Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংবাদ ---২০১৪/৭/১৪
  2014-07-14 19:16:39  cri

১. গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি

বিগত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি-আয় হয়েছে ৩০১৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের তুলনায় ১১.৬৫ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে রপ্তানি আয় হয়েছিল ২৭০২ কোটি মার্কিন ডলার। অবশ্য বিগত অর্থবছরের জন্য রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল, আয় হয়েছে তার চেয়ে এক শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সম্প্রতি পণ্য রপ্তানি-আয়ের যে হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর তৈরি পোশাকশিল্প খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ২৪৪৯ কোটি ডলার, যা মোট রপ্তানি-আয়ের ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ বছর এ খাতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩.৮৬ শতাংশ। তৈরি পোশাক ছাড়াও হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল খাতেও রপ্তানি-আয় ছিল প্রত্যাশিত মাত্রায়। তবে, পাট ও পাটজাত পণ্য খাতে ৮২ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ এবং গত অর্থবছরের চেয়ে ২০ শতাংশ কম।

ইপিবির তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছরে হিমায়িত খাদ্যে ৬৩ কোটি ৮১ লাখ, কৃষিজাত পণ্যে সাড়ে ৬১ কোটি, চামড়ায় ৫০ কোটি, চামড়াজাত পণ্যে ২৪ কোটি, হোম টেক্সটাইলে ৭৯ কোটি, পাদুকায় ৫৫ কোটি, প্রকৌশল পণ্যে ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ, কম্পিউটার সেবায় (জুলাই-মে) ১১ কোটি, প্লাস্টিকে ৮ কোটি ৫৭ লাখ, আসবাবে চার কোটি ২৫ লাখ, টেরিটাওয়েলে ছয় কোটি ৭১ লাখ ডলার রপ্তানি-আয় হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৮.৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্যে।

২. 'আকু'-তে বাংলাদেশের লেনদেন বেড়েছে

বাংলাদেশসহ নয়টি দেশের অলিখিত বাণিজ্য জোট হিসেবে পরিচিত 'আকু' (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন)-তে বাংলাদেশের লেনদেন চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রায় ৩১ শতাংশ বেড়েছে। ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত 'আকু'র সচিবালয়ের গত জুন মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, আকুভুক্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ জানুয়ারি-জুন সময়ে প্রায় ৩১৫ কোটি ডলারের পণ্যসেবা আমদানি করেছে। ২০১৩ সালের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল প্রায় ২৩৬ কোটি ডলার। একই সময়ে আকুভুক্ত দেশগুলোয় আকুর মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্যসেবা রপ্তানির পরিমাণ ছিল সাড়ে চার কোটি ডলার। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে সাত কোটি ডলার।

এদিকে, একই সময়ে আকুর সদস্যদেশগুলোর মধ্যে শুধু ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক লেনদেন বেড়েছে। এসব দেশের মধ্যে পাকিস্তান বাদে প্রত্যেকের লেনদেন দুই কোটি ডলারের নিচে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ—এই নয়টি দেশ বর্তমানে 'আকু'র সদস্য।

৩. ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৩৫ শতাংশ

গড় হিসাবে ৭.৩৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ২০১৩-১৪ অর্থবছর। এর মানে, অর্থমন্ত্রী বাজেটে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে আটকে রাখার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) এ তথ্য জানান। ২০১২-১৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬.৭৮ শতাংশ। ২০০৫-০৬ বছরকে ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির এই হিসাব করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস।

৪. বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতি তদন্তের নির্দেশ দিল সংসদীয় কমিটি

সম্প্রতি ঢাকায় সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সংসদীয় কমিটি সরকারি টাকা লোপাটের জন্য বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে অভিযুক্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করে তা সংসদীয় কমিটিকে জানাতেও বলা হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শওকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, যাঁরা জড়িত তাঁদের বরখাস্ত করা যথেষ্ট নয়। তাঁদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাঁদের কাছ থেকে সরকারের টাকা আদায় করতে হবে। কমিটি এখন পর্যন্ত এই দুর্নীতির সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে কমিটির সভাপতি জানান।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঋণের নামে বেসিক ব্যাংকে যে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, এরই বড় অংশকে খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। এই অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সংসদীয় কমিটিকে দেওয়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের পর থেকে ক্রমান্বয়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতা নেওয়ার সময় রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ১৪১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সাড়ে পাঁচ বছর পর সেই খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে চার হাজার ১৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির হার ২৮৪৪ শতাংশ। আবার সে সময়ে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৬৪ কোটি টাকা, এখন লোকসান ৫৩ কোটি টাকা।

৫. বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও রাস্তা নির্মাণে ভারতীয় বাজেটে এক হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ

ভারতের পানিসম্পদের উন্নয়নে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর সংযুক্তিকরণ সমীক্ষাকাজে ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেটে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সম্প্রতি সংসদে বাজেট পেশকালে এই প্রস্তাব রাখেন। এ ছাড়া, বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কাঁটাতারের বেড়া ও রাস্তা তৈরিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক হাজার কোটি রুপি।

অরুণ জেটলি তাঁর বাজেট বক্তৃতায় নদীসংযুক্তিকরণ সমীক্ষাকাজের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই অর্থে নদীসংযুক্তিকরণের সম্পূর্ণ প্রকল্প প্রতিবেদন (প্রজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করা হবে। সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। এর আগে অটল বিহারি বাজপেয়ি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নদীসংযুক্তিকরণের প্রস্তাব রেখেছিলেন। তখনই পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বহু কর্মী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তাঁদের যুক্তি, এইভাবে সংযুক্তিকরণ প্রকৃতির সর্বনাশ ডেকে আনবে। পরিবেশবিদেরা ছাড়াও শুরু থেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে বাংলাদেশ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪। সংযুক্তিকরণ ঘটানো হলে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমে যাবে।

এদিকে, মোট ৪০৯৬ কিলোমিটার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ৩৩২৬ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০১ কিলোমিটার এলাকায় এখনো কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়নি। এই বাকি ৫০১ কিলোমিটারের মধ্যে এ মুহূর্তে ১৩০ কিলোমিটারে বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ জন্য ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ ছিল। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য সেই বরাদ্দ পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ৫০০ কোটি রুপি করেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তে সড়ক তৈরির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫৮ কোটি রুপি।

৬. ভারত থেকে ব্যবসা গোটাচ্ছে ক্যারফোর

মাত্র ৪ বছর ব্যবসা করার পরই ভারত থেকে পাততাড়ি গোটাচ্ছে ফরাসি রিটেল বহুজাতিক 'ক্যারফোর'। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ দেশে তাদের ৫টি পাইকারি বিপণি বন্ধ হবে। আনন্দাবাজার জানিয়েছে, ভারতের ব্যবসা বিক্রি করতে রিলায়্যান্স রিটেল, ভারতী এন্টারপ্রাইজেস-সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথাও বলছে ক্যারফোর।

৭. লংকান মুরগির মাংস ও ডিমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল আরব আমিরাত

শ্রীলংকার মুরগির মাংস ও ডিমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। এর আগে দেশটি এশীয় দেশগুলো থেকে মুরগির মাংস ও ডিম আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি শ্রীলংকা এভিয়ান ইফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে মুক্ত বলে প্রমাণিত হওয়ায় দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো।

(আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040