Web bengali.cri.cn   
পেইচিংয়ের শীতকাল
  2013-01-09 18:28:01  cri
২০১২ সালের বিদায়ের পর এসেছে নতুন বছর ২০১৩। নতুন বছরে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে পড়েছে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। রাজধানী পেইচিংও এর ব্যতিক্রম নয়। বিগত দশ বছরে রাজধানীতে এতো শীত পড়েনি। পেইচিংয়ে এই শীত থাকবে মোটামুটি তিন মাস। আজকের অনুষ্ঠানের বিষয় হচ্ছে পেইচিংয়ের শীত। চলুন আমরা এই প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বেড়িয়ে পড়ি পেইচিংয়ের পথে-ঘাটে এবং বিভিন্ন পর্যটন স্থানে।

আলিম: সুবর্ণা, এখন বাংলাদেশেও শীতকাল। শুনেছি সেখানেও এবার বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। তবে সে-ঠাণ্ডা পেইচিংয়ের মতো অতোটা হাড়-কাঁপানো নয়। সত্যি বলতে কি, মাইনাসের নিচের তাপমাত্রায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। আমি আমেরিকা ও ইউরোপ ঘুরেছি গরমকালে। তাই তুষার পড়ার দৃশ্যও আমার এতোদিন দেখা হয়নি। কিন্তু এবার পেইচিংয়ে এসে আমি অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা যেমন দারুণ, তেমনি দারুণ ছিল আমার জীবনে প্রথম তুষারপাত দেখা এবং তুষারের মধ্য দিয়ে হেঁটে বেড়ানো। আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি। বিশেষ করে একটি কথা না-বললেই নয়। প্রতিটি তুষারের ছয়টি পাখা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি; স্রষ্টার অপূর্ব সৃষ্টির কথা ভেবে কৃতজ্ঞ হয়েছি। আমার মনে আছে, পেইচিংয়ের প্রথম তুষারপাতের মধ্য দিয়ে আমি এবং আমার স্ত্রী যখন হাটছিলাম, তখন আপনি আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং আপনিই তুষারের ছয়টি পাখার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আচ্ছা, আপনি কি তুষারের এই আকৃতি সম্পর্কে শ্রোতাদের আরোকিছু জানাবেন?

সুবর্ণা: নিশ্চয়ই জানাবো আলিম ভাই। .....তবে, পেইচিংয়ের শীতকাল একসময় আমার জন্য কষ্টকর ছিল। আমার ছোটবেলায় শীতকালে আরো বেশি ঠাণ্ডা পড়তো। আমার ঠাণ্ডায় এলার্জি ছিল; বাইরে বেরুলে খুব একটা মজা পেতাম না। বড় হবার পর অবশ্য শীতকাল সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা পরিবর্তন হয়েছে। আজকাল অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পেইচিংয়ে আগের মতো শীত পড়ে না এবং শীতের মধ্যেও কিছু মজার স্থানে বেড়াতে যেতে পারছি। যেমন পেইচিং শিছাহাই স্কেটিং রিংক। এর কাছাকাছি এলাকা হল পেইচিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিখ্যাত পাব এলাকা হৌহাই। শিছাহাই স্কেটিং রিংকের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের। পুরনো পেইচিংয়ের অধিবাসীরা শীতকালে এখানে স্কেটিং করতে বেশ পছন্দ করেন। বিশেষ করে নববর্ষের রাতে সুন্দর বাতির আলোতে সমতল বরফের উপর স্কেটিং করা খুবই মজার।

আলিম: 'শিছাহাই' চীনা শব্দ। এর অর্থ 'দশ মন্দিরের কাছে অবস্থিত হ্রদ'। এই হ্রদ পুরনো পেইচিং শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এর আশেপাশে ১০টি বৌদ্ধ মন্দির আছে। প্রাচীনকালে চীনের ছিং রাজবংশ আমল থেকেই এ-জায়গাটি ভ্রমণকারীদের প্রিয়। গ্রীষ্মকালে এখানকার ভিলৌ গাছ ও শাপলা ফুল ছিং রাজবংশের পুরনো স্থাপত্যের সাথে মিলে-মিশে এক সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা করে। বস্তুত এ-স্থানটি পেইচিংয়ের একটি বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র। শীতকালে গোটা হ্রদের উপরিভাগ বরফে পরিণত হয় এবং লোকজন এখানে মজা করে স্কেটিং করে।

সুবর্ণা: শিছাহাই সম্পর্কেতো অনেককিছু জানা হলো। এবার শ্রোতাবন্ধুদের একটি গান শোনালে কেমন হয়? আলিম ভাই, আপনিও নিশ্চয়ই গানটি পছন্দ করবেন। গানটির নাম 'শীতকাল আসছে'।

আলিম: হ্যা, গানের কথাগুলো ভারি সুন্দর। গানটি বাজানোর আগে আমি শ্রোতাদের এর কথাগুলো জানিয়ে দিচ্ছি: পাতা হলুদ হয়েছে, ঝড়ে পড়বে তাড়াতাড়ি, হারিয়ে যাবে বাতাসের মধ্যে /সূর্য্য ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, সে এখন ঘুমিয়ে পড়বে; জেগে রইবে কেবল চাঁদ/ অপেক্ষা এবার ভোরের জন্য ....


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040