চৌ থিয়ে তোং বলেন, গল্প বলার ক্ষেত্রে হলিউডের চলচ্চিত্রের তুলনায় দেশীয় চলচ্চিত্র পরিচালকের পদ্ধতি একটু ভিন্ন। চীনের চলচ্চিত্র পরিচালকেরা সবসময়ই একটি খুব সহজ গল্প অনেক কঠিন করে তোলেন। বিদেশি দর্শকরা যদি চীনের ইতিহাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সুপরিচিত না হন, তাহলে তাঁরা খুব ভালোভাবে চলচ্চিত্রের প্রধান বিষয় বুঝতে পারেন না।

গত শতাব্দীর ৭০'র দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ব্রুস লি একজন জনপ্রিয় তারকায় পরিণত হন। আর তখন থেকেই হলিউডে চীনের কুংফু চলচ্চিত্রের দরজা খুলে যায়। সেই সঙ্গে কুংফু চীনের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির প্রতীকে পরিণত হয়। কুংফু চলচ্চিত্রের সমৃদ্ধ মার্শাল আর্ট, সহজ ও মজাদার গল্প এবং রহস্যময় প্রাচ্য উপকরণ বিদেশে চীনের চলচ্চিত্রের দরজা খুলে দিয়েছে। বিদেশের বাজারে বহু বছর ধরে কেবল মাত্র কুংফু চলচ্চিত্রই জনপ্রিয় হয়ে আসছে।

হলিউডের প্রথম চীনা নারী প্রযোজক উ বিং মনে করেন, 'চীনের চলচ্চিত্র সম্পর্কে বিদেশি জনগণের ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। চীনের চলচ্চিত্র উল্লেখ করলে বিদেশিদের কাছে কেবল মার্শাল আর্ট ও কুংফু ছাড়া আর কিছু নেই। কেননা আমাদের সংস্কৃতি প্রসঙ্গে তাঁদের জানাশোনা অনেক সীমিত। চীনের সংস্কৃতিকে বাইরে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য চলচ্চিত্র হলো সবচেয়ে ভালো মাধ্যম।'

বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া চীনের সপ্তম প্রজন্মের চলচ্চিত্র পরিচালক লু ছুয়েন মনে করেন, মার্শাল আর্টের মাধ্যমে চীনের চলচ্চিত্রের বাইরের বাজারে প্রবেশের যুগ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। বিশ্বের কাছে আমাদেরকে অন্য প্রেক্ষাপটের চলচ্চিত্র তুলে ধরা উচিত। আমাদের বলা গল্প সবাইকে মুগ্ধ করতে পারলে অবশ্যই সারা বিশ্বকে মুগ্ধ করতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, 'আসলে চলচ্চিত্র হলো সীমাহীন এক ধরনের ভাষা। যদি একজন চলচ্চিত্র পরিচালক মানবজাতির ভাগ্যের ওপর খেয়াল করেন তাহলে তিনি আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। আমার চলচ্চিত্র, যেমন 'মাউন্টেইন পেট্রোল'-এ পরিবেশের সঙ্গে মানবজাতির সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রে আসলে প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশ তথা উন্নত দেশগুলোর সম্মুখীন একই ধরনের সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে।