ফিলিপাইনকে শুধু হাতিয়ার বানাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: সম্পাদকীয়
2024-04-14 19:40:26

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ফিলিপাইনের নেতারা ১১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে কথিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজন করেন। সংশ্লিষ্ট মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা সাক্ষাত্কারে স্পষ্টভাবে বলেছেন, এ সম্মেলনে নানা বিষয় নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানো হয়, বিশেষ করে চীনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ চীন সাগর বিষয় নিয়ে।

 

সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিপাইন বাইরের কিছু দেশের সমর্থন নিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে ধারাবাহিক উস্কানি দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে এ সম্মেলন অংশ নেয়ার পর দেশটি এ বিষয়ে আরও কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছে। একদিকে ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, সাবেক সরকার ও চীনের মধ্যে পৌঁছানো মতৈক্য অস্বীকার করেন, অন্যদিকে, তারা শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করতে চেয়েছে। ১০০ বিলিয়ন ডলারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতিয়ারে পরিণত হতেও রাজি ফিলিপাইন।

 

মার্কিন কূটনৈতিক মহলে এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে, তা হলো ‘ধূসর এলাকা’। তার মানে অন্য একটি দেশের সঙ্গে যখন দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে ভাল একটি ভঙ্গি বা পদ্ধতি ব্যবহার করে যা আক্রমণাত্মক, কিন্তু যুদ্ধের দিকে পরিচালিত করে না। দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ঠিক এমন পদ্ধতি চায়, আর ফিলিপাইন তাদের জন্য উপযোগী হাতিয়ার।

 

তবে, ফিলিপাইন একটি বিষয় বুঝতে ভুল করে, তা হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি কি বিশ্বাসযোগ্য? চীনকে উস্কানি দিতে ফিলিপাইনকে উৎসাহী করতে ম্যানিলাকে বারবার সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতির কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্র শুধু ফিলিপাইনকে ব্যবহার করে চীনের উন্নয়ন আটকাতে চায়, চীনের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাত চায় না।

 

যদিও ফিলিপাইন ‘যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ চালু করার দাবি জানায়, তবুও যুক্তরাষ্ট্র ঘটনা তদন্ত, জাহাজ ও জঙ্গি বিমান পাঠানো ও সামরিক তথ্য শেয়ারসহ নানা পদ্ধতির মাধ্যমে চীনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে পারবে।

 

২০২২-২০২৩ সালে দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন ধারাবাহিক অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সফল হয় চীনা বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে সফল না  হয়ে ফিলিপাইনকে সামনের দিকে ঠেলে দেয়।

 

ফিলিপাইন সরকার একটু ভাবলেই বুঝতে পারবে, যুক্তরাষ্ট্র নিজে যা করতে পারে না, তাই ফিলিপাইনকে দিয়ে করাতে চায়। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের হাতিয়ার হওয়া ছাড়া, ফিলিপাইনের আর কোনো লাভ হবে না।  যখন তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০০ বিলিয়ান ডলার ‘পারিশ্রমিক’ ভিক্ষা করে তখন তারা শুধু নিজের জনগণের স্বার্থই বিক্রি করে।

 

(শিশির/হাশিম/লিলি)