রবীন্দ্রনাথের চীন সফরের শততম বার্ষিকীতে শেনচেন ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার
2024-04-13 17:24:10

এপ্রিল ১৩: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চীন সফরের শততম বার্ষিকী উপলক্ষে চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এবং কলকাতায় চীনের কনস্যুলেট জেনারেল, চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ধারাবাহিক উদযাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

আজ (শনিবার) শেনচেন ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রনাথের চীন সফরের শততম বার্ষিকী উদযাপনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে কলকাতায় চীনের কনস্যুলেট জেনারেল, বিশ্বভারতী, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শেনচেন ইউনিভার্সিটি, পিকিং ইউনিভার্সিটি, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটি, কুয়াংতোং ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজ, সাংহাই ইউনিভার্সিটি অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল’সহ নানা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

বিশ্বভারতীর চীনা ভবনের প্রধান অধ্যাপক অভিজিৎ ব্যানার্জি তার বক্তৃতায় বলেন, রবীন্দ্রনাথ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, তাঁর চীন সফর চীন ও ভারতের সভ্যতার মধ্যে সংযোগ জোরদার করতে পারে। ১৯২৪ সালে তাঁর চীন সফরের পর প্রতিষ্ঠিত চীনাভবন হলো চীন ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বিনিময়ের একটি প্রমাণ। রবীন্দ্রনাথের চীন সফর দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের বীজ বপন করেছিল। তাঁর সাহিত্যকর্মগুলো ক্রমাগত চীনে অনুবাদ করা হচ্ছে। আগামীতে তাঁর রচনাগুলো দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বিনিময়ের সেতু হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস ফর বেঙ্গলি স্টাজিসের প্রধান প্রফেসর তোং ইউ ছেন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, রবীন্দ্রনাথ একজন মহান কবি, যিনি ভালোবাসা এবং গুণী ব্যক্তিত্বের চেতনাকে মূর্ত করেছেন। তিনি চীনকে ভালোবাসতেন এবং চীনা জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারকে সমর্থন করেন। তার চিন্তাভাবনা এখনও আধুনিক সময়ে চীনের তরুণ-তরুণীদের অনুপ্রাণিত করে থাকে।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী বলেন, বিগত ইতিহাস, চীন ও ভারতের সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়ের ইতিহাস এবং যা একটি সুগভীর ভিত্তি। ভবিষ্যতে দু’দেশের বিনিময় জোরদার করা এবং একে অপরের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। এভাবে পারস্পরিকভাবে সহযোগিতায় চীন ও ভারতের সংস্কৃতি বেগবান এবং বৈচিত্র্যময় হবে।

পিকিং ইউনিভার্সিটি’র বিদেশি ভাষা কলেজের অধ্যাপক ওয়েই লি মিং বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রাথের নাটক অনুশীলনের প্রক্রিয়াটি তুলে ধরেন। তিনি পিকিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি পুরো ক্যাম্পাসকে রবীন্দ্রনাথের নাটক অনুশীলনের একটি বড়মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথের ‘বসন্ত’ এবং ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’সহ নানা নাটক পরিবেশন করেছেন এবং তাঁর নাটক আরো বেশি মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছেন।

এবারের সেমিনারটি চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস, কলকাতার চীনের কনস্যুলেট জেনারেল, শেনচেন ইউনিভার্সিটি, সাংহাই ইউনিভার্সিটি অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল, পিকিং ইউনিভার্সিটির ইন্ডিয়া রিসার্চ সেন্টার এবং লানচৌ ইউনিভার্সিটির ইন্ডিয়া রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।

ধারাবাহিক উদযাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে একইসঙ্গে চীন-ভারত সংগীত বিনিময় কর্মশালা, চীন-ভারত শাস্ত্রীয় কনসার্ট এবং ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘চীনা সেতু’ শীতকালীন শিবিরের মতো নানা কার্যক্রমও রয়েছে।

লিলি/হাশিম/শিশির।