বাংলাদেশের তিন জেলায় শীত বস্ত্র ও ত্রাণ সহায়তা দিল চীন
2024-02-02 19:15:28

ফেব্রুয়ারি ০২, ঠাকুরগাও, সিএমজি বাংলা: বাংলাদেশের তিন জেলার অসহায় মানুষদের মধ্যে  শীতবস্ত্র ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে চীন।

'বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের' সহযোগিতায় চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে পঞ্চগড়ের সাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে নীলফামারীর ডোমার এবং ঠাকুরগাঁওয়ের নারগুনেও ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লিওয়েন ইউয়ে এবং বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের' সেক্রেটারি জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম রানা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এসব ত্রাণ মানুষের হাতে তুলে দেন।

ষাটোর্ধ আছিয়া খাতুন নামে এক বৃদ্ধা বলেন, “এতো শীত গেলেও আমাদের কেউ কিছুই দেয়নি। শীতে খুবই কষ্ট হয়েছে। চীন দেশকে ধন্যবাদ। এখন আর শীতে কষ্ট করা লাগবে না”

গেল বছরও শীতকালে বাংলাদেশের উত্তরের কয়েকটি জেলায় শীত বস্ত্র ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছিল চীনা দূতাবাস।

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের সেক্রেটারি জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম রানা বলেন, “শীতে উত্তরবঙ্গের মানুষ বিশেষ করে যারা দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে তারা সবথেকে বেশি কষ্ট পায়। আমরা দেখেছি এই মানুষগুলো শীত বস্ত্র পেয়ে খুবই খুশি হয়েছে। চীন সরকার যদি আমাদেরকে সবসময় এরকম সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের দেশের জনগণ উপকৃত হবে।”

বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর ইউয়ে লিওয়েন জানান, বাংলাদেশে ৬৭০টিরও বেশি নিবন্ধিত চীনা কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে। এ বিনিয়োগের ফলে হাজার হাজার বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, “স্থানীয় মানুষদের হাসি মুখগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। আমরা নিজেরাও খুশি। তীব্র শীতে স্থানীয় মানুষরা খুব কষ্ট পাচ্ছিলো। এ জন্যই চীনা দূতাবাস তাদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং তাদের ভালোবাসা দিয়েছি। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অভিন্ন ভবিষৎ নির্মাণের কথা বলেছেন। এটি একটি বিশাল ধারণা তবে আমরা এর মধ্যেই আছি। সুতরাং আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এবং এ ধরনের কাজ আমরা অব্যাহত রাখবো।’

বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই ডোনেশন প্রোগ্রাম। কালচারাল কাউন্সেলর বলেন, ‘এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আমি বেশ কিছু সুন্দর স্থান ঘুরেছি। চীনে আমার গ্রামের বাড়ি ও দাদার বাড়িও এরকম ছিল। এখন সেটা বদলেছে। আর এভাবে এসব এলাকার উন্নয়নেও সহযোগিতা করবে চীন। চীন বাংলাদেশ খুব ভালো সহযোগী এবং বন্ধু দেশ। বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার আওতায় বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে চী। যা অব্যাহত রাখা হবে।”

ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি শেষে ইউয়ে লিওয়েন স্থানীয় অসহায় মানুষদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের নারগুন ইউনিয়নে ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পও ঘুরে দেখেন। এ ছাড়া, চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর তিন জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

শীত বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসন ও ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের সদস্যরা।

এর আগে গত বছর ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নারীদের স্বাস্থ্যসেবার বিকাশে ১৫ লাখ ডলারের অনুদান দিয়েছিল চীন।

শুভ/শান্তা

ছবি: সিএমজি বাংলা।