Web bengali.cri.cn   
আতশবাজির পিছনের গল্প
  2012-01-22 20:03:50  cri

আতশবাজি হচ্ছে চীনাদের বসন্ত উত্সব কাটানোর সময় অপরিহার্য এক ভোগ্যপণ্য। প্রথা অনুযায়ী, আতশবাজির ভূত তাড়ানোর ভূমিকা আছে। ইদানীং মানুষজন তা দিয়ে উত্সবের আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করে।

২০১২ সালে চীনের চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী ড্রাগন বর্ষের বসন্ত উত্সব আসার সময় পেইচিংয়ের ছোট বড় রাস্তায় আর অলিতে গলিতে অসংখ্য আতশবাজি বিক্রির অস্থায়ী দোকান খোলা হয়। পেইচিংয় আতশবাজি লিমিটেড কোম্পানি এ শহরের আতশবাজির পাইকারি বিক্রি ও সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছে। এ কোম্পানির উপ প্রধান ব্যবস্থাপক লি সিন ইয়ু বলেন, 'এ বছর পেইচিং শহরের জন্য ৩ লাখ বাক্স আতশবাজি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন শহরের বিভিন্ন এলাকার অস্থায়ী দোকানে খুচরা বিক্রি বিক্রি শুরু হয়েছে। ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ লাখ ৪০ থেকে ৫০ হাজার বাক্স আতশবাজি বিক্রি হয়েছে। বিক্রির এ অবস্থা দেখার পর আমরা ভাবছি হয়তো আরো কিছু পণ্য আনতে হবে।'

পেইচিং শহর কতৃর্পক্ষ সাত রকমের আতশবাজি ফাটানো অনুমোদন দিয়েছে। প্রতি রকমের আতশবাজির আবার একশ'রও বেশি আকারের বাজি এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আতশবাজির বিভিন্ন অংশ আলাদা কারখানায় উত্পাদিত হয়। তারপর একসাথে লাগিয়ে বাজি তৈরি সম্পুর্ণ করা হয়। লি সিন ইয়ুর কোম্পানির উত্পাদন কেন্দ্র প্রধানতঃ হুনান, চিয়াংসি ও হোপেই প্রদেশে অবস্থিত। প্রতি বছর বসন্ত উত্সবের প্রাক্কালে আতশবাজি পরিবহন কর্মীদের খুব ব্যস্ততম সময় থাকে। চীনের চান্দ্র পঞ্জিকার দ্বাদশ মাসের ২৭ তারিখে নানা খুচরা বিক্রি দোকানে আতশবাজি বিক্রি শুরু হয়। এর আগে এ ধরনের পেশাগত কাজে ব্যবহৃত পরিবহন গাড়িতে আতশবাজি বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তারপর চান্দ্র পঞ্জিকার প্রথম মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী সময় মতো বাড়তি আতশবাজি সরবরাহ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা উত্পাদন তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনা সাধারণ ব্যুরো হচ্ছে চীনের আতশবাজির নিরাপদ উত্পাদন পরিচালনা সংস্থা। সারা দেশের প্রদেশ, শহর ও জেলা পর্যায়ের সরবরাহ ও বিক্রি ইউনিট নিজ নিজ অঞ্চলের আতশবাজি বিক্রি ও সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে। আতশবাজি কেন আন্তঃঅঞ্চল ভিত্তিক বিক্রি হতে পারে না? এ প্রসঙ্গে লি সিন ইয়ু ব্যাখ্যা করে বলেন, 'প্রতিটি শহরের পার্থক্য বিরাট। যেমন পেইচিংয়ে অনেক উঁচু অট্টালিকা আছে। কিছু আতশবাজি ফাটানোর সময় যদি খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে পেইচিংয়ের নানা ধরনের উঁচু ভবনের খুব কাছে ফাটালে বা জ্বালালে তা যে কোন সময় বিপদের সৃষ্টি করতে পারে। সে জন্য পেইচিংয়ে সে ধরনের আতশবাজি বিক্রি ও জ্বালানো নিষেধ। সুতরাং বিভিন্ন স্থানীয় সরকার স্থানীয় বৈশিষ্ট্য অনুসার সংশ্লিষ্ট নিয়ম ও মানদন্ড নির্ধারণ করেছে।'

জানা গেছে, চীন সরকার আতশবাজি পরিবহন ও মজুদ রাখার ওপরও কঠোর নিয়ম প্রণয়ন ও জারি করেছে। যেমন, পেইচিংয়ের বাইরের কোন উত্পাদন কেন্দ্র থেকে আতশবাজি পেইচিংয়ে পরিবহন করতে চাইলে গণনিরাপত্তা বিভাগের অনুমোদিত বিশেষ পরিবহন পত্র দরকার। আতশবাজি কেবল সরকারের অনুমোদিত বড় ভাণ্ডারে রাখা যায়, তারপর পেশাগত পরিবহন গাড়ি দিয়ে তা শহর ও উপকণ্ঠের নানা খুচরা বিক্রির দোকানে পাঠানো যায়। প্রতিটি খুচরা বিক্রির দোকানে আতশবাজির মজুদের পরিমাণের ওপরও কঠোর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মাসের প্রথম ১৫ তারিখ পর্যন্ত যে সব দোকানে যে অবিক্রিত আতশবাজি থেকে যাবে সে সব আতশবাজি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দিতে হবে। যাতে নিরাপত্তার ঝুঁকি এড়ানো যায়।

এবার এভাবে কঠোর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চীনের অধিবাসীরা নিরাপদ ও সরগরম বসন্ত উত্সব উপভোগ করতে পারছে। বসন্ত উত্সবের আনন্দের পিছনে আতশবাজি কোম্পানির কর্মীদের অনেক পরিশ্রম রয়েছে। আর এ পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সাথে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে আমরা আতশবাজির আলোয় আমাদের জীবনকে উজ্জীবীত করে তুলতে পারি ভবিষ্যত দিনগুলোয়। (ইয়ু/আবাম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040