তিনি হলেন লিউ মিং ছুন,বেইজিংয়ের একজন স্যানিটেশন কর্মী। ‘বাড়ির মতো পরিষ্কার একটি আবর্জনা ব্যবস্থাপনা স্টেশন’ প্রতিষ্ঠার কথা বলতেন তিনি। এখন সেই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
লিউ মিং ছুন বলেন, “আবর্জনা কেন্দ্র এবং প্রতিটি পরিবার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আমি ভাবছি, সবার জীবন-যাত্রার পরিবেশ ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন করতে হবে, যাতে সবার মন সুন্দর থাকে। কমিউনিটির মানুষ বলে, এখানকার পরিবেশ খুব পরিচ্ছন্ন এবং ব্যবস্থাটি বেশ কার্যকর। তাই তাঁরা আমাকে এনপিসি’র প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন। আমি সত্যি গৌরব বোধ করি।”
এনপিসি’র প্রতিনিধি হিসেবে লিউ মিং ছুন সবসময় উদ্যান, সুপারমার্কেটে ও সড়কমোড়ে সবার সঙ্গে তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন। কিভাবে আবর্জনা শ্রেণিবিন্যাস করা যায় এবং কিভাবে অতিরিক্ত প্যাকেজিং কমানো যায়, তা নিয়ে শ্রমিকরাও উদ্বিগ্ন। শহরে কাজ করতে অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের বেতন বৃদ্ধি ও ব্যক্তিগত উন্নতি চান। তরুণ বাবা-মায়েরা সন্তানদের শিক্ষা নিয়েও চিন্তা করেন। কাছের মানুষদের এসব ব্যাপার নিয়ে এনপিসি’র অধিবেশনে কথা বলবেন লিউ মিং ছুন।
তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা তো জনগণ থেকে নির্বাচিত। জনগণ আমার ওপর আস্থা রাখেন। তাই আমাকে নির্বাচন করেছেন। আমি তাদের হতাশ করবো না।
তিনি হলেন রুয়ান সিয়াংইয়ান, একজন খুব ব্যস্ত ডাক্তার। যার কারণে, তিনি নিজের পরিবারের যত্ন নিতে পারেন না। তার স্বামী ও মেয়েও ডাক্তার। তাই, প্রায়শই তিনি নিজেকে ধিক্কার দেন এবং নিজেকে উপহাস করে বলেন, "সৌভাগ্যবশত! আমার পরিবারের সদস্যরাও পরিবারে সময় দেয় না!”তিনি বলেন, “চিকিৎসক মানে, সময়ের হাত থেকে জীবনকে ছিনিয়ে আনা!”
ব্যস্ততম দিনে তিনি দুইশ রোগী দেখেন! প্রতি বছর যে মায়েরা তাঁর চিকিৎসায় সুষ্ঠুভাবে সন্তান জন্ম দেন, তাঁরা তাদের বাচ্চাদের ছবি রুয়ান সিয়াংইয়ানকে পাঠান। রুয়ান সিয়াংইয়ান বিশ্বাস করেন, তাঁর কারণে যদি পরিবারগুলো পরিপূর্ণ ও পরিতৃপ্ত হয়, তাহলে এটা তার ত্যাগের সবচেয়ে বড় প্রতিদান এবং তাঁর পরিবারের জন্য একটি ছোট ক্ষতিপূরণ।
হাসপাতাল হলো এমন একটি স্থান, যেখানে জীবনের বিভিন্ন দিক দেখা যায়। রুয়ান সিয়াংইয়ান এখানে সুস্বাস্থ্যের প্রতি মানুষের আকাঙ্ক্ষা দেখেছেন, মানসম্মত জীবন অন্বেষণ এবং পারিবারিক সুখের প্রত্যাশা দেখেছেন। এ সবই তিনি এনপিসি’র প্রতিনিধি হিসাবে জমা দেওয়া পরামর্শগুলোতে লিখেছেন।
রুয়ান সিয়াং ইয়ান বলেন,“জনপ্রতিনিধিরা জনগণের জন্য। জনগণের জরুরি সমস্যা ও উদ্বেগ সমাধানের জন্য আমাকে এনপিসি’র প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে।
তিনি হলেন ছেং ওয়েইতোং, থিয়েনচিন বন্দরে একজন ট্রেইলার-টিমের চালক। তিনি পৃথিবীকে দশবার প্রদক্ষিণ করার সমান দূরত্ব গাড়ি চালিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি যা পরিচালনা করেন, তা আর টানা গাড়ি নয়।
তিনি বলেন, “আমি ম্যানুয়াল ট্রেলার পরিচালনার দক্ষতা রূপান্তর করেছি। আমি এখন ডেটা ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার রোবটকে প্রশিক্ষণ দেই।”
আগে তাঁর সহকর্মীরা বলতো, ছেং ওয়েইতোং রোবটের মতো অনমনীয়। এখন তারা প্রায়শই তাকে জিজ্ঞাসা করেন, “কীভাবে রোবটকে শেখানো যায়?”
আগে তিনি একটি অপারেশনকে ৪০টিরও বেশি ভাগে ভাগ করতেন। এ কারণে, সহকর্মীদের দক্ষতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এখন তিনি রোবটগুলো নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে থিয়ান চিন বন্দরকে একটি বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ও শূন্য-কার্বন নির্গমনের টার্মিনাল বানিয়েছেন।
একজন এনপিসি’র প্রতিনিধি হিসাবে প্রতি শুক্রবার বিকেলে ছেং ওয়েই তোং লোকেদের প্রস্তাব ও মতামত শোনার জন্য তাদের স্বাগত জানান। কিভাবে প্রশিক্ষণ ও শিল্প শ্রমিকদের রূপান্তর করা যায়? কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগানো যায়? শিপিং কীভাবে বেইজিং–থিয়ান চিন-হ্য পেই’র একীকরণ উন্নয়নে কাজ করে? এসব সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার পাশাপাশি তিনি তৃণমূলের উদ্ভাবনী পদক্ষেপগুলো প্রস্তাবে লিখেছেন। সেসব প্রস্তাব তিনি এনপিসি’র কাছে জমা দিয়েছেন। গত বছর এনপিসির অধিবেশনে তাঁর জমা দেওয়া থিয়ান চিন বন্দরে স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রবিধান হিসাবে বাস্তবায়িত হয়েছে!
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সেবা করেন। জনগণ প্রতিনিধিদেরকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আমি জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে জাতির আকাঙ্ক্ষায় রূপান্তর করবো, যাতে আরও ভালোভাবে জনগণের সেবা করা যায়।”
তাদের আছে একটি অভিন্ন পরিচয়- চতুর্দশ জাতীয় গণ-কংগ্রেসের প্রতিনিধি।
তাঁরা জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে জাতীয় গণ-কংগ্রেসের অধিবেশনে অংশ নেন।
গত বছর এনপিসি’র প্রতিনিধিরা ৮৩১৪টি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সেসব প্রস্তাবের ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে এবং সব প্রতিনিধিকে জবাবও দেওয়া হয়েছে।