Web bengali.cri.cn   
বাংলাদেশ চীনের পর্যটন শিল্পের ওপর আশাবাদী
  2012-04-20 20:31:19  cri

 চীনে বাংলাদেশের দূতাবাসের আয়োজিত বিনিময় সভা

 তিন দিন ব্যাপী অষ্টম চীনের বিদেশমুখী পর্যটন মেলা ১৮ এপ্রিল পেইচিংয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রে শুরু হয়েছে। পর্যটন শিল্পের ব্যক্তিরা এ খাতের প্রবণতা জানানো এবং বাণিজ্য আলোপ-আলোচনা করার এক গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হিসেবে এবারের পর্যটন মেলায় বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে আসা ২৭৫টি পর্যটন সংস্থার আকর্ষণ করেছে। সেদিন সন্ধ্যায় চীনে বাংলাদেশের দূতাবাস চীনের তথ্যমাধ্যম ও পর্যটন সংস্থাদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের বিনিময় সভার আয়োজন করেছে। এখন শুনুন এ সম্পর্কিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠান।

বিনিময় সভায় চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ প্রথমে অভ্যর্থনা ভাষণ দেন। তিনি চীনা ভাষায় চীনা পর্যটন সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশের পর্যটন সম্পর্দের প্রাধান্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় করেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ও চীন হচ্ছে খুব বন্ধুভাবাপন্ন প্রতিবেশী দেশ। আমরা উভয় প্রাচ্যের মানুষ। আমাদের জীবনধারার অনেক মিল আছে। চীনা পর্যটকরা বাংলাদেশে যেতে খুব সুবিধা হয় এবং আলাম লাগে। বাংলাদেশের স্থানীয় পণ্যের দাম চীনের চেয়ে সস্তা। সেখানে গিয়ে ভ্রমণ করতে বেশ খরচ লাগে না।'

চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ ভাষণ দেন

রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বিশেষ করে বাংলাদেশের পর্যটনের তিনটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে গিয়ে বিশ্বের তিনটি শীর্ষ বিষয় দেখা যাবে। প্রথম, বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ। দ্বিতীয়, বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুন্দর বন আছে। এবং সেখানে হচ্ছে বঙ্গল বাঘের জন্মস্থান। তৃতীয়, কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘত্তম সমুদ্রসৈকত। ১২০ কিলোমিটার সৈকতে একটানা গাড়ি চালিয়ে যাওয়া যায়। '

রাষ্ট্রদূতের কথা শুনেন এবং এর পর প্রদর্শিত বাংলাদেশের পর্যটন সম্পদ সম্পর্কিত ছবি দেখার পর চীনের পর্যটন সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সত্যি মুগ্ধ হয়েছে। এর পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত আরো কিছু বাস্তব তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, '২০০৫ সালে বাংলাদেশ চীনের বিদেশমুখী পর্যটনের গন্তব্যস্থানে পরিণত হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাশিনা চীন সফর করেন। তাঁর সফরের পর চীনা পর্যটকদের বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ আরো বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগে আমরা প্রতি মাসে ৬০০ থেকে ৮০০ জন চীনা নাগরিককে ভিসা দিতাম। তাঁর চীন সফরের পর আমরা প্রতি মাসে প্রায় ১৬০০ থেকে ১৮০০ চীনা নাগরিককে ভিসা দিই। এখন প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার চীনা লোক বাংলাদেশ সফর করেন। আমরা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে চীনের পর্যটন শিল্পের সাথে বাংলাদেশের সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ হবে।'

বিনিময় সভায় চীনের পর্যটন সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে সিআরআই'র সংবাদদাতার আলাপ

রাষ্ট্রদূতের কথা শুনে চীনের পর্যটন সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বাংলাদেশে যাওয়ার উত্সাহ জেগে ওঠে। পেইচিংয়ের গ্লোবাল পর্যটন সার্ভিস লিমিটেড কোম্পানির প্রধান ব্যবস্থাপক ওয়াং খেই জুন বলেন, 'এখন পর্যন্ত পেইচিংয়ের কোন পর্যটন সংস্থা বাংলাদেশে পর্যটন দল নিয়ে যাওয়ার ব্যবসা করে না। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা এখনো বাংলাদেশে যাই নি। সেখানকার অবস্থা খুব ভালো জানি না। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পেয়ে প্রথমে সেখানে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করবো। আমরা নিজের চোখে দেখবো, সেখানকার পরিবেশ চীনা পর্যটকদের উপযুক্ত হয় কিনা? তারপর আমরা প্রায় এক সপ্তাহব্যাপী এক পর্যটন সফরের নকশা করবো।'

তাঁর কথা শুনে বুঝা যায়, চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে যাওয়ার যথেষ্ট আগ্রহ আছে।

বাংলাদেশের পর্যটন বোর্ডের ডিপুটি সচিব মোসাম্মাত কমার জাহান সিআরআই'র সংবাদদাতাকে সাক্ষাত্কার দেন

বাংলাদেশের পর্যটন সেবা সম্বন্ধে আরো বেশি তথ্য জানার জন্য আমি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাক্ষাত্কারও নিয়েছি। এ দলের প্রধান, বাংলাদেশের পর্যটন বোর্ডের ডিপুটি সচিব মোসাম্মাত কমার জাহান বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান আর বিদেশী পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধার ব্যাখ্যা করেন।

বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরস সমিতির প্রেসিডেন্ট হাসান মানসুর সিআরআই'র সংবাদদাতাকে সাক্ষাত্কার দেন

বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরস সমিতির প্রেসিডেন্ট হাসান মানসুর চীনের পর্যটন বাজার সম্পর্কেও আশাবাদী।

বাংলাদেশের ইনোভা গ্রুপের মোহাম্মদ এহতেশামুল হক রিপন সিআরআই'র সংবাদদাতাকে সাক্ষাত্কার দেন

বাংলাদেশের ইনোভা গ্রুপের মোহাম্মদ এহতেশামুল হক রিপন সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় নিজের পরিচয় দেয়ার পাশাপাশি তাঁর পর্যটন খাতে কাজকর্মের অভিজ্ঞতার কথাও ব্যাখ্যা করেন।

বন্ধুরা, এতোক্ষণ আপনারা পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত অষ্টম চীনের বিদেশমুখী পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে নিয়ে এক সাক্ষাত্কার ভিত্তিক অনুষ্ঠান শুনলেন। আশা করি, এ ধরনের আন্তর্জাতিক মেলার মাধ্যমে ভবিষ্যতে চীনা জনগণ বাংলাদেশের কথা আরো বেশি জানতে পারবেন এবং আরো বেশি চীনা পর্যটক বাংলাদেশে যাবেন। দু'দেশের পর্যটন শিল্পের বিনিময় ও সহযোগিতা আরো ব্যাপক হবে। (ইয়ু)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040