Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির সংবাদ ---২০১৪/৭/২৮
  2014-07-28 15:18:05  cri

১. বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিল্পনীতি-২০১৫

বাংলাদেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে 'জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৫' ঘোষণা করা হবে। আর এ লক্ষ্যে দেশের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে তিনটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটিগুলো তাদের সুপারিশ জমা দেবে এবং সেসব সুপারিশের ভিত্তিতেই শিল্পনীতির খসড়া প্রণয়ন করা হবে। দেশটির শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সম্প্রতি জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

সভায় দেশের বিসিক শিল্পনগরগুলোতে মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ শতাংশ শিল্পপ্লট বরাদ্দ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতেও শিল্পনগরগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নতুন জাতীয় শিল্পনীতিতে বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্যাকেজ সুবিধা দেওয়াসংক্রান্ত নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২. বাংলাদেশে রপ্তানি আয় তিন হাজার কোটি ডলার ছাড়ালো

বিগত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩১৭৬ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১১.৬৫ শতাংশ বেশি এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক শতাংশ কম। সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-র সভাকক্ষে এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

তিনি জানান, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৩২০ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, সরকার রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও চিলি আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশকে শুল্ক ও কোটা সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, পুরনো বাজার ধরে রেখে, নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর দিকে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরে ৯.৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬৮৯ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এ লক্ষ্যমাত্রাকে 'বাস্তবসম্মত'ও 'অর্জনযোগ্য'বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিগত অর্থবছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ২৪৪৯ কোটি মার্কিন ডলার।

তৈরি পোশাক শিল্প ছাড়া, চলতি অর্থবছর পাট ও পাটজাত পণ্যে ৮৩ কোটি ৫৩ লাখ, কৃষিজাত পণ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ৬২ কোটি ৫০ লাখ, প্লাস্টিক খাতে ৯ কোটি, ওষুধে ৭ কোটি ৩০ লাখ, হিমায়িত খাদ্যে ৭৩ কোটি ১০ লাখ, বাইসাইকেলে ১২ কোটি ১২ লাখ এবং আসবাবে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

৩. ফরমালিনের কারণে বাংলাদেশের ফল রপ্তানিতে ভাটা

বাংলাদেশ থেকে ফল রপ্তানি কমে গেছে। গত কয়েক বছর ধরে ফল রপ্তানি ক্রমাগত বাড়লেও, গেল বছর তা কমেছে। এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে ফলে ফরমালিন ব্যবহারকে। বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-র তথ্য অনুসারে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশ থেকে ফল রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪৬ মার্কিন ডলারের। আগের বছরের তুলনায় যা ১৪ শতাংশ কম।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন,ফল রপ্তানির পরিমাণ কমে যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ ক্রিয়াশীল থাকলেও, বড় কারণ ফরমালিন। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে দেশের ফল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আছে। তাঁরা মনে করেন, দেশের প্রায় সব ফলেই এখন ফরমালিন দেওয়া হয়। এ কারণে তাঁরা দেশীয় ফল খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। আর এরই প্রভাব পড়েছে ফল রপ্তানিতে।

৪. গত অর্থবছরে পাঁচ শতাধিক কোটি মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে, গত অর্থবছরে বাজার থেকে ৫১৫ কোটি মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান সম্প্রতি এ তথ্য জানান।

গভর্নর বলেন,গত অর্থবছরে যে পরিমাণ রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স এসেছে, সেই অনুপাতে আমদানি খাতে ব্যয় হয়নি। ফলে দেশে ডলারের মজুদ বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে দেশে তিন হাজার ৩১৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে,যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-র তথ্য অনুযায়ী,গেল অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৮ কোটি মার্কিন ডলার। তা ছাড়া, এসময় প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৪২২ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।

এদিকে, ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে প্রতি ডলারের বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৬৩ পয়সা। আগের অর্থবছর শেষে এই পরিমাণ ৭৭ টাকা ৭৬ পয়সা ছিল।

৫. কালো টাকা উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চালাবে ভারতীয় সরকার

বিদেশি ব্যাংকে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি, দেশে থাকা কালো টাকা উদ্ধারেও জোর প্রচেষ্টা চালাবে ভারতীয় সরকার। সম্প্রতি দেশটির অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আয়কর দফরতের সকল কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে জোর তত্পরতা চালানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনার সব রকম চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের কালো টাকা উদ্ধারে আয়কর অফিসারদের সাহায্য লাগবে, তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।

সম্প্রতি গোটা ভারতের আয়কর দফরতের পদস্থ কর্মকর্তাদের এক সভায় অর্থমন্ত্রী এও স্বীকার করেন যে, তাদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। কারণ, চলতি বছর প্রত্যক্ষ কর বাবদ ৭,৩৬,২২১ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও কাজ করতে হবে তাদের।

উল্লেখ্য, বিগত নির্বাচনে ভোটের প্রচার শুরুর আগে থেকেই কালো টাকা উদ্ধারে জেহাদ ঘোষণা করেছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পরে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সুইত্জারল্যান্ড কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখেন এবং সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধারে সাহায্য চান। এ ছাড়া, বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধারে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি শাহের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-ও তৈরি করা হয়েছে।

৬. আফগানিস্তানে পাকিস্তানের রফতানি কমেছে; বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ও চীনে

২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে আফগানিস্তানে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলানায় ৮.৮ শতাংশ কমেছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে প্রতবেশী দেশটিতে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৯২ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। সম্প্রতি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অবশ্য রফতানি কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।

প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সময়কালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ বেড়েছে যথাক্রমে ১.৯০ ও ১.৯৬ শতাংশ। এ ছাড়া, একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের রফতানির পরিমাণ কমেছে ২৯.৭২ শতাংশ।

৭. ইসরাইলে শ্রীলংকার বিনিয়োগ বোর্ডের তত্পরতা

শ্রীলংকার বিনিয়োগ বোর্ড সম্প্রতি তেল আবিবে পুঁজি বিনিয়োগ সংক্রান্ত এক সভায় ইসরাইলের ব্যবসায়ী মহলের সাথে মত বিনিময় করে। সভায় লংকান বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ডক্টর লাক্সমান জয়াভিরা ইসরাইলি বিনিয়োগকারীদের সামনে তার দেশে বিনিয়োগের নানান সুযোগ-সুবিধার বিষয় তুলে ধরেন। এসময় সভায় উপস্থিত ইসরাইলি বেসরকারী বিনিয়োগকারীরা শ্রীলংকায় তাদের পুঁজি বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে লংকান গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে লংকান বিনিয়োগ বোর্ডের অধীনে মোট পাঁচটি ইসরাইলি কোম্পানি শ্রীলংকায় ব্যবসা করছে। কোম্পানিগুলো মূলত কৃষি, স্বর্ণালঙ্কার, ধাতু সামগ্রী ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ করেছে।

(আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040