|
||||||||||||||||||||||||||||
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লাসায় ১৯ জুলাই তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৬০তম বার্ষিকী সংক্রান্ত আড়ম্বরপূর্ণ উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। চীনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি দল তিব্বতের বিভিন্ন জাতির জনগণের একসাথে এ উদযাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
আজ লাসা শহরের চার দিকে রঙিন পতাকা ও তাজা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে; সব জায়গা আনন্দময় গান ও হাসির আওয়াজ শোনা যায়। বিভিন্ন জাতির জনগণ নিজেদের জাতীয় পোষাক পরে আগে থেকে পোতালা ভবন মহাচত্বরে এসে নাচগান করে এ আনন্দ মুহুর্ত উপভোগ করেন।
সকাল দশটা থেকে উদযাপানী অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের তালে তালে পোতালা ভবন মহাচত্বরে ধীরে ধীরে পাঁচ-তারা খচিত লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়। চীনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি দলের প্রধান সি চিন পিং তাঁর ভাষণে বলেন, 'তিব্বতের কাজ ভালোভাবে করা হচ্ছে গভীরভাবে বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়ন তত্ত্ব কার্যকর করা, সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার জরুরি চাহিদা, টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের জরুরি চাহিদা, জাতির সংহতি ও সমাজের স্থিতিশীলতা রক্ষা করার জরুরি চাহিদা এবং দেশের পুনরেকীকরণ ও নিরাপত্তা রক্ষা করার জরুরি চাহিদা।'
১৯৫১ সালে কেন্দ্রীয় গণ সরকারের পূর্ণক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি আর তিব্বতের সাবেক স্থানীয় সরকারের পূর্ণক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি পেইচিংয়ে 'তিব্বতকে শান্তিপূর্ণ মুক্তির উপায় বিষয়ক চুক্তি' স্বাক্ষর করেন এবং তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তি ঘোষণা করেন। এ থেকে প্রতিপন্ন হয় যে, নতুন ঐতিহাসিক শর্তে চীনা জাতির মহা সংহতি বাস্তবায়িত হয়েছে, তিব্বতের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে।
তিব্বতের উন্নয়ন ইতিহাসের সারসংকলন করে সি চিন পিং বলেন, 'তিব্বতের অর্থনীতির নিরবিচ্ছিন্ন ও দ্রুত উন্নতি হয়েছে, অবকাঠামো নির্মাণ ক্ষেত্রে বিরাট সাফল্য অর্জিত হয়েছে, বিশিষ্ট্য শিল্পের প্রাধান্য সৃষ্টি হয়েছে, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষিত হয়েছে, তিব্বতী জাতির চমত্কার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও সম্প্রচার হয়েছে এবং সমাজতান্ত্রিক উন্নত মানের সংস্কৃতি সেখানকার প্রধান ছন্দে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ব্রতও উত্সাহব্যঞ্জকভাবে প্রসারিত হয়েছে।'
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ সালে তিব্বতের কৃষক ও পশুপালকদের বার্ষিক মাথাপিছু নিট আয় ৪১০০ ইউয়ানেরও বেশি। প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার পরিবারের ১৪ লাখ কৃষক ও পশুপালক নতুন বসতবাড়িতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তিব্বতের গড় আয়ু শান্তিপূর্ণ মুক্তির আগের ৩৫.৫ বছর থেকে বেড়ে ৬৭ বছরে পৌঁছেছে।
জীবনযাপনের মান উন্নয়নের পাশাপাশি তিব্বতের বিভিন্ন জাতির জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতাও যথাযথ সম্মান পেয়েছে। এখন তিব্বতে মোট ১৭০০টিরও বেশি তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থান আছে, ৪৬ হাজার সন্নাসী আছেন। ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম বিশ্বাসের স্বাধীনতা আইন দ্বারা সংরক্ষিত।
উদযাপনী অনুষ্ঠানের পর মহাসমারোহপূর্ণ শুভযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
তিব্বতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন রংয়ের জাতীয় পোষাক পরা কৃষক ও পশুপালকদের 'স্বদেশকে শুভেচ্ছা', 'তিব্বতকে শুভেচ্ছা', 'কমিউনিস্ট পার্টি জিন্দাবাদ' ইত্যাদি শ্লোগানের জোর আওয়াজ পোতালা ভবন মহাচত্বরের আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে যায়। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)

| ||||

| © China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |