Web bengali.cri.cn   
পেইচিংয়ের শীতকাল
  2013-01-09 18:28:01  cri

সুবর্ণা: শুনেছি চলতি বছরের নববর্ষের প্রথম দিন শিছাহাই স্কেটিং এলাকা রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা ছিল। অসংখ্য লোক সেদিন সেখানে স্কেটিং করার পর বন্ধুদের সঙ্গে হৌহাই পাব স্ট্রিটে গিয়ে কফি দোকান বা পাবে বসেছে; নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে পাবের দেয়ালে উইশিং লিস্ট বা কার্ড লিখেছে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে পেইচিংয়ের অনেক যুবক বন্ধুদের সঙ্গে হৌহাই পাবে বা নানলুওকুসিয়াংয়ে বসে নববর্ষের কাউন্ট ডাউন করেছে। পাশাপাশি তারা পাবের সংগীত অনুষ্ঠান বা অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী উপভোগ করেছে। নববর্ষ উদযাপনের এটি একটি ভালো পদ্ধতি।

আলিম: সুবর্ণা, আপনি নানলুকুসিয়াং-এর কথা বললেন। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে আমি সিআরআই বাংলা বিভাগের আমার সহকর্মীদের নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম; সেখানে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ 'সান্তুর'-এ আমরা একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছি। আপনি তখন হংকং বেড়াতে গিয়েছিলেন বলে আপনার সঙ্গ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। নানলুকুসিয়াং পেইচিং-য়ের ঐতিহ্যবাহী এলাকা; প্রতিবছর বহু পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। সে যাক, আপনি শিছাহাই-এ স্কেটিং-এর কথা বলছিলেন। আপনি কি স্কেটিং করতে পারেন?

সুবর্ণা: আমি ছোটবেলায় বাবা-মায়ের হাত ধরে শিছাহাই-এ গিয়েছিলাম। বাবা বরফের ওপর দিয়ে হাঁটছেন, আর আমি ছোট্ট একটি গাড়িতে বসে আছি---দৃশ্যটা এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে। আর হ্যা, স্কেটিং আমার জন্য সবসময় ছিল একটি কঠিন কাজ। অবশ্য আজকাল আমি স্কি শিখতে শুরু করেছি; তুষারের ওপর স্কি করার আনন্দই আলাদা। আলিম ভাই, আপনি কি কখনো স্কি বা স্কেটিং করেছেন?

আলিম: না, সুবর্ণা, আমি কখনো স্কেটিং বা স্কি করিনি। তবে, সুযোগ পেলেই আমি তুষারের ওপর দিয়ে ছুটে চলার মজা নিতে অবশ্যই চেষ্টা করবো। টেলিভিশনের পর্দায় স্কেটিং ও স্কি করার দৃশ্য আমি বহুবার দেখেছি।

সুবর্ণা: পেইচিংয়ের উপকন্ঠ এলাকায় এখন কয়েকটি বড় স্কি ফিল্ড হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় হল নানশান স্কি ফিল্ড। এটি উত্তর পেইচিংয়ের মিইউয়ুন এলাকায় অবস্থিত। পেইচিংয়ের শহরাঞ্চল থেকে নানশানতে পৌঁছাতে প্রায় দেড় ঘন্টা লাগে। এখানে স্কি, গ্লাইড ও পানি স্কিসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। এখানে চীনের একমাত্র মেলো পার্ক অবস্থিত। পার্কের মধ্যে ডাইভিং প্লাটফর্ম, ইউ আকৃতির গ্রুভ ইত্যাদি আছে। এখানে পেশাদার স্কি খেলোয়াড়রা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেন। এ ছাড়া, নানশান স্কি ফিল্ডে কয়েকটি কেবল লাইনও নির্মিত হয়েছে। লোকজন কেবল গাড়িতে বসে বিভিন্ন স্কি রোডে যায়।

আলিম: আশা করি, খুব তাড়াতাড়িই আমি সেখানে যাবার সুযোগ পাবো। তবে, এখন একটি গান শুনে নিই। গানের নাম 'শিছাহাই'। গানটি গেয়েছেন চীনের বিখ্যাত গায়ক লি চিয়ান। তিনি নিজেই গানটির রচয়িতা। গানের কথাগুলো বাংলায় অনুবাদ করলে মোটামুটি এমন দাঁড়াবে: শিছাহাই-এর কাছাকাছি একটি রাস্তায় আমার বাসা ছিল/ সেখানে সোনালী রঙয়ের মেইডেনহেয়ার গাছের পাতা দেখা যায়/ নদীর পাশে বাতি জ্বলে/ হ্রদের মাঝখানটি বরাবরের মতোই অন্ধকার/ আকাশে নেই চাঁদের আলো/ ছোট জাহাজ থেকে ভেসে আসে পরিচিত গানের সুর...

সুবর্ণা: আলিম ভাই, আপনি জানেন, শীতকালে পেইচিং অর্থাত্ উত্তর চীনে আরেকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অতি জনপ্রিয়, তা হল বরফ বাতি উত্সব। পেইচিংয়ের উপকন্ঠ এলাকার ইয়ানছিং লোংছিংসিয়া বরফ বাতি উত্সব অতি বিখ্যাত। মিস্ত্রীরা বিশাল বরফের টুকরো কেটে নানা আকারের ভাষ্কর্য্য ও মূর্তি তৈরী করে। মানুষ এসব ভাস্কর্য ও মূর্তির সৌন্দর্য প্রাণভরে উপভোগ করে। রাতে বরফ ভাষ্কর্য্য ও মূর্তির মধ্যে চমত্কার কৌশলে স্থাপিত সুন্দর সুন্দর বাতি জ্বলে; দূর থেকে সে এক অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য।

আলিম: আমি এখনো এ-উত্সব দেখার সুযোগ পাইনি। তবে শুনেছি, প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে লোংছিংসিয়া বরফ বাতি উত্সব শুরু হয় এবং সাধারণত এ উত্সব এক মাস ধরে চল। শনিবার ও রোববার লোকজন পেইচিং শহরের ভেতরে ছিয়ান মেন ও আনতিংমেন সাবওয়ে স্টেশন থেকে একটি পর্যটন বাস ধরে সরাসরি সেখানে পৌঁছাতে পারে। একেক বছর একেকটি থিম-এর ওপর বরফ বাতি উত্সব পালিত হয়। তবে, প্রতি বছরই ৭০ মিটার উচুঁ বাঁধের ওপর থেকে পড়া বরফের জলপ্রপাত থাকবেই থাকবে। বরফ ফুল, বরফ জলপ্রপাত ইত্যাদি দর্শকদের মন কেড়ে নেয়। আমি অধির আগ্রহে সে উত্সব দেখার জন্য অপেক্ষা করছি।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040