Web bengali.cri.cn   
হুনান প্রদেশের ফেংহুয়াং প্রাচীন নগর
  2013-01-23 16:26:36  cri
আলিম: ফেংহুয়াং পুরনো নগর চীনের একটি অন্যতম সংস্কৃতিসমৃদ্ধ নগর। নিউজিল্যান্ডের লেখক লুইস এলি একে চীনের 'সবচেয়ে বিখ্যাত নগর' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। নগরটি প্রাচীনকালের ছিং রাজবংশের খাংশি আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আসলে চীনা ভাষায় 'ফেংহুয়াং' অর্থ 'ফিনিক্স'। কথিত আছে, প্রাচীন ভারতের পৌরাণিক পাখি ফিনিক্স ৫০০ বছর বয়সে চন্দন কাঠের আগুনে আত্মাহুতি দিয়েছিল। পাখিটির আগুনে-পোড়া ছাই থেকে পরে জন্ম নেয় একটি সুন্দর পাখি, যে পাখিটি অমর। আচ্ছা সুবর্ণা, এ নগরের নাম কেন 'ফেংহুয়াং' রাখা হলো? তবে কি এর সাথে ফিনিক্স পাখির কোনো সম্পর্ক আছে?

সুবর্ণা: ফেংহুয়াং নগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পাহাড় আছে। দূর থেকে দেখলে পাহাড়টিকে উড়ন্ত ফিনিক্স-এর মতো মনে হয়। এ-কারণেই এ-নগরকে ফেংহুয়াং বলে ডাকা হয়। নগরটি হুনান প্রদেশের সিয়াংসি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত; এর মোট আয়তন ১৭০০ বর্গকিলোমিটার; লোকসংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার। এখানে চীনের সংখ্যালঘু মিয়াও ও থুচিয়া জাতির লোকেরা বাস করে।

আলিম: ১৭০৪ সালে ফেংহুয়াং নগর প্রতিষ্ঠিত হয়। এখনো নগরটির প্রাচীন আমলের পূর্ব ও উত্তর দরজা সংরক্ষিত আছে। নগরের মধ্যে পাথরের রাস্তা, নদীর পাশে কাঠের তৈরী মাচান ঘর, পুরনো নগর জাদুঘর, ইয়াং পরিবারের পূর্বপুরুষদের মন্দির, লেখক ছেন ছুং ওয়েনের পুরনো বাসভবন, থিয়ানওয়াং মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন এখনো অক্ষত আছে।

সুবর্ণা: নগরে আরো ঘুরে বেড়ানোর আগে একটি গান শুনে নিলে কেমন হয়? চলুন শুনে নেয়া যাক একটি গান। গানটির নাম 'ফিনিক্স'।

আলিম: সুন্দর গানটি শোনার পর এখন ফেংহুয়াং পুরনো নগরের আরোকিছু তথ্য শ্রোতাদের জানিয়ে দিচ্ছি। হুইলোংকে পুরনো রাস্তা হল এ-নগরের মাঝামাঝি অবস্থিত একটি রাস্তা। রাস্তাটি নগরের অনেক ছোট অলিগলির সাথে সংযুক্ত। এ পুরনো রাস্তা কালো পাথরে তৈরী; প্রাচীনকালে এখানে একটি বাজার ছিল। সে-বাজারটি বর্তমানে নগরের প্রধান ব্যবসা-এলাকায় পরিণত হয়েছে। এখানে মূলত সংখ্যালঘু জাতির হস্তশিল্পকর্ম বিক্রি করা হয়। এসব শিল্পকর্ম জাতীয় সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য বহন করে।

সুবর্ণা: ফেংহুয়াং নগর প্রাচীন ও নতুন---দুটি এলাকা নিয়ে গঠিত। পুরনো নগর পাহাড়ের কাছে নদীর পাশে গড়ে উঠেছে। থুওচিয়াং নদীটি নগরের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে। নানহুয়া পাহাড়ের নিচে অবস্থিত পুরনো তোরণ নির্মিত হয়েছিল ছিং রাজবংশের আমলে; তোরণে কাল রঙয়ের লৌহ দরজাটি পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। নগরের উত্তর দরজার কাছে নদীতে একটি সংকীর্ণ কাঠের সেতু আছে। এ-সেতুর ওপর দিয়ে দু'জন পাশাপাশি চলতে পারে না; না দুজন লোক দু'দিক থেকে একসঙ্গে সেতু পার হতে পারে। এ-সংকীর্ণ সেতুটিই ছিল প্রাচীনকালে ফেংহুয়াং নগর থেকে বের হবার একমাত্র পথ।

আলিম: সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ও স্থাপত্য নিদর্শন ছাড়া, ফেংহুয়াং নগরে নানা ধরনের মজার মজার খাবার পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি খাবারের নাম 'ফেংহুয়াং ডাল জেলি'। এ-খাবারটি সবুজ ডাল দিয়ে তৈরী এক ধরনের জেলিজাতিয় খাবার। চীনা ওষুধের বইয়ে লিপিবদ্ধ আছে যে, সবুজ ডালের জেলি শরীরের বিষাক্ত উপাদান নির্মূল করার জন্য সহায়ক। গ্রীষ্মকালে এ-খাবার খেলে শরীর ঠাণ্ডা হয়।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040