|
১৯৫১ সালে তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির আগে সেখানকার জাতিগত ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি কেবল ধর্মের আনুষঙ্গিক বিষয় ছিল। ৬০ বছরে চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ মানের যত্নে তিব্বতের সংস্কৃতি ব্রতে লক্ষণীয় উন্নতি হয়েছে।
পর্যটক ও শহরবাসীদেরকে বিস্তারিতভাবে তিব্বতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানানোর জন্য তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জাদুঘরের প্রধান জাশিদাওয়া সবসময় নিজেই এ জাদুঘরে সংরক্ষিত নানা সামগ্রী সম্পর্কে ও পিছনের ঐতিহাসিক গল্প ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, এখন তিব্বত জাদুঘরে চল্লিশ হাজারেরও বেশি সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংরক্ষণ আছে। জাশিদাওয়া বলেন, 'আমাদের জাদুঘর গত নব্বইয়ের দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা সংখ্যালঘু জাতির কৃতী ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি রক্ষা ও উত্তরাধিকার করার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। অনেক চমত্কার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আমাদের জাদুঘরে সংরক্ষণ আছে এবং সেগুলোর সম্প্রচার হয়েছে।'
তিব্বতে গণতান্ত্রিক সংস্কার চালু হওয়ার পর সেখানকার সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংরক্ষণ প্রকল্প দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও দেশের গুরুত্ব পেয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৪০ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি ব্যয় করা হয়েছে এ প্রকল্পে। সে অর্থ দিয়ে পর্যায়ক্রমে তিব্বতের পোতালা ভবন, রোবুলিকা ও সাজা মন্দিরসহ নানা পুরাকীর্তি মেরামত করা হয়েছে এবং জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রায় ১০ লাখ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক নিদর্শনকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
'গেসার সম্রাট জীবনী' হচ্ছে বর্তমানে বিশ্বে সর্বজনীন দীর্ঘতম গীতি মহাকাব্য। এ মূল্যবান জাতিগত মহাকাব্য সংরক্ষণের জন্য গত আশির দশকে চীন সরকার বিশেষ করে 'গেসার সম্রাট জীবনী' উদ্ধার কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সামাজিক বিজ্ঞান এ্যাকাডেমির প্রথা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ছিরেনপিংছু বলেন, 'এ পর্যন্ত আমরা একই শিল্পীর গাওয়া অপেক্ষাকৃত সম্পূর্ণ গেসার সম্রাট জীবনী রেকর্ডিং করেছি ৪৫টি খণ্ডের ৪৯টি বই, মোট ২১১৪ ঘন্টা। এটা বিশ্বের দীর্ঘতম মহাকাব্যের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।'
এ পর্যন্ত তিব্বতের মোট ৭৬টি প্রতিনিধিত্ব কর্ম এবং ৫৩ জন ব্যক্তি জাতীয় পর্যায়ের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের প্রতিনিধিত্ব কর্মতালিকা আর অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার প্রকল্পের প্রতিনিধিত্ব উত্তরাধিকারীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ব্যাপক সংখ্যক কৃষক ও পশুপালকদের যাতে সাংস্কৃতিক ব্রত উন্নয়নের সুফল উপভোগ করতে পারে সে জন্য একাদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা চলাকালে তিব্বত গণ সাংস্কৃতিক সেবা ব্যবস্থাকে গণ জীবিকা উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গ্রহণ করে এবং জোরালোভাবে 'সাংস্কৃতিক সুবিধা প্রকল্প' চালু করে। এখন তিব্বতে প্রাথমিকভাবে বিভাগ, নগর, জেলা, থানা ও গ্রাম - এ পাঁচ পর্যায়ের স্থাপনা জাল গড়ে উঠেছে। অঞ্চলের ৯০ শতাংশ এলাকা বেতার ও টেলিভিশন নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। লাসা শহরের লিনচৌ জেলার কাজ গ্রামের কৃষক চিরেনরোবু বলেন, 'এখন বাসায় বসে চল্লিশটিরও বেশি টেলিভিশন ও বেতার চ্যানেল দেখা ও শোনা যায়। আমাদের গ্রামে প্রতি মাসে দুটি চলচ্চিত্র দেখানো হয়। এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মানসিক সংস্কৃতির চাহিদা মিটিয়েছে এবং দৃষ্টিকোণও সম্প্রসারণ করেছে। খুব সুখী মনে হচ্ছে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
| ||||
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |