Web bengali.cri.cn   
অর্থনৈতিক সংবাদ --- ২০১৫/৫/৪
  2015-05-04 19:46:37  cri

১.রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত শনিবার 'রুশ-চীন গ্যাস চুক্তি' অনুমোদন করেছেন। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল চুক্তিটি রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এবং তার ঠিক পাঁচ দিন পর উচ্চকক্ষে অনুমোদিত হয়।

গত বছরের মে মাসে পুতিনের চীন সফরের সময় ৩০ বছর মেয়াদী চক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে, ২০১৮ সাল থেকে চীন ইস্ট-রুট পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে বছরে ৩৮০০ কোটি কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ পাবে।

২.চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, আন্তর্জাতিক শিল্প সহযোগিতার ক্ষেত্রে তার দেশ সবসময় চারটি মূলনীতি মেনে চলে। তিনি গত মঙ্গলবার পেইচিংয়ে আয়োজিত এ সংক্রান্ত এক ফোরামে এ কথা বলেন।

ফোরামে মন্ত্রী এ চারটি মূলনীতি ব্যাখাও করেন। তিনি বলেন, চীন উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর সাথে শিল্প-সহযোগিতার সময় সেসব দেশকে বেশি সুবিধা দেওয়া ও সার্বিকভাবে দ্বিপাক্ষিক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি মেনে চলে। তার দেশ শুধু নিজের মুনাফার কথা না-ভেবে পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে কাজ করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

চীনের সহযোগিতানীতিকে স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন, চীন আন্তর্জাতিক শিল্প সহযোগিতার ক্ষেত্রে সবসময় সহনশীলতার পরিচয় দেয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের নিয়মনীতিও কঠোরভাবে অনুসরণ করে চলে।

৩.বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ২৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। গত বুধবার দিন শেষে দেশটির ফরেন কারেন্সির পরিমাণ ২৪০৮ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান।

তিনি জানান, মূলত রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ভালোপ্রবৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসা রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

কেন্দ্রীয়ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, চলতিঅর্থবছরের প্রথম নয় মাসে তথা জুলাই-মার্চ সময়ে ১ হাজার ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭.২১ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-র তথ্যঅনুসারে, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭৪ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থের পরিমাণ জুলাই-মার্চ সময়ে দেশে আসা মোট রেমিটেন্সের ১৫ শতাংশের বেশি।

জনশক্তিকর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরবআমিরাত, কুয়েতসহ অন্যান্য দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ কমলেওযুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়ছে।

জনশক্তিকর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৮০ লাখবাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের অধিকাংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে, কাজ করছেন বিভিন্ন শ্রমঘনিষ্ঠ পেশায়। আর যুক্তরাষ্ট্রেসব মিলিয়ে প্রায় এক লাখের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন।

৪.চলতি বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিরলক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি, এবং রাজস্ব আদায়েরলক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যহত হচ্ছে। এ অবস্থায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্বআদায়, সরকারি ব্যয়, বাজেট ঘাটতি, বৈদেশিক সহায়তা, ব্যক্তি খাতে ঋণ, রপ্তানি, মূল্যস্ফীতি এবং কু-ঋণ সম্পর্কিত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'উন্নয়নঅন্বেষণ' চলতি অর্থবছরের প্রেক্ষিতে প্রাক বাজেট প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত অর্জন কমহওয়ার বিষয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০০৪-১৫ অর্থবছর শেষেজিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত অর্জন লক্ষ্যমাত্রা ৭.৩ শতাংশ থেকে কম হয়ে ৬.২৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮২হাজার ৯৫৪ কোটি টাকার বিপরীতে বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছে ৬৬ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষ্যমাত্রারমাত্র ৩৬.৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের ধীর গতির কারণে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম হয়েছে। যেখানে এ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৬৭ হাজার ৫৫২কোটি টাকা ধরা হয়েছে সেখানে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ১০ হাজার ১০৪ কোটি টাকা।

৫.আর্থিক বছরের শুরুটা ভালই হয়েছে ভারতীয় গাড়ি শিল্পের। দু'একটি বাদদিয়ে প্রায় সবক'টি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই নতুন অর্থবর্ষের প্রথম মাসে আগেরবারের এপ্রিলের তুলনায় বেশি গাড়ি বিক্রি করেছে।

দেশের বৃহত্তম যাত্রীবাহীগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মারুতি-সুজুকির বিক্রি বেড়েছে ২৭%। তাদের বিভিন্ন মডেলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে অল্টো এবং ওয়াগন-আর (প্রায় ৩৬%)।

সবচেয়ে বেশি বিক্রি বাড়িয়েছে জাপানি বহুজাতিক টয়োটা। টয়োটা কির্লোস্করমোটরের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৬৩%। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, নতুন গাড়ি 'এটিওস-ক্রস' এবং নতুন 'করোলা-অল্টিস' এই সাফল্যের কারিগর।

পিছিয়ে নেই হুন্দাই-ও। আগেকার 'আই-২০' গাড়িটির ভিত্তিতে 'এলিট আই-২০' এবং আই-২০ অ্যাক্টিভ' গাড়ি দু'টি বাজারে এনেছে তারা। তাদের সার্বিক বিক্রিবেড়েছে প্রায় ৯.৫%। এদিকে, জাপানি বহুজাতিক হোন্ডা কারস-এরবিক্রি বেড়েছে ১৪%; ফোর্ডের ৭%; এবং টাটা মোটরসের ৭%।

তবে আর্থিক বছরের শুরুটা তেমন ভালো হয়নি কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা সংস্থার। যেমন অর্থবর্ষের প্রথম মাসে মহীন্দ্রাগোষ্ঠীর বিক্রি বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র এক শতাংশ। আর জেনারেল মোটরসেএ বিক্রি কমেছেপ্রায় ৩২%।

৬.সংস্থা পরিচালনায় দুর্নীতি ঠেকাতে শেয়ারহোল্ডাদের আরও কার্যকরী ভূমিকা নেওয়াজরুরি। তাঁরা সচেতন থাকলে দুর্নীতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। সম্প্রতিইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক সভায় এ মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

তারা বলেন, স্বচ্ছতা আনতে বাজারে নথিভুক্ত সংস্থার সংখ্যা বাড়ানোয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষগুলিকে উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, নথিভুক্ত সংস্থাকে বাধ্যতামূলকভাবে বিভিন্ন তথ্য শেয়ারহোল্ডারদের জানাতেহয়। এতে পরিচলনায় দুর্নীতির সম্ভাবনা কমে।

সভায় জানানো হয়, ভারতে প্রায় ১৪ লক্ষ সংস্থা 'রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজের' দফতরে নথিভুক্ত, যার মাত্র ৬,০০০টি শেয়ারবাজারে নথিভুক্ত।

৭.এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-র প্রেসিডেন্ট তাকেহিকো নাকাও বলেছেন, সংস্কারের পক্ষে শক্তিশালী রাজনৈতিক সমর্থন থাকা সত্ত্বেও, অর্থনীতির ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলতি অর্থবছরে দেশটির পক্ষে ৪.৫ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে না। পাকিস্তান সরকার অবশ্য চলতি অর্থবছরে ৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।

৮.দ্বিপাক্ষিক অবাধ বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা পুনরায় শুরু করতে একমত হয়েছে আসিয়ান (অ্যাসোসিয়েশান অব সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশন্স) ও ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন)। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দু'পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক আলোচনা শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। যৌথ বিবৃতি অনুসারে, দু'পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চলতি বছরের শেষ নাগাদ আলোচনায় বসবেন।

দশ সদস্যের আসিয়ান-এর সাথে ইইউর মুক্ত বাণিজ্যচুক্তিবিষয়ক আলোচনা ২০০৭ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু আসিয়ানভুক্ত দেশ মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং আরও কিছু ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় ২০০৯ সালে সে আলোচনা ভেঙে যায়।

উল্লেখ্য, ইইউ আসিয়ানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০১৪ সালে দু'পক্ষের মধ্যে মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া, একই বছর আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে ইইউ'র মোট সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ২৯০০ কোটি মার্কিন ডলার।

(তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক, প্রথম আলো, বিডিনিউজ, সিনহুয়া, কলম্বোপেইজ, আনন্দবাজার পত্রিকা, ডন ডটকম ইত্যাদি)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040