|
আলিম: দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে কিছু বলার আগে, চলুন শ্রোতাদের জানিয়ে দিই ফেংহুয়াং নগরের অধিবাসীদের কিছু রীতিনীতি ও এ-অঞ্চলের কিছু ট্যাবু বিষয় সম্পর্কে। বন্ধুরা, মনে রাখবেন, মাথার ওপর খোলা ছাতা নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের বাড়িতে প্রবেশ করাকে এখানে অশোভন গণ্য করা হয়। পুরনো আমলের ঘরগুলোর দরজার কাছে ৩০ মিলিমিটার উঁচু কাঠের ফলক দেখতে পাবেন; ঘরে প্রবেশ করার সময় সে-কাষ্ঠফলক কোনো অবস্থাতেই পা দিয়ে মাড়িয়ে দেয়া চলবে না। তাতে, ঘরের কর্তা কষ্ট পাবেন। মিয়াও জাতির ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য বা বাসভবনে সাধারণত পবিত্র স্থান থাকে; অতিথিদের উচিত হবে না সে পবিত্র স্থানের কাছে রক্ষিত আসনে বসা। মিয়াও জাতির লোকদের বাসায় গিয়ে শীষ না-বাজানোই ভালো; কারণ তাদের বিশ্বাস, বাসার ভেতরে শীষ দিলে রাতে ভূত আসবে বা পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি হবে।
সুবর্ণা: অনেকে এগুলোকে কুসংস্কার মনে করতে পারেন, তবে স্থানীয়দের ভাবাবেগকে অবশ্যই সম্মান দেখানো উচিত; কী বলেন আলিম ভাই? (নিশ্চয়ই সুবর্না, যে-কোনো মানুষের আবেগ বা বিশ্বাসের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত) আচ্ছা, তাহলে এসব তথ্য জানার পর এখন আমরা স্থানীয় অঞ্চলের একটি গান শুনবো। গানের প্রথম লাইনর বাংলা অর্থ 'ভাইয়া চলে যাবেন না'। এটি স্থানীয় অঞ্চলের লোকসংগীত ও একটি প্রেমের গান।
আলিম: সুন্দর গানটি শোনার পর এখন ফেংহুয়াং পুরনো নগরের দর্শনীয় স্থানগুলোর কিছু তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। ফেংহুয়াংয়ের প্রধান নদীর নাম থুওচিয়াং। নদীতে ছোট নৌকায় বসে দুই তীরের কয়েক শো বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ মাচান ঘর দেখার মজাই আলাদা। নদী থেকে ঘরগুলো দেখতে বেশ লাগে। আর হুংছিয়াও সেতুর নিচ দিয়ে যাবার পর মনে হবে যেন চোখের সামনে বিশাল ক্যানভাসে আঁকা ছবি দেখা যাচ্ছে। থুওচিয়াং নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত পুরনো ভবনগুলোর দেয়াল লাল রঙ-এর পাথর দিয়ে তৈরী; দূর থেকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। থুওচিয়াং নদীর পানি খুবই পরিস্কার; ওপর থেকে নদীর নীচের ঘাসের নড়াচরাও সহজে দেখা যায়। নদীর তীরে নির্মিত মাচান ঘরগুলো পুরনো তোরণের পূর্ব ও উত্তর দিকে অবস্থিত; দেখলে মনে হবে এগুলো যেন প্রাকৃতিকভাবে তৈরী হয়েছে। সুবর্ণা: ফেংহুয়াং পুরনো নগরের পূর্বভবন ছিং রাজবংশের খাংশি আমলে অর্থাত্ ১৭১৫ সালে লাল রঙয়ের পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। ভবনের উপরের অংশ পুরনো ইট দিয়ে তৈরী। ভবনের দরজার প্রস্থ ৩.৫ মিটার এবং উচ্চতা ৪ মিটার। দরজায় ৮টি ফুটো লক্ষ্য করা যাবে; এগুলো বন্দুকের গুলির আঘাতে সৃষ্ট হয়েছে; বহন করছে প্রাচীন কালের যুদ্ধের স্মৃতি। ভবনের তোরণের উচ্চতা ১১ মিটার।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |