|
আলিম: সুবর্ণা, আপনি জানেন, তিব্বত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি অতি পবিত্র স্থান। তবে এটি একটি অসাধারণ পর্যটনকেন্দ্রও বটে। গ্রীষ্মকাল হচ্ছে তিব্বতের সোনালী পর্যটন সময়পর্ব। কিন্তু এর অর্থ এ-নয় যে, শীতকালে তিব্বতে দেখার মতো কিছু নেই। শীতকালের তিব্বতের প্রাকৃতিক দৃশ্যও দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয়। যেমন, মধ্যতিব্বতের নামুছুও হচ্ছে বিশ্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সবচে উঁচুতে অবস্থিত লবণাক্ত হ্রদ। তিব্বতি ভাষায় নামুছুও অর্থ 'আকাশ হ্রদ'। কথিত আছে, এ-হ্রদে স্বর্গের দেবীরা স্নান করতেন। হ্রদটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বরাবরই একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান।
সুবর্ণা: হ্যাঁ,আপনি ঠিকই বলেছেন। তিব্বতে বেড়াতে যাওয়ার সময় আমিও নামুছুও হ্রদে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক তিব্বতী বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের দেখা যায়। তারা নিজেদের এবং প্রিয়জনদের শুভকামনায় নামুছুও হ্রদে ঘুরে ঘুরে প্রার্থনা করেন। কেউ কেউ কয়েক শো কিলোমিটার দূর থেকে এভাবে প্রার্থনা করার জন্য আসেন; তাদের মনের ধর্ম অতি পবিত্র ও শক্তিশালী।
আলিম: ডিসেম্বর মাসে তিব্বতে শীত পড়ে। রাজধানী লাসা থেকে ছিংহাই-তিব্বত রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে জাংপেই তৃণভূমি অতিক্রম করে আপনারা নামুছুও হ্রদ এলাকায় পৌঁছাতে পারেন। এসময় সাদা তুষার বসন্তকালের উইলো গাছের সাদা ফুলের মতো আকাশ থেকে পড়ে; তখন যেদিকে তাকাবেন, শুধু শাদা আর শাদা। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ক্যানভাসে আঁকা শুভ্রতার ছবি।
সুবর্ণা: সত্যিই সে-দৃশ্যের তুলনা হয় না। তিব্বতি গানও কিন্তু সুন্দর। আমরা এখন শ্রোতাদের শোনাবো তিব্বতের একটি গান। গানের নাম: 'আকাশের কাছে তিব্বত'। গানের কথা মোটামুটি এমন: আকাশ আগের মতো নীল এবং রাস্তাও আগের মতো বিস্তৃত/ কত আশা-আকাঙ্খা, কত অপেক্ষা/ সব পাহাড়ের মধ্যে হারিয়ে গেছে/ গান আগের মতো মিষ্টি, প্রার্থনাচক্রও চলছে আগের মতোই/ কত ধর্মভাব, কত প্রার্থনা/ সবই দেখা যাবে নীল রঙয়ের পবিত্র হ্রদে...
আলিম: গানটি কিন্তু আসলেই সুন্দর। গান শুনে শ্রোতাদের মনেও নিশ্চয়ই চনমনে একটা ভাব চলে এসেছে। সে যাক, শীতকালে তিব্বতের পর্যটন প্রকল্প শুরুর পর দেশ-বিদেশের পর্যটকদের দৃষ্টি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। লাসা পোতালা পর্যটন সংস্কৃতি গ্রুপ লিমিডেট কোম্পানির উপ ম্যানেজার বাও ওয়েই মিং জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিয়ে নিরাপদে বাসগুলো যাতে চলাচল করতে পারে, সে লক্ষ্যে তারা রাস্তাকে তুষারমুক্ত করার গাড়ি কিনেছেন। এখন প্রবল তুষারপাতের পরও পর্যটকরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে পারেন।
সুবর্ণা: জানা গেছে, তিব্বতে শীতকালের পর্যটন মৌসুম শুরু হয় ১৫ অক্টোবর; চলে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। অর্থাত এবারের শীতের পর্যটন মৌসুম চলবে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। অবশ্য গ্রীষ্মকালে তিব্বতে অত্যন্ত চমত্কার পরিবেশ থাকে। কিন্তু শীতকালের তীব্র সূর্যালোক, পবিত্র তুষার পাহাড়, বিভিন্ন মজার মজার উত্সবও কম আকর্ষণীয় নয়। তা ছাড়া, শীতকালে বৃষ্টি পড়ে না এবং কুয়াশাও খুব একটা পড়ে না---ফলে, পর্যটকরা অনেক দূর পর্যন্ত প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পারেন। শীতকালে তিব্বতে উত্তর চীনের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি থাকে। এসম সময় পর্যটকরা পোতালা প্রাসাদ, চুমুলাংমা শৃংগের দৃশ্য এবং ইয়ালুজাংবু নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন।
আলিম: সুবর্ণা, আপনি পবিত্র তুষার পাহাড়ের কথা বললেন। পবিত্র তুষার পাহাড় সম্পর্কে একটু খুলে বলবেন কি?
সুবর্ণা: আলিম ভাই, তিব্বতের তুষার পাহাড় এক অসাধারণ সুন্দর জায়গা।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |