Web bengali.cri.cn   
নারী সমাজের সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে সকলের জন্য উন্নততর বিশ্ব গঠন
  2015-11-30 13:06:39  cri

(লিঙ্গসাম্য ও নারীর ক্ষমতায়নের ওপর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণ। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫, নিউইয়র্ক)

সম্মানিত মহাসচিব বান কি-মুন,

সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক,

সম্মানিত সহকর্মীবৃন্দ,

উপস্থিত সুধীবৃন্দ ও বন্ধুরা,

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী ও পেইচিং বিশ্ব নারী সম্মেলন আয়োজনের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এখানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করে লিঙ্গসাম্য ও নারী উন্নয়নের পক্ষে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা এবং উন্নততর ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করার বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে।

নারীরা বস্তুগত ও আত্মিক সম্পদের স্রষ্টা। তারা সমাজ উন্নয়ন ও প্রগতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। নারী না-থাকলে মানবজাতি বা মানবসমাজের কোনো অস্তিত্ব থাকতো না।

লিঙ্গসাম্য প্রতিষ্ঠার বড় কারণ রয়েছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, নারীদের মুক্তি ও অগ্রগতি ছাড়া মানবজাতির মুক্তি ও অগ্রগতি অর্জিত হতো না। লিঙ্গসাম্যের মহান লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদেরকে কঠিন পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। ২০০ বছর আগে বিশ্বের প্রথম নারী অধিকার ঘোষণা প্রকাশের পর থেকে প্রথম ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন; নারীদের মর্যাদাবিষয়ক জাতিসংঘ কমিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুরু করে, নারীদের প্রতি সবধরণের বৈষম্য দূর করা বিষয়ক কনভেনশন গ্রহণ পর্যন্ত—নারী-পুরুষ সমতা রক্ষার জন্য যতগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় এর প্রতিটিই ছিল একেকটি বড় পদক্ষেপ।

বিশ বছর আগে পেইচিংয়ে চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে 'পেইচিং ঘোষণা' এবং 'প্লাটফর্ম ফর অ্যাকশান' গৃহীত হয়েছিল। এর মাধ্যমে লিঙ্গসাম্যকে পৃষ্টপোষকতা যোগাতে ও নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ও নীতিকাঠামো ঠিক করা হয়। আজ পেইচিং বিশ্ব নারী সম্মেলনের চেতনা বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। লিঙ্গসাম্যের প্রশ্নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ধীরে ধীরে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের জীবনমানেরও উন্নতি ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে 'জাতিসংঘ নারী' বা 'ইউএন উইমেন'-এর অনেক প্রশংসনীয় কাজের কথা উল্লেখ করতে হয়।

বছরের পর বছরের নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে, একসময় যা অসম্ভব মনে হতো, তা এখন সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের ১৪৩টি দেশ লিঙ্গসাম্যকে নিজ নিজ আইনের অংশে পরিণত করেছে। এর ফলে নারীদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক তত্পরতায় অংশগ্রহণের পথে সবধরনের আইনগত বাধা দূর হয়। নারীদের শিক্ষা গ্রহণের অধিকার, বিবাহের স্বাধীনতা, চাকরির অধিকারের প্রশ্নে বিশ্বে এখন বৃহত্তর মতৈক্য সৃষ্টি হয়েছে।

অবশ্য এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও অঞ্চলে নারী-পুরুষ অসমতা রয়েই গেছে। এসব দেশ ও অঞ্চলে নারীরা পুরুষদের সমান অধিকার পায় না; সুযোগ-সুবিধা ও সম্পদের ওপর তাদের অধিকার সমভাবে স্বীকৃত নয়। এসব সমাজে নারীদের শক্তি, প্রতিভা ও অবদানের পূর্ণ স্বীকৃতি অনুপস্থিত। বর্তমান বিশ্বের ৮০ কোটি দরিদ্র জনসংখ্যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি নারী। যুদ্ধ ও মহামারীর তারাই প্রধান শিকার; সহিংসতা ও সন্ত্রাসের কুফল তাদেরই বেশি ভোগ করতে হয়। আজও অনেক দেশে ও অঞ্চলে নারীদের প্রতি নানা ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তাদেরকে প্রায়ই নির্যাতন ও অমানবিক আচরণেরও শিকার হতে হচ্ছে।

বাস্তবতা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, সার্বিকভাবে লিঙ্গসাম্য অর্জন করতে আমাদের এখনও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জন করতে আমাদেরকে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে।

1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040