Web bengali.cri.cn   
শীতকালে সিনচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ফুহাই মাছ ধরা উত্সব
  2013-02-27 14:56:31  cri
শীতকালে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তেমনি একটি উত্সব সিনচিয়াং উইগুর জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের আলেথাই জেলার ফুহাই উপজেলার মাছ ধরা উত্সব। এটি খুবই মজার একটি উত্সব। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদের নিয়ে সিনচিয়াংয়ের মাছ ধরা উত্সবের আনন্দময় পরিবেশ অনুভব করবো।

আলিম: বর্তমানে সিনচিয়াং সবচে ঠাণ্ডা সময় অতিক্রম করছে। আলেথাই জেলার তাপমাত্রা মাইনাস ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় ফুহাই উপজেলার উলুনকু হ্রদে বরফস্তরের গভীরতা ১ মিটার; এর উপরে তুষারের উচ্চতা আবার ০.৩ মিটার। আছে তীব্র ঠাণ্ডা বাতাসের প্রবাহ। কিন্তু এই প্রচণ্ড ঠাণ্ডাও চীনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তারা শীতকালে ফুহাই মাছ ধরা উত্সবে অংশ নেয়ার জন্য এখানে বেড়াতে এসেছেন।

সুবর্ণা: উলুনকু হ্রদ হচ্ছে চীনের ১০টি বৃহত্তম বদ্ধ হ্রদের অন্যতম। এ হ্রদ 'মরুভূমির সাগর' ও 'সুস্বাদু ফুহাই মাছ'-এর জন্য বিখ্যাত। শীতকালে বরফাচ্ছাদিত হ্রদে দাঁড়িয়ে বড় জাল দিয়ে মাছ ধরা হল এ-অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার পদ্ধতি; এ ঐতিহ্যের ইতিহাস ৫০ বছরেরও পুরাতন। এ-উত্সব শুরুর আগে পবিত্র আগুন সংগ্রহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কারণ, পবিত্র আগুন সংগ্রহ অনুষ্ঠানের সাথে প্রাচীনকালের মানুষের সুর্য্যকে আরাধনা করার সাথে সম্পর্কিত। আগুন হল প্রকৃতির ওপর মানবজাতির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রতীক। আগুন মানবসভ্যতার নিয়ামক এবং সূর্যের উত্তাপও মানবজাতির জন্য অপরিহার্য।

আলিম: আচ্ছা, বন্ধুরা, তাহলে ফুহাই উপজেলার মাছ ধরা উত্সব সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে চলুন মাছ-ধরা সম্পর্কে একটি গান শুনে নেয়া যাক।

সুবর্ণা: পবিত্র আগুন জ্বালানোর সাথে সাথে স্থানীয় লোকজনের সুখী, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ জীবনের জন্য প্রার্থনা করা হয়। এ ছাড়া, হ্রদের উদ্দেশ্যে বলিদান অনুষ্ঠানও করা হয়। সাধারণত ৬০ জন জেলে নিয়ে বলিদান দল গঠিত হয়। তারা কাপড় মাছ, গরুর মাথাসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে হ্রদ-দেবতার কাছে শ্রদ্ধা নিবেদন করে, যাতে নতুন বছরে জেলেরা নিপরাপদে আরো বেশি বেশি মাছ শিকার করতে পারে।

আলিম: স্থানীয় অঞ্চলের শীতকালের মাছ-ধরা অনুষ্ঠান বেশ মজার। সে-সময় হ্রদের পানি পুরোপুরি বরফ হয়ে যায়। জেলেদের প্রধান অনেক লোক নিয়ে সেই হ্রদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকেন; তখন যন্ত্র দিয়ে হ্রদের বরফ কেটে একটি বড় আকারের গর্ত খনন করা হয়। তারপর বড় আকারের জাল হ্রদের বরফের ৬০ সেন্টিমিটার গভীরে পানিতে পাতা হয়। এ-জালের বিস্তার ৫০০ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ২ কিলোমিটার। এভাবে মাছ ধরার ক্ষেত্রে ঘোড়ার সাহায্য নেয়া হয়, বিশালাকৃতির জাল টানার জন্য। এভাবে অনেক বড় বড় মাছ ধরা হয়।

সুবর্ণা: আমি টেলিভিশনে এভাবে মাছ ধরার দৃশ্য দেখেছিলাম। জাল পাতার নির্দিষ্ট সময় পর জেলেদের প্রধানের নির্দেশে ঘোড়া দিয়ে হ্রদের গভীরে পাতা জাল টেনে তোলা হয়। জালের সাথে উঠে আসে বড় বড় মাছ। তবে, জালের সাথে উঠে সব মাছ পানি থেকে তোলা হয় না। আড়াই কেজি বা তারচে বেশি ওজনের মাছই কেবল পানি থেকে তোলা হয়। ছোটো মাছগুলো আবার পানিতে ছেড়ে দেয়া হয়। উদ্দেশ্য: মাছগুলোকে বড় হতে দেয়া। স্থানীয় অঞ্চলের জেলেরা দীর্ঘকাল ধরে এ-নীতিমালা অনুসরণ করে আসছে।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040