অর্থনীতি প্রান্ত-সীমায় পৌঁছানোর অপপ্রচার, চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের অপচেষ্টা মাত্র
2024-03-05 19:55:03

মার্চ ৫: সাম্প্রতিক কয়েক দিনে চীনের দুই অধিবেশনের আয়োজন এবং ২০২৪ সালে বিভিন্ন স্থানের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হারের উদ্দেশ্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে চলতি বছর চীনের অর্থনীতির ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা ক্রমশই বাড়ছে।

চীনের অর্থনীতি প্রান্ত-সীমায় পৌঁছে গেছে এমন মন্তব্যও মাঝেমাঝে শোনা যাচ্ছে। যেহেতু চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক সত্তায় পরিণত হয়েছে, চীনের জিডিপি এবং মার্কিন জিডিপির অনুপাত সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।

জিডিপি হিসাব করার ক্ষেত্রে দাম এবং বিনিময় হারসহ নানা উপাদান সম্পর্কিত। বিগত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্র আমূল রাজস্ব ও আর্থিক নীতি গ্রহণ করেছে, যা দেশটিকে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে, যদিও দেশটি তার জিডিপির আকারও অনেক বাড়ার দাবি করেছে।

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিপিআই এবং পিপিআই গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৮ এবং ১৬.৫ শতাংশ বেড়েছে, চীনের সিপিআই এবং পিপিআই যথাক্রমে ২ এবং ৪.১ শতাংশ বেশি। সংখ্যাগত হিসাবের পার্থক্য সহজেই বোঝা যায়।

জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির কথা বলতে হলে, প্রথমে স্বদেশের জনগণের সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি জনগণের সুখী অনুভূতি বয়ে আনে কিনা, সেদেশের জনগণের বলার অধিকার আছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ নির্বাচনের চক্রে প্রবেশ করেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি সমস্যা হলো জনগণের সবচে বেশি নজর রাখা আলোচ্যবিষয়।

দাম ছাড়াও, অর্থনৈতিক সমষ্টির তুলনা করার সময় বিনিময় হারও বিবেচনা করতে হবে। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমষ্টির তুলনা করার সময় আরএমবিতে চিহ্নিত চীনের জিডিপির স্কেলকে মার্কিন ডলারে রূপান্তর করতে হবে। বিগত দু বছরে যুক্তরাষ্ট্র নতুন দফায় সুদের হার বৃদ্ধি চক্রে প্রবেশ করেছে। ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ফেডারেল রিজার্ভ ৫২৫টি বেসিস পয়েন্টের ক্রমবর্ধমান হারসহ পরপর ১১ বার সুদের হার বাড়িয়েছে। এটি গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে সবচে দ্রুততম এবং আক্রমনাত্মক হার বৃদ্ধি।

মজার বিষয় হলো: অন্য অর্থনৈতিক সত্তার কথা নিয়ে আলোচনা করার সময় বস্তুনিষ্ঠভাবে অন্যান্য কারণ বিবেচনা করা হয়, তবে চীনের কথা নিয়ে বললে দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে, এমন মন্তব্য বেরিয়ে আসে।

মনে হয় চীনের অর্থনীতি প্রান্ত-সীমায় পৌঁছানোর কথা আসলে চীনের অর্থনীতি ভেঙে পড়া সংক্রান্ত সর্বশেষ কথা। চীনের অর্থনীতি প্রান্ত-সীমায় পৌঁছানোর জিগির তোলার আসল উদ্দেশ্য কি? তা হলো চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরির্তন করার অপচেষ্টা।

চীনের অর্থনীতি নিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস আসে সমস্যার সমাধানের উপায় থেকে, যে উপায় নিজের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং নিজের সমস্যার সমাধান করতে পারে, সে উপায়ে জিদ থাকা উচিত্। প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠা, সমস্যার সম্মুখীন হওয়া এবং এর সমাধান করা হলো চীনের অর্থনীতির উন্নয়নের প্রতি আমাদের আত্মবিশ্বাস।

লিলি/হাশিম/শিশির।