0721yinyue.mp3
|
বন্ধুরা, আজকের এ অনুষ্ঠানে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো চীনের বিখ্যাত লোকসংগীত সুরকার হুয়া ইয়ান জুন এবং তার সুরের সাথে। হুয়া ইয়ান জুনের আরেকটি নাম দেশে-বিদেশে বেশি প্রচলিত। আর তা হচ্ছে আবিং।
সুরকার আবিং
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন আবিংয়ের চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র এরহু দিয়ে বাজানো 'দুটি ঝরনায় চাঁদের ছায়া' নামের একটি অপূর্ব সুর। এ সুরটি আবিংয়ের সৃষ্টি করা সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী সুর।
বিংশ শতাব্দীর ৫০'র দশকের প্রথম দিকে সুরকার ইয়াং ইন লিউ আবিংয়ের বাজানো সুর রেকর্ডিং করে সংগীতের নোটেশন লিখে ডিস্ক প্রকাশ করেন। এ ডিস্ক সারা দেশে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এ সুরে কষ্ট ও বেদনা ভোগকারী একজন অন্ধশিল্পীর আবেগ প্রতিফলিত হয়েছে। আবিংয়ের তৈরি সুরে চীনা লোকসংগীতের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কৌশল এবং এরহু'রের অদ্বিতীয় মনোহর ধ্বনী প্রকাশিত হয়েছে। এই সুরটি 'বিংশ শতাব্দীর চীনের শ্রেষ্ঠ সংগীত কর্ম পুরস্কার' লাভ করে।
প্রিয় শ্রোতা, বিখ্যাত লোকসংগীত সুরকার আবিংয়ের জন্মস্থান চীনের চিয়াংসু প্রদেশের উসি শহরে। তার জীবন নাটকের মতো উঠানামা করছে। তার একটি মাত্র ফটোগ্রাফি বা ছবি আছে। সে ছবিতে দেখা যায় একজন চশমা পড়া অতি কৃশ মধ্যবয়সী অন্ধ লোক। ছবিটিতে এক ভগ্ন পশমী টুপির নিচে লুকানো মুখের ওপর জীবনের কঠিন ছাপ ও উত্থান-পতন ফুটে উঠেছে। হয়তো জীবনের এই ক্লেশ-ই আবিংয়ের হৃদয়স্পর্শী সুর সৃষ্টির মূল কারণ।
আবিং ছিলেন তার বাবা হুয়া ছিং হো'র অবৈধ সন্তান। তার বাবা নানা বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানতেন। ফলে আবিংও ছোটবেলা থেকেই এরহু, তিন তার, পিপা ও বাঁশিসহ বহু বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শিখেছেন।
১৯১৮ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর আবিং লেইচুন মন্দিরের প্রধান তাওবাদী যাজক হন। কিন্তু পরে খারাপ বন্ধুদের সংস্পর্শে তিনি আফিমে আসক্ত হয়ে পরেন এবং পতিতার সঙ্গে থাকতেন। এর পরে চোখের রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে যান তিনি। এ সময় তিনি মন্দির থেকে বের হয়ে রাস্তায় রাস্তায় বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জীবন কাটান। তখন থেকেই মূলত 'অন্ধ আবিং' নামে এক বিখ্যাত সুরকারের নবজন্ম হয়।
| ||||