|
শ্রোতাবন্ধুরা, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশে চীনের প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১১ সালে চীনের বিনিয়োগকারীদের অ-আর্থিক বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিমাণ ৬০.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। এ-অংক ২০০৭ সালের ৩.৭ গুণ।
২০১০ সাল পর্যন্ত চীনের মূলভূখণ্ডের বিনিয়োগকারীরা বিশ্বের ১৭৮টি দেশ ও অঞ্চলে মোট ৩১.৭২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে ১৬ হাজারটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। কারখানা স্থাপনের মাধ্যমেই মূলত চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করে থাকে।
ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে নিয়ে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে বিভিন্ন ধরনের কারখানা স্থাপন করে। তেমনই কয়েকটি কারণ হচ্ছে: বাজার সম্প্রসারণ, বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড গড়ে তোলা, উত্পাদন-ব্যয় হ্রাস করা, সম্পদ সরবরাহ নিশ্চিত করা ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে: দেশের বাইরে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোন ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে? এদের সফলতার হারই বা কেমন? বন্ধুরা, এসব বিষয় নিয়েই আমরা আজ আলোচনা করব। চলুন তাহলে সে-আলোচনা শোনা যাক।
২০০১ সালে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দেয়। একই সালে সানসোং, প্যানাসোনিকসহ ঘরোয়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি উত্পাদক বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের বাজারে পর্যায়ক্রমে বিনিয়োগ বাড়াতে থাকে। সে-বছর বিদেশী পণ্যের ব্যাপক চাহিদার কারনে চীনের শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত আটটি ঘরোয়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি উত্পাদক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের লোকসান হয় ২.৮ বিলিয়ন ইউয়ান।
চীনের হাইয়ার গোষ্ঠি
১৯৯৯ সালে চীনের হাইয়ার গোষ্ঠি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনা রাজ্যে মার্কিন হাইয়ার শিল্প-উদ্যান প্রতিষ্ঠা করে। সেখানে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য বৈশিষ্ট্যসূচক পণ্য উত্পাদন করা হয়।
এ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চাং রুই মিন বলেন, "এই ব্যাঙ আকৃতির টেলিভিশন সেটটি দেখুন। এটি চালু করতে শিশুদের একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। তাদের দৃষ্টিক্ষক্তি রক্ষার জন্য একটা নির্ধারিত সময় পর এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তাই পিতামাতারা তাদের শিশুসন্তানদের জন্য এটি পছন্দ করেন।"
হাইয়ারের পণ্যের নকশা করার ক্ষেত্রেও ভোক্তাদের রূচির দিকে খেয়াল রাখা হয়। তাই এসব পণ্য মার্কিনিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩০ শতাংশ মার্কিন পরিবার হাইয়ারের পণ্য ব্যবহার করছে।
হাইয়ারের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড পরিচালনা বিষয়ক মহা তত্ত্বাবধায়ক চাং টিয়ে ইয়ান বলেন, "হাইয়ার বিশ্বাস করে, গবেষণার মাধ্যমে পণ্যের মানোন্নয়ন করে নিজেদের উত্পাদিত পণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া যায়। এতে ভোক্তাদের লাভ কী? এতে করে তাদের চাহিদা দ্রুত মিটে যায়।"
হাইয়ার পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোতে বিনিয়োগ করে নিজস্ব কারখানা প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানকার বাজারে স্বীকৃতি ও ব্র্যান্ডের সুনাম অর্জন করা। এরপর সেই অর্জিত সুনাম কাজে লাগিয়ে উন্নয়নশীল দেশের বাজারে প্রবেশ করা।
| ||||
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |