পাকিস্তান সফরে যাবে ভারতের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল

কনফেডারেশান অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই)-এর একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল চলতি মাসে পাকিস্তান সফর করবে। সফরের উদ্দেশ্য হবে দু'দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন রাজেশ মেনন। প্রতিনিধি দলটি ফেডারেশান অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট উসমান জাকারিয়া এবং পাকিস্তান ট্রেড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রধান নির্বাহী এস এম মুনিরসহ কর্পোরেট সেক্টরের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবে।

(আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040