|
চীন দেশে এক বণিক। প্রচুর ধন সম্পদের মালিক, রাজ প্রাসাদের মত এক বাড়ি তার আর চারপাশে নানা রঙের ফুলের বাগান। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা থাকে সমস্ত প্রাসাদ। বণিকের তিনটি ছেলে এবং তিনটি মেয়ে। দারুন আদর করেন তার ছেলে মেয়েদের। ওরা ছিল বণিকের হৃদয়ের টুকরা, নয়নের মণি। এদের মধ্যে ছোট মেয়েটি ছিল পরীর ন্যায় অপরূপ-পরমা সুন্দরী। সে তার বাবাকেও প্রচন্ড রকম ভালবাসে। বাবাকে ছাড়া যেন একদন্ডও থাকতে পারে না। সুখ শান্তি আর ধন সম্পদে এই বণিকের পরিবারে অভাব বলে যেন কিছুই আর নেই। কিন্তু মানুষের সুখতো আর চিরস্থায়ী নয় তাই বণিকের জীবনেও এই সুখ আর দীর্ঘস্থায়ী হলো না। একের পর এক দূর্ঘটনার কবলে পড়ে সওদাগরী জাহাজ ডুবে যায় না হয় দস্যুদের কবলে পড়ে লুট হয়ে যায় আবার বড় বড় সব গুদামে আগুন লেগে সর্বস্বান্ত হয়ে যায় এই ধনাঢ্য বণিক। তার অবস্থা এমনই খারাপ হয়ে যায় যে অবশেষে তার সখের প্রাসাদটিও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। অবশেষে নিঃশ্ব হয়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে চলে যায় দূর গ্রামে।
এবার বণিকের জীবনে শুরু হয় কঠিন এক সময়। ক্ষেতে খামারে কাজ করে, হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যা কিছু আয় হয় তাই দিয়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে এক পেট আধাপেট খেয়ে কোনো মতে তাদের দিন কেটে যাচ্ছিল।
এইভাবে বেশ কিছুদিন পর হঠাত্ একদিন খবর এলো যে লুট হয়ে যাওয়া একটি জাহাজ উদ্ধার হয়েছে। বণিকতো মহাখুশী। সেখানে যাবার জন্য বণিক তৈরী হচ্ছে আর মেয়েদের ডেকে বলছে তোমাদের কার কি লাগবে। এই কথা শুনে বড় মেয়ে দুটিতো জারপরনাই খুশী। এক বিশাল ফর্দ লিখে দিল বাবার হাতে। বাবা দেখল শিল্কের শাড়ি, হীরের মালা, সোনার গয়না আরও কতসব দামী দামী সামগ্রী নিয়ে আসার কথা লিখেছে তার বড় দুই মেয়ে। এরপর বণিক তার আদরের ছোট মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলো-
বাবা: মামনি আমি বন্দরে যাচ্ছি। কতদিন হলো তোমাদেরকে কোনো কিছু কিনে দিতে পারিনাই। বলো মা তোমার কি চাই। তোমার জন্য কি আনবো?
মেয়ে: বাবা, আমার জন্য তোমাকে কিছুই আনতে হবে না। তুমি ভালোয় ভালোয় ফিরে আসলেই আমি খুশী হবো। আচ্ছা বাবা, তুমি যখন বলছ তাহলে তুমি আমার জন্য একটি লাল গোলাপ ফুল নিয়ে এসো।
বাবা: শুধু লাল গোলাপ ফুল! আচ্ছা মা তোমার জন্য তাই আনা হবে।
| ||||
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |