Web bengali.cri.cn   
হাতে হাত রেখে জাতির পুনর্জাগরণের স্বপ্ন খোঁজা---ভারতের ওয়ার্ল্ড এ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলে সি চিন পিংয়ের ভাষণ
  2014-09-19 03:17:22  cri

আধুনিক কালে চীন ও ভারতের জনগণ জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের সংগ্রামে পরস্পরকে সমর্থন করেছে এবং একসাথে এশিয়ার জাগরণ অগ্রসর করেছে। চীনের আফিম যুদ্ধে বিরোধিতার আহ্বান জানিয়েছে ভারত । চীন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে উত্সাহ দিয়েছে। চীনা জনগণের জাপান-বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধে ভারতের সাহায্যকারী চিকিত্সক দল মর্মস্পর্শী কাজ করেছে। তাদের সুবিদিত প্রতিনিধি কাওয়রকানাথ এস. কোটনিস চীনে চিরকালের মতো ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর উন্নত হৃদয়সম্পন্ন সদাচরণ চিরকাল চীনা জনগণের মনে থাকবে।

১৯৫০ সালে চীন ও ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে, এতে দু'দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়। ভারত হচ্ছে সর্বপ্রথম নয়া চীনকে স্বীকৃতি দেয়া দেশ এবং সেই সঙ্গে প্রথম জাতিসংঘে চীনের বৈধ আসন পুনরুত্থানের প্রস্তাব উত্থাপনকারী দেশের অন্যতম। চীন, ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতি প্রস্তাব করেছে। এটা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা ও আধুনিক সভ্যতার জন্য প্রাচ্য মেধার শ্রেষ্ঠ অবদান।

নতুন শতাব্দীতে প্রবেশের পর চীন ও ভারত শান্তি ও সমৃদ্ধ মুখী কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের দ্রুত পথে প্রবেশ করেছে। দশ বারো বছরে চীন ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক পরিমাণ বিশ গুণ বেড়েছে। লোকজনের যাতায়াত প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। দু'দেশের বিনিময়, সহযোগিতার ব্যাপকতা ও গভীরতা উভয়ই অভূতপূর্ব সম্প্রসারিত হয়েছে। বলা যায়, দু'দেশের সম্পর্কোন্নয়ন এক নতুন ইতিহাসের সূচনায় দাঁড়িয়ে আছে।

ভদ্র মহোদয়া ও মহোদয়গণ, বন্ধুরা,

আমরা যে সময়ে আছি সে সময় পৃথিবীতে বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে, সারা পৃথিবীতে এশিয়ার ভূমিকা দিন দিন গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশ্বের দুটো গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে চীন ও ভারত এশিয়া তথা বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে বড় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। চীন-ভারত সম্পর্ক শুধু একটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, বরং তার ব্যাপক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে। চীন-ভারত সহযোগিতা দু'দেশ, এশিয়া তথা গোটা বিশ্বের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।

তাই আমি মনে করি, দু'দেশের উচিত আরো ঘনিষ্ঠ ও কৌশলগত উন্নয়ন ও সহযোগিতার অংশীদার হওয়া।

প্রথমত, চীন ও ভারতের অতীত সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের জন্য দু'দেশের আরো ঘনিষ্ঠ অংশীদার হওয়া উচিত। বর্তমানে দু'দেশের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে জনগণের শান্তি ও সুখী জীবন নিশ্চিত করা। আমাদের উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক সহযোগিতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। শান্তিপূর্ণ, সহযোগিতামূলক ও সহনশীল উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা উচিত।

চীনকে বলা হয় 'বিশ্বের কারখানা' আর ভারতকে বলা হয় 'বিশ্বের কার্যালয়'। দু'পক্ষ একত্রে সম্পূর্ণ সত্ত্বা হতে পারে। চীনের 'পশ্চিমাঞ্চলে উন্মুক্তকরণ' এবং ভারতের 'প্রাচ্যের দিকে উন্নয়ন' প্রকল্প সংযুক্ত করা উচিত। শুধুমাত্র এর মাধ্যমেই বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক উত্পাদন কেন্দ্র, সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজার এবং সবচেয়ে শক্তিশালী উন্নয়ন ইঞ্জিন তৈরি করা সম্ভব। তাছাড়া দু'পক্ষের সার্বিক উন্নতি বাস্তবায়নের জন্য পুঁজি ও ব্যাংকিং খাতের সহযোগিতাও সম্প্রসারণ করা উচিত।

1 2 3 4 5 6 7
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040