চীনের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে দারুণ আশাবাদী আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা
2024-03-09 16:12:20

মার্চ ৯, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, চীন সরকারের ২০২৪ সালে নেওয়া ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং এটি চীন সরকারের যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত অর্থনৈতিক শাসনকে প্রতিফলিত করে।

গত মঙ্গলবার ১৪তম জাতীয় গণকংগ্রেসের (এনপিসি) দ্বিতীয় অধিবেশনের উদ্বোধনী সভায় প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং সরকারি কার্যবিবরণী দেওয়ার সময় ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিলেন।

চীন একটি উচ্চমানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেলের নকশা করেছে, যা সবুজ অর্থনীতি ও উচ্চ-প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তিশালী একটি প্রাণশক্তির সঞ্চার করবে। সম্প্রতি এমনটা বলেছেন, হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব অর্থনৈতিক গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. লুইস ফার্নান্দেজ।

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক জেফরি শ্যাস বলেছেন, চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি খুব দ্রুত হচ্ছে। এই অগ্রগতিগুলো আগামী বছরগুলোর জন্য চীনকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে।

অন্যদিকে, জার্মানির অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় সংগঠনের প্রধান মাইকেল শুমান জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এসেছে চীনের নতুন উৎপাদনশীল শক্তির ধারণা। যার হাত ধরে বিশ্ব আরও টেকসই এবং আরও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন চাক্ষুষ করবে।

ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের প্রকাশিত বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে চীনের অবস্থান এখন ১২তম। যে তালিকায় সেরা ৩০টি দেশের মধ্যে থাকা একমাত্র মধ্যম আয়ের অর্থনীতি হলো চীন।

সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস স্কুলের সিনিয়র লেকচারার ইয়ান লি বলেন, নতুন জ্বালানির শিল্প ও স্মার্ট গাড়িতে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নতুন মানের উৎপাদনশীল শক্তি হিসেবেও বিশ্বের শিল্প চেইনেও দৃঢ় অবস্থানে যাচ্ছে চীন।

প্যানাসনিক করপোরেশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট তেসুরো হোমা বলেন, চীনের ব্যাবসায়িক পরিবেশ এখন বেশ আকর্ষণীয়। জাপানি কোম্পানিগুলো চীনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দেখছে। চীনে তারা সক্রিয়ভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে বলেও জানান তেসুরো।

বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ল'রিয়েলের ভোক্তা পণ্য বিভাগের প্রধান অ্যালেক্সিস পেরাকিস-ভালাট বলেছেন, চীনে তিনি লরিয়েলের ভবিষ্যত নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত, কারণ চীনের আছে একটি সুবিশাল মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত সমাজ।

আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ফোরামের মতে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান ছিল ৩২ শতাংশ এবং চীনের দ্রুত প্রবৃদ্ধি বিশ্বের অন্যান্য অংশেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের গবেষণায় দেখা গেছে, চীনে এক শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি হলে তা বিশ্বের অর্থনীতিতে উৎপাদনের মাত্রা বাড়ায় দশমিক ৩ শতাংশ।

এদিকে, চীন এবারের সরকারি কার্যবিবরণীতে জানিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক তালিকা আরও হ্রাস করা হবে। পাশাপাশি উৎপাদন খাতেও এ ধরনের বিনিয়োগে যাবতীয় বিধিনিষেধ অপসারণ করা হবে। সেই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা বাজারে প্রবেশাধিকার শিথিল করতেও বেশকিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে চীন।

ফয়সল/শান্তা

তথ্য ও ছবি: সিজিটিএন