Web bengali.cri.cn   
হাতে হাত রেখে জাতির পুনর্জাগরণের স্বপ্ন খোঁজা---ভারতের ওয়ার্ল্ড এ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলে সি চিন পিংয়ের ভাষণ
  2014-09-19 03:17:22  cri

'কূটনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য হল দু'দেশের জনগণে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন'। চীনের থাইচি ও ভারতের যোগশাস্ত্র এবং চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা ও ভারতের আয়ুর্বেদির মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কয়েক হাজার বছর ধরে দু'দেশের জনগণ যে জীবন দর্শন লালন করে আসছে তাতেও অনেক মিল আছে। এবারের সফরে চীন-ভারত সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের যে সেতু তৈরি হয়েছে তার লক্ষ্য হচ্ছে দু'দেশের মানবিক আদান-প্রদানের গৌরবোজ্জ্বল অতীত পুনরুদ্ধার করা। যুব, সংস্কৃতি, শিক্ষা, পর্যটন, ধর্ম, গণমাধ্যম, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন এবং প্রাদেশিক পর্যায়ের আদানপ্রদান জোরদারের ক্ষেত্রে দু'পক্ষ একমত হয়েছে। তিব্বতের নাথোসলা তীর্থ আবার চালু করা হয়েছে, যেনো ভারতের তীর্থযাত্রীরা সহজেই চীনের তিব্বতে যেতে পারেন।

ছোটবেলা থেকে ভারতের সংস্কৃতি নিয়ে আমার ভীষণ আগ্রহ ছিল, বিশেষ করে ভারতের ইতিহাস নিয়ে। গঙ্গা নদী তীরবর্তী সভ্যতা, বৈদিক সংস্কৃতি, মাউরিয়া রাজবংশ, কুশান রাজবংশ, গুপ্ত রাজবংশ এবং মোঘল সাম্রাজ্য নিয়ে কিছু ঐতিহাসিক বই আমি পড়েছি। ভারতের ঔপনিবেশিক ইতিহাস, এ অঞ্চলের জনগণের নিরলসভাবে স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম ও মহাত্মা গান্ধীর চিন্তাধারা এবং দর্শনের ওপর নিবিড় দৃষ্টি রাখি আমি। এগুলোর মধ্য দিয়ে মহান একটি জাতির উন্নয়নের প্রক্রিয়া ও মানস্তাত্ত্বিকতা উপলব্ধি করতে চাই। এবারে আমি স্বেচ্ছায় গুজরাট রাজ্যে এসেছি এবং গান্ধীর বাসভবন ও জাদুঘর পরিদর্শন করেছি। মনের অগাধ সম্মান দেখানোর জন্য আজ সকালে আমি গান্ধীর সমাধি দর্শন করেছি। 'গীতাঞ্জলী', 'স্ট্রেই বার্ড' , 'দ্য গার্ডেনার' এবং 'দ্য ক্রিসেন্ট মুন'সহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এসব কাব্যগ্রন্থ চীনা ভাষায় অনুদিত হয়েছে। সেগুলো আমি পড়েছি এবং কিছু অংশ বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। অনুবাদের কারণে কোনো কোনো বাক্যে কিছু পার্থক্য দেখা দিলেও আমরা এসব কবিতার সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারি। তিনি বলেন, "If you shed tears when you miss the sun, you also miss the stars." "We come nearest to the great when we are great in humility." "Wrong cannot afford defeat but right can, We read the world wrong and say that it deceives us." "Let life be beautiful like summer flowers and death like autume leaves." প্রভৃতি। এসব সুন্দর ও দর্শনে ভরপুর কবিতা আমাকে গভীর অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। অনেক চীনা জনগণের আমার মতো একই ধরনের অনুভূতি হয় বলে আমি মনে করি।

দ্বিতীয়ত, প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চীন ও ভারতের সহযোগী হওয়া এবং হাতে হাত ধরে এশিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও সবল করা উচিত্। চীন ও ভারতের আঞ্চলিক উন্নয়ন বেগবান করা এবং এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা উচিত্। তা ছাড়া, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দু'দেশের ঐকমতে পৌঁছানো এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়া উচিত্। বাংলাদেশ চীন, ভারত, মিয়ানমারের অর্থনৈতিক করিডোরের নির্মাণের কাজ দ্রুততর করা, যথাশিঘ্র সম্ভব আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনীতির অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বিষয়ক আলোচনা সম্পন্ন করা, এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার সুরক্ষা, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উন্মুক্ত, সচ্ছল ও সহনশীল নিরাপত্তা ও সহযোগিতার কাঠামো নির্মাণ করা এবং অভিন্ন সহযোগিতার নিরাপত্তা বাস্তবায়ন করা উচিত্।

তৃতীয়ত, চীন ও ভারতের কৌশলগত সহযোগিতার অংশীদার হওয়া উচিৎ । আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা আরো ন্যায়সঙ্গত ও সঠিক হওয়া উচিৎ । বর্তমানে শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উভয়ের কল্যাণ নিশ্চিত করা সময়ের প্রধান দাবি। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অন্যায় এবং সামঞ্জস্যহীন অবস্থা এখনও রয়েছে। গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ দেখা দিচ্ছে। একের পর এক নানা ধরনের আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সংঘর্ষ ঘটছে। বিশ্ব শান্তি সুরক্ষা এবং অভিন্ন উন্নয়ন বেগবানের দায়িত্ব খুব ভারী এবং এ দায়িত্ব সম্পন্ন করতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। বৈশ্বিক ইস্যুতে চীন ও ভারত একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। দু'দেশের প্রচুর পরিমাণে অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও রয়েছ।

1 2 3 4 5 6 7
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040