বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘গণতান্ত্রিক মতৈক্য’ মৌলিক সমস্যাগুলো ব্যাখ্যা করেছে: সিএমজি সম্পাদকীয়
2024-03-23 19:39:14

মার্চ ২৩: সম্প্রতি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ‘গণতন্ত্র: মানবজাতির অভিন্ন মূল্য’ শিরোনামে এক আন্তর্জাতিক ফোরামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সংস্থার দু’শতাধিক অতিথি ‘গণতন্ত্র ও শাসনের আধুনিকায়ন’, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যত’ এবং ‘একটি বহুমুখী বিশ্বে গণতন্ত্র ও বিশ্ব শাসন’সহ বিভিন্ন আলোচিত বিষয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন। সবার মতৈক্য হলো: গণতন্ত্রের উদ্দেশ্য- গোটা মানবজাতির মঙ্গল ও উন্নয়ন, অবশ্যই সব দেশের মানুষের নিজস্ব উন্নয়নের পথ বেছে নেওয়ার অধিকারকে সম্মান করা এবং গণতন্ত্রের অজুহাতে আন্তর্জাতিক সমাজে বিভেদ সৃষ্টি, কুসংস্কার ছড়ানো ও শান্তি নষ্ট করার প্রতিবাদ করা। সিএমজি সম্পাদকীয় এসব মন্তব্য করেছে।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘তৃতীয় গণতন্ত্র শীর্ষসম্মেলনের’ হতাশাজনক সমাপ্তি হয়েছে। শুরুতে এর হাই-প্রোফাইল জন্ম থেকে এখন সামান্য মনোযোগ আকর্ষণ করা পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘গণতন্ত্র শীর্ষসম্মেলনের’ ধারা মার্কিন ধাঁচের গণতন্ত্রের আস্থা হারানোর একটি চিত্র।

কোনো কোনো পশ্চিমার চোখে গণতন্ত্র হলো তাদের বিশেষ অধিকার। পশ্চিমা গণতন্ত্র মানবজাতির রাজনৈতিক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ ফলাফলের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে এবং বিভিন্ন দেশের তা অনুসরণ করা উচিত্। তবে বাস্তবতা কি?

তথাকথিত ‘গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা’ বলে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রকে একটি উদাহরণ ধরা যায়। এই সুপার রাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমাহীন গণতান্ত্রিক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার দমন করা হয়েছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন পুঁজি ও রাজনীতিবিদদের স্বার্থপরতা হাইজ্যাক করেছে ইত্যাদি। তা ছাড়া, গণতন্ত্রের অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা এবং জোটগত সংঘাত সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ধরনের নকল গণতন্ত্র এবং সত্যিকারের আধিপত্য বিশ্বে সংঘাত ও যুদ্ধ নিয়ে এসেছে। ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা একজন আমেরিকান পণ্ডিত, যিনি একবার ‘ইতিহাসের তত্ত্বের সমাপ্তি’ প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার সতর্ক করে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক রাজনীতি গুরুতর পতনের সম্মুখীন হচ্ছে।

এ প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের জ্ঞানী মানুষেরা বেইজিংয়ের এই ফোরামে গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বলে উল্লেখ করেছে সিএমজি সম্পাদকীয়।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, গণতন্ত্র কারও বিশেষ অধিকার নয়। এটি বৈচিত্র্যময় হতে হবে, বিভিন্ন দলকে পরাজিত করার জন্য গণতন্ত্রকে দলীয় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। বৈশ্বিক শাসন পূর্ণাঙ্গ করে তোলার জন্য আরো গণতান্ত্রিক নিয়ম প্রণয়ন করতে হবে। বেইজিংয়ের গণতান্ত্রিক ফোরামে উপনীত এসব মতৈক্য আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য আরো ভালোভাবে গণতন্ত্র সম্পর্কে জানতে নতুন অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। সেই সঙ্গে এটা জনগণকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, গণতন্ত্র প্রসঙ্গে বিভিন্ন বোঝাপড়া থাকা উচিত্ এবং গণতন্ত্র নিয়ে সংলাপ ও যোগাযোগ করা উচিত্। পশ্চিমা গণতন্ত্রের নামে জবরদস্তি ও দমন অবশ্যই ব্যর্থ হবে বলে মনে করে সিএমজি সম্পাদকীয়।

লিলি/তৌহিদ