Web bengali.cri.cn   
সুরকার লিউ থিয়ান হুয়া ও তার সুর
  2015-08-04 19:23:24  cri


বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন চীনের বিখ্যাত সুরকার লিউ থিয়ান হুয়ার প্রতিনিধিত্বকারী কর্ম "উজ্জ্বল পথে যাওয়া" নামের একটি সুর। সুরটি বাজিয়েছেন বিখ্যাত হুছিন বাদক হুয়াং আন ইউয়ান।

'উজ্জ্বল পথে যাওয়া' নামের সুরটি সুরকার লিউ থিয়ান হুয়া'র ১৯৩১ সালের বসন্তকালে সৃষ্টি করা এরহু দিয়ে বাজানো একক সুর। এ সুর হচ্ছে উত্তেজনাপূর্ণ মার্থ । সে সময়টি চীনের বিপ্লবে ভাটা পরার যুগ।

লিউ থিয়ান হুয়া দেশের সংগীতের জগতের পতন হওয়ার সম্ভাবনা দেখে 'পশ্চিমা ও প্রাচ্যের সঙ্গীতের মিলনে ও সহযোগিতায় এক নতুন পথ খুঁজে বের করার' সিদ্ধান্ত নেন। এ সুরটি যেন বীরপুরুষদের উজ্জ্বলতা খুঁজে ফেরে এবং উজ্জ্বলতার প্রশংসা করে। এ সুর থেকে সুরকারের অধ্যবসায়ের মর্ম ও দেশের সঙ্গীত সংস্কার করার সুন্দর আশা-আকাঙ্খা প্রতিফলিত হয় এবং তত্কালীন চীনা জনগণের চীনের উজ্জ্বল দিকে এগিয়ে যাওয়ার অভিন্ন সদিচ্ছা প্রকাশিত হয়েছে।

লিউ থিয়ান হুয়া

বন্ধুরা, এতোক্ষণ আপনারা হুছিন বাদক হুয়াং আন ইউয়ানের বাজানো লিউ থিয়ান হুয়ার তৈরি সুর 'উজ্জ্বল পথে যাওয়া' শুনলেন।

এ সুরের মধ্যে লিউ থিয়ান হুয়া সাহসের সাথে পশ্চিমা সংগীত সৃষ্টির কৌশল ও বেহালা বাজানো শেখার পাশাপাশি চীনের জাতীয় সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছেন। তার সুরের মাধ্যমে চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র এরহু বাজানোর কৌশলও বিকশিত হয়েছে। বন্ধুরা, এবার শুনুন লিউ থিয়ান হুয়া নিজের বাজানো 'উজ্জ্বল পথে যাওয়া' নামের সুরটি।

লিউ থিয়ান হুয়া ১৮৯৫ সালে চীনের চিয়াংসু প্রদেশের চিয়াং ইন শহরের থেংচিয়াং  থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চীনের একজন আধুনিক সুরকার, বাদক ও সঙ্গীত শিক্ষাবিদ। চীনের বিভিন্ন সঙ্গীতগুলোর মধ্যে এরহু'রের ওপর তার দখলতা সবচেয়ে বেশি। প্রাচীন চীনে এরহু কেবল স্থানীয় অপেরা ও সঙ্গীতে অনেক বাদ্যযন্ত্রের সাথে একটি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। বলা যায়, এরহুরের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা ছিল না। কিন্তু লিউ থিয়ান হুয়া এরহুকে সংস্কার করেন। এরহু দিয়ে বাজানোর জন্য দশটি একক সুর সৃষ্টি করেছেন এবং প্রণালীবদ্ধভাবে এরহু শিক্ষার পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার অবদানে এরহু একক বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এর ফলে এরহু চীনের সঙ্গীত বিষয়ক উচ্চশিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সুতরাং লিউ থিয়ান হুয়াকে এরহু'র জন্মদাতা বলে অভিহিত করা যায়।

বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন লিউ থিয়ান হুয়া'র প্রথম সঙ্গীত কর্ম। এ সুরের নাম "অসুস্থতার গান"। এ সুর সৃষ্টি করতে আট বছর সময় লেগেছে তার। লিউ থিয়ান হুয়া বলেন, "অসুস্থতার গান, রোগে আক্রান্ত হওয়ার অর্থ নয়। এ রোগ হচ্ছে মনের বিষন্নতা। এরহু দিয়ে বাজানো এ সুর শুনে মনে হয়, কেউ কেউ মনের বেদনা প্রকাশ করছে। ১৯৯৩ সালে এ সুরটি এবং 'সুন্দর রাত', 'খালি পর্বতে পাখির ডাক'সহ তিনটি সুর একসাথে 'বিংশ শতাব্দীর চীনা শ্রেষ্ঠ সংগীত পুরস্কার' লাভ করে।

"অসুস্থতার গান" চীনের জাতিগত বাদ্যযন্ত্র, বিশেষ করে এরহু'এর উন্নয়নের জন্য অসাধারণ তাত্পর্য বয়ে এনেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে চীনে এক গভীর প্রভাবশালী সাংস্কৃতিক সংস্কার শুরু হয়। এ সুর থেকে এরহু, পিপা, গুচাং ও বাঁশিসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের সুরের সৃষ্টি, পরিবেশনা ও শিক্ষাদান সবই এক পরিপূর্ণ যুগে প্রবেশ করে। এ সুরে '৪ঠা মে যুগের' জীবনের প্রতি চীনা বুদ্ধিজীবীদের বিষন্নতা, দ্বিধা, সমাজের অগ্রগতির অন্বেষণ ও সংগ্রাম বর্ণিত হয়েছে। এ সুর ৪ মে আন্দোলনের মর্মের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং এতে প্রগতির ধারণা প্রতিফলিত হয়েছে।

1 2
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040