|
সুবর্ণা: ২০১১ সালের শেষ দিক পর্যন্ত পুয়ার শহরের প্রাকৃতিক চা বাগানের মোট আয়তন ছিল প্রায় ১০ লাখ একর। বর্তমানে পুয়ার শহর ইউয়ুননান প্রদেশের বৃহত্তম চা উত্পাদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখানকার চা বাগানের আয়তন সবচে বেশি, চা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সবচে বেশি, চা সংস্কৃতি সবচে সমৃদ্ধ, চা গবেষণার সামর্থ্য সবচে শক্তিশালী এবং পুঁজি বিনিয়োগ পরিবেশ সবচে ভালো। স্থানীয় অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতির লোকেরা বলেছেন, চা পাতা শিল্প এখন পুয়ার শহরের বৃহত্তম সবুজ স্তম্ভ শিল্প ও সংখ্যালঘু জাতির লোকদের স্বচ্ছলতার উত্স।
আলিম: শুনেছি প্রাচীনকালে পুয়ার শহরের লোকেরা শুধু অল্প পরিমাণের সবজি ও খাদ্যশস্য চাষ করার মাধ্যমে জীবনযাপন করতো। তারা বাচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য বেশি টাকা ব্যয় করতেও সক্ষম ছিল না। তবে, চা পাতার শিল্প উন্নয়নের সাথে সাথে স্থানীয় অঞ্চলের লোকদের আয় অনেক বেড়েছে; বর্তমানে তাদের জীবনযাপনের মান অনেক উন্নত হয়েছে।
সুবর্ণা: আলিম ভাই, আপনি জানেন 'পুয়ার চা' কতোটা ভালো? আসলে এটি হচ্ছে এক ধরনের কালো চা। এর রঙ টকটকে লাল বা মিশমিশে কালো। চায়ের পাতা 'কাঁচা' ও 'পাকা'—দু'ধরণেরই হতে পারে। 'কাঁচা' চা প্রাকৃতিকভাবে উত্পন্ন করা হয়। আর 'পাকা' চা কৃত্রিম পদ্ধতিতে উত্পন্ন। পুয়ার চা যত পুরনো তত ভালো। চীনের অন্যান্য অঞ্চলের চা, যেমন লোংচিং চা নতুন নতুন খেতে বেশ সুগন্ধীযুক্ত; অথচ পুয়ার চা সুগন্ধের মাত্রা কয়েক বছর রাখার পর আরও বাড়ে। সাধারণ চা পাতা গুড়ো অবস্থায় কৌটার মধ্যে রাখা হয়। কিন্তু 'পুয়ার চা' অনেকটা 'পেনকেক'-এর আকৃতিতে পাওয়া যায় এবং তার একটি টুকরা পানিতে মেশালেই চা তৈরী হয়ে যায়। অর্থাত, অন্যান্য চায়ের সাথে পুয়ার চায়ের পার্থক্য সুস্পষ্ট।
আলিম: বেশ ইন্টারেস্টিং! আচ্ছা, পুয়ার চা সম্পর্কে আমরা আরো কিছু মজার তথ্য জানলাম। এবার গান শোনার পালা। গানের নাম 'প্রাচীন চা-অশ্ব পথ'। আমরা জানি, চীনের কয়েকটি সীমান্ত এলাকায় প্রাচীন চা-অশ্ব বা টি-হর্স পথ দেখা যায়। চা এবং ঘোড়ার নামে এ-পথের নাম। মধ্য-এশিয়ার সাথে সংযুক্ত সিনচিয়াং উইগুর জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রেশম পথ বা সিল্ক রোডও তেমনি এক ধরণের পথ। সিছুয়ান প্রদেশ থেকে ইউয়ুননান প্রদেশ পার হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সাথে সংযুক্ত প্রাচীন পথকে বলে চা-অশ্ব বা টি-হর্স রোড। এই পথে ব্যবসায়ীরা চীনের চা-এর সাথে ঘোড়ার বিনিময় বাণিজ্য করতো। তাই এ-পথের নাম হয়েছে চা-অশ্ব পথ।
সুবর্ণা: হ্যা, আপনি ঠিকই বলেছেন। তবে এ-নিয়ে আর কথা না-বাড়িয়ে চলুন গানটি শোনা যাক। গানের কথা বাংলার অর্থ মোটামুটি এমন: পাহাড়ের মধ্যে মেঘ ও কুয়াশার মেলা/ নদীর পানি দারুণ স্বচ্ছ/ ঈগল উড়ে যায় আকাশে/ মায়ের হাসির শব্দ শোনা যায় প্রাচীন চা-অশ্ব পথে/ দূরে ঘোড়ার খুড়ের শব্দ তুষার শাপলার মিষ্টি কন্ঠের সাথে গান গায়/সুন্দর মেয়ে ও খাংবা ছেলে/ এ রহস্যময় প্রাচীন চা-অশ্ব পথে মিষ্টি প্রেমও আছে...
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |