|
তাচাও মন্দিরে পর্যটকরা সপ্তম শতাব্দীর চন্দন কাঠের দরজার চৌকাঠ ও তার উপর অতি সুন্দর নকশা দেখতে পাবেন। তাছাড়া, পুরনো বড় সাইজের কাঠস্তম্ভও দেখা যাবে। পথনির্দেশক আমাদেরকে জানান, ২০০০ সালে তাচাও মন্দির বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মন্দিরের মধ্যে সুন্দর কাঠ-নকশা ও চন্দন কাঠের স্তম্ভ হলো এখানকার শ্রেষ্ঠ বস্তু।
'এখানে তাচাও মন্দির নির্মাণের সময়ে রাখা একটি চন্দন কাঠের স্তম্ভ আছে। তিব্বতীয় জাতির মানুষ মনে করে এটা পবিত্রতার প্রতীক। এ জন্য প্রত্যেকে এটাকে স্পর্শ করে। কাঠের ওপর প্রচুর ঘি দেখা যায় এবং এটা খুব মসৃণ। আপনারা যদি স্তম্ভের ভিতরে তাকান, তাহলে ভিতরে রাখা মানুষের দাঁত দেখতে পাবেন। এর কারণ কী? আপনারা যদি গাড়িতে করে তিব্বতে আসেন, তাহলে ছিংহাই-তিব্বত ও সিছুয়ান-তিব্বত - এ দুটি পথে অনেক একনিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীকে দেখতে পাবেন। তারা নিজেদের জন্মস্থান থেকে উপুড় হয়ে পড়ে পড়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এসব সড়ক ধরে লাসায় আসেন। এ প্রক্রিয়ায় ১ বছর থেকে ৬-৭ বছরের সময় লাগে। এদের মধ্যে কিছু মানুষ শারীরিক দুর্বলতা ও বার্ধক্যের কারণে রাস্তায় মারা যান। মৃত্যুর আগে তারা সহযাত্রীদের অনুরোধ জানান, মারা গেলে যেন তাদের দাঁত নিয়ে তাচাও মন্দিরের এ স্তম্ভের ভিতর রাখা হয়। তারা মনে করেন, এটা নিজে নিজে মন্দিরে আসার মতো ব্যাপার। কারণ দাঁত হলো তাদের শরীরের একটি অংশ এবং দাঁত অতি স্থির। সেটা মৃত মানুষের ইচ্ছার প্রতীক।'
তাচাও মন্দিরের প্রশাসনিক কমিটির উপ-পরিচালক নিমা সিরেন মনে করেন, তিব্বতে প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্মে তাচাও মন্দির বিশেষ গুরুত্ববহ।
'তাচাও মন্দিরের সঙ্গে লাসার অন্য তিনটি মন্দিরের একটু পার্থক্য আছে। লাসার অন্য তিনটি বিখ্যাত মন্দির হলো কানতান মন্দির, চেবাং মন্দির ও সেলা মন্দির। বৌদ্ধ ধর্মের দিক থেকে দেখলে, এ তিনটি মন্দির হলো বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান প্রতিষ্ঠান। তবে তাচাও মন্দির আসলে একটি বৌদ্ধ হল এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার স্থান। এ জন্যে আমরা মনে করি, তাচাও মন্দিরের সন্ন্যাসীরা মন্দিরের প্রশাসক। তিব্বতে প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের চূড়ান্ত প্রার্থনার স্থান হচ্ছে পবিত্র তাচাও মন্দির। কারণ তাচাও মন্দির হলো ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে নির্মিত সবচেয়ে পুরনো বৌদ্ধ ধর্মের স্থাপত্য।'
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |