Web bengali.cri.cn   
ফেংহুয়াং পুরনো নগরের দর্শনীয় স্থান
  2013-01-30 15:30:34  cri

আলিম: চীনা লেখক শেন ছং ওয়েনের প্রবন্ধের মাধ্যমে ফেংহুয়াং পুরনো নগর সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতে পারে। ১৯০২ সালের ২৮ ডিসেম্বর চীনের বিখ্যাত এই লেখক ও ইতিহাসবিদ ফেনহুয়াং পুরনো নগরের একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাড়িটি ছিল তার দাদার। এর মধ্যে মোট ১১টি কক্ষ আছে; কাঠের তৈরী বাড়িটি হুনান প্রদেশের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য বহন করছে। খোদাই করা কাঠের দরজা ও জানালা, ঘোড়ার মাথা অংকিত দেয়াল দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।

সুবর্ণা: বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে শেন ছং ওয়েন চীনের প্রথম শ্রেণীর আধুনিক লেখক হিসেবে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ফেংহুয়াং পুরনো নগরে তাঁর সারা জীবন কাটান। তাঁর উপন্যাস 'সীমান্ত শহর' বা বর্ডার টাউন, 'হুনান প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল' ও 'শেনছংওয়েনের আত্মজীবনী' দেশ-বিদেশে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তাঁর উপন্যাস জাপানি, ইংরেজি ও রুশ ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং এগুলো বিশ্বের ১০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যবই হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি তিনি দু'বার নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেছেন। তিনি শুধু একজন বিখ্যাত লেখকই ছিলেন না, ছিলেন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ। তিনি 'চীনের রেশম ডিজাইন', 'থাং ও সোং রাজবংশের তামার আয়না', 'ড্রাগন ও ফিনিক্স শিল্পকর্ম' এবং 'প্রাচীনকালে চীনের কাপড়চোপড় গবেষণা'সহ বিভিন্ন গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেন। এসব গবেষণার ফলাফল চীনের সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। আপনারা কখনো ফেংহুয়াংতে বেড়াতে আসলে শেনের বাড়ি পরিদর্শনে আসতে ভুলে যাবেন না, আশা করি।

আলিম: সুবর্ণা, আমিও এই বিখ্যাত লেখকের বাড়ি দেখতে চাই এবং তার সম্পর্কে আরো জানতে চাই। তবে, এখন শুনবো একটি গান। গানের প্রথম লাইটি হচ্ছে-- 'কবে আবার মাচান ঘরে ফিরে আসবে'। এটাও স্থানীয় অঞ্চলের একটি লোকসংগীত। চলুন গানটি শুনি।

সুবর্ণা: ইয়াং পরিবারের পূর্বপুরুষদের মন্দির ফেংহুয়াং নগরের আরেকটি বিখ্যাত ও বৈশিষ্ট্যময় স্থাপত্য নিদর্শন। ‌এটি কাঠ দিয়ে তৈরী দোতলা বাড়ি। বাড়ির মোট আয়তন ৭৭০ বর্গমিটার। বাড়িটি প্রধান দরজা, অপেরা মঞ্চ, হল, প্রধান হল ইত্যাদি নিয়ে গঠিত। এ-মন্দির ফেংহুয়াং নগরের উত্তরপূর্ব দিকে অবস্থিত। এর স্থাপত্য সৌন্দর্য এক কথায় দারুণ সুন্দর। খোদাইশিল্পে সংশ্লিষ্ট মিস্ত্রীদের দক্ষতা ফুটে উঠেছে গোটা মন্দির জুড়ে। এটি প্রাচীনকালের ছিং রাজবংশের তাওকুয়াং আমলে অর্থাত্ ১৮৩৬ সালে নির্মিত হয়। বিভিন্ন কক্ষের দরজা, জানালা ও অন্যান্য ছাদ সবই খোদাই করা কাঠ দিয়ে সাজানো হয়েছে মন্দিরে। এগুলো স্থানীয় সংস্কৃতিরই নিদর্শন। বাড়ির ভেতরে অপেরা মঞ্চের উচ্চতা ১৬ মিটার, বিস্তার ৭ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৮ মিটার। মঞ্চের দুটি স্তম্ভ ড্রাগন ও ফিনিক্সের আকৃতির; দেখতে দারুণ সুন্দর।

আলিম: প্রায় ৬০০ বছর আগে, মিং রাজবংশ আমলে, হোংছিয়াও সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল থুওচিয়াং নদীর উপরে। স্থানীয়রা বিশ্বাস করে যে, এ-সেতু ড্রাগনের গলা কেটে দেয়। প্রাচীনকালে চীনের সংস্কৃতিতে ড্রাগন ছিল রাজা বা ক্ষমতার প্রতীক। মিং রাজবংশের রাজা বিশ্বাস করতেন যে, ফেংহুয়াং নগরে ড্রাগন থাকে। তার আশঙ্কা ছিল, নদীর উপর সেতু নির্মাণ না-করা হলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হতে পারেন ও নতুন রাজার উত্থান ঘটতে পারে। সে-কারণে তিনি নদীটির মাথার দিকে এই সেতুটি নির্মাণ করেন।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040