Web bengali.cri.cn   
নারী সমাজের সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে সকলের জন্য উন্নততর বিশ্ব গঠন
  2015-11-30 13:06:39  cri

সুধীবৃন্দ ও বন্ধুরা,

সদ্যগৃহীত ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিটি ক্ষেত্রে লিঙ্গসাম্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলুন আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণের মাধ্যমে পেইচিং সম্মেলনের চেতনার প্রতি পুনরায় নিজেদের দৃঢ় সমর্থনের ঘোষণা দেই। লিঙ্গসাম্য ও নারীর সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এক্ষেত্রে কালক্ষেপণের কোনো অবকাশ নেই।

প্রথমত, সামাজিক ও আর্থনীতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর পাশাপাশি আমাদেরকে নারী উন্নয়নের জন্যও লড়াই করতে হবে। নারীকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর উন্নয়নের সুবিধা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় বাস্তবতা, লিঙ্গ পার্থক্য, এবং নারীর বিশেষ প্রয়োজনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে আমাদেরকে উন্নততর উন্নয়ন-কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এ কৌশলের অন্যতম লক্ষ্য হবে নারীরা যেন উন্নয়ন-সুবিধার সমান ভাগ পায়, তা নিশ্চিত করা। বিদ্যমান নীতিমালায় এমন ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে নারীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক ও আর্থনীতিক উন্নয়ন-প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ বাড়ে। চীনের অভিজ্ঞতা অনুসারে, নারীরা যত বেশি সামাজিক ও আর্থনীতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়, ততই তাদের সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় হয়। এতে সামাজিক উত্পাদনশীলতা বাড়ে, অর্থনীতি উপকৃত হয়।

দ্বিতীয়ত, আমাদেরকে নারীর স্বার্থ ও অধিকার রক্ষা করতে হবে। নারীর অধিকার ও স্বার্থ হচ্ছে মৌলিক মানবাধিকার। এগুলো আইন-কানুন দিয়ে সুরক্ষিত হতে হবে এবং জাতীয় ও সামাজিক প্রথা-নিয়মের সাথে সমন্বিত করতে হবে। সমাজ ও অর্থনীতিতে নারীদের ভূমিকা রাখার ক্ষমতাকে আমাদের সমর্থন দিতে হবে; সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণের দক্ষতা বাড়াতে হবে; এবং রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষাঙ্গনে তাদের নেতৃত্বের ভূমিকাকে সমর্থন দিতে হবে। নারীদের জন্য পর্যাপ্ত মৌলিক চিকিত্সা-সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রামীণ নারী, প্রতিবন্ধী নারী, অভিবাসিত নারী, মধ্যবয়সী ও প্রবীণ নারী, এবং সংখ্যালঘু নারীদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। বিদ্যালয়গুলোতে যেন প্রতিটি মেয়ে-শিক্ষার্থীর জন্য স্থানসংকুলান হয় এবং সেগুলো যেন তাদের জন্য নিরাপদ হয়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক পরিবর্তন ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উত্থান-পতনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে নারীদের বৃত্তিমূলক ও জীবনব্যাপী শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

তৃতীয়ত, সম্প্রীতিময় ও সহনশীল সমাজ গড়ে তুলতে হবে। পুরুষ ও নারী একই পৃথিবীতে বসবাস করেন। যে সমাজে নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের মাত্রা বা নেতিবাচক ধারণা যত কম, সে সমাজ তত বেশি গতিশীল ও সহনশীল। নারীর বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতাসহ সবধরনের সহিংসতা নির্মূল করতে হবে। আমাদেরকে লিঙ্গসাম্যের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে হবে এবং নারী-উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টিকারী সকল পুরাতন ধ্যান-ধারণা বাদ দিতে হবে। আমি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের 'হি ফর শি' বা 'নারীর জন্য পুরুষ' কর্মসূচির প্রশংসা করি এবং আশা করি পুরুষরা দলে দলে এ আন্দোলনে শরিক হবেন।

চতুর্থত, নারী-উন্নয়নের অনুকূল বৈশ্বিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সমাজে যখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়, তখন নারী ও শিশুরা সবচে' বেশি ভোগান্তির শিকার হয়। প্রতিটি নারী ও শিশুর সুখী ও শান্তিময় জীবনের জন্য আমাদেরকে শান্তি, উন্নয়ন, ও কল্যাণধর্মী সহযোগিতার পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে এবং সুস্পষ্টভাবে শান্তির জন্য কাজ করতে হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন নারী সংগঠনের উচিত পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ানো। এর উদ্দেশ্য হবে পারস্পরিক বন্ধুত্ব জোরদার করা এবং যৌথভাবে উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করা। নারীসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উন্নত দেশগুলোর উচিত এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অধিক হারে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া এবং বিভিন্ন দেশের নারীদের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো।

1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040