জার্মান চ্যান্সেলর শোলজের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট সি’র বৈঠক
2024-04-16 15:33:22

এপ্রিল ১৬: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আজ (মঙ্গলবার) সকালে বেইজিংয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে সি চিন পিং বলেন, চলতি বছর হল চীন ও জার্মানির সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দশম বার্ষিকী। বিগত ১০ বছরে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তিত হলেও চীন-জার্মানি সম্পর্ক স্থিতিশীল রয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা গভীরতর হয়েছে।

বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং মানবজাতি আরো বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, এ সব সমস্যা সমাধানের জন্য বড় দেশগুলোর সহযোগিতা অপরিহার্য। চীন ও জার্মানি বিশ্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। চীন ও জার্মানি সম্পর্কের উন্নয়ন শুধু দু’দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা নয়, সারা বিশ্বের ওপর তা বড় প্রভাব ফেলবে। দু’দেশের উচিত দীর্ঘমেয়াদী ও কৌশলগত দিক থেকে দু’দেশের সম্পর্ক পরিচালনা করা, যা বিশ্বের জন্য আরো বেশি স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা যোগাবে।

সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চীন ও জার্মানি মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে বড় অবদান রেখেছে, দু’দেশের মধ্যে মৌলিক স্বার্থের সংঘাত নেই। চীন ও জার্মানির সহযোগিতা দু’পক্ষ এবং বিশ্বের জন্য উপকারী। তিনি বিশ্বাস করেন, উভয়পক্ষ পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে মতভেদ দূর করলে, আদান-প্রদান বজায় রাখলে এবং কল্যাণমূলক সহযোগিতা করলে দু’দেশের সম্পর্কের নিশ্চয়ই স্থিতিশীল উন্নয়ন হবে।

সি চিন পিং বলেন, চীন ও জার্মানির শিল্পচেইন ও বাজার পরস্পরের গভীরভাবে নির্ভরশীল। চীন ও জার্মানির সহযোগিতা ‘ঝুঁকি’ নয়, বরং দু’দেশের স্থিতিশীল সম্পর্কের নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যত উন্নয়নের সুযোগ। যন্ত্রপাতি, নির্মাণ, গাড়ি ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্র বা সবুজ রূপান্তর, ডিজিটালাইজেশন, এআই প্রযুক্তি ইত্যাদি উদীয়মান ক্ষেত্র, যাই হোক না কেন, দু’দেশের সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের উচিত অবাধ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিশ্বায়নকে সমর্থন করা ও সংরক্ষণবাদের বিষয়ে সতর্ক থাকা। তা ছাড়া চীন ও জার্মানির উচিত আরো বেশি বহুপক্ষীয় সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিক সমাজকে জলবায়ু পরিবর্তন, অসম উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সংঘাত, ইত্যাদি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে উত্সাহিত করা, যাতে বিশ্বশান্তি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় আরো বেশি অবদান রাখা যায়।

বৈঠকে শোলজ বলেন, বর্তমানে জার্মানি ও চীনের সম্পর্ক ভালো রয়েছে, দু’পক্ষ বিভিন্ন পর্যায়ের ও ক্ষেত্রে যোগাযোগ বজায় রেখেছে। বিগত দু’দিনে তিনি ও জার্মান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা ছোংছিং, শাংহাই প্রভৃতি শহরে গিয়েছেন, দেখেছেন চীনা অর্থনৈতিক উন্নয়নের দুর্দান্ত সাফল্য। জার্মানি, চীনের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করে একসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে চায়। তিনি আরো বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে জার্মানি ইইউ ও চীনের ভালো সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে চায়।

দুই নেতা ইউক্রেন সংকট নিয়ে গভীরভাবে মতবিনিময় করেছেন। চীন ও জার্মানি জাতিসংঘ সনদ মেনে চলা, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা করা, আন্তর্জাতিক খাদ্য সংকট সমাধান এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে একমত হয়েছে।

(তুহিনা/হাশিম/শিশির)