Web bengali.cri.cn   
ম্যাকাও: চীনের বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা
  2013-01-04 19:06:36  cri

সুবর্ণা: গানটিতে মাকে মন্দিরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাস্তবিকই মাকে মন্দির ম্যাকাওয়ের অন্যতম দর্শনীয় একটি স্থান। আগে বলেছি, ম্যাকাও ছিল মূলত এটি জেলে-অধ্যুষিত এলাকা। সে-সময় স্থানীয় লোকেরা বিশ্বাস করতো যে, মাজু হচ্ছেন সমুদ্রের দেবী। তাকে সন্তুষ্ট রাখতেই ১৪৮৮ সালে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এ-মন্দির নির্মিত হওয়ার পর স্থানীয় জেলেরা সবসময় এখানে এসে দেবীর উদ্দেশ্যে পুজো দিত এবং আগড়বাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করতো। কথিত আছে, একদিন একটি মাছ ধরার জাহাজ নিয়ে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গেল। আবহাওয়া ছিল অনুকূল। কিন্ত হঠাত ঝড়-তুফান শুরু হয়ে গেল। জেলেরা পড়লো মহা বিপদে। ঠিক সেসময় একটি মেয়ে এসে ঝড়-তুফান থামিয়ে দিল। অবশেষে জাহাজটি ভালোভাবেই তীরে এসে পৌঁছালো। জেলেরা দেখলো, সেই মেয়েটি জাহাজ থেকে নেমে সোনালি আলোয় হারিয়ে গেল। মেয়েটি ঠিক যে-স্থান থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, সে-স্থানেই স্থানীয়রা নির্মাণ করলো মাকে মন্দির।

আলিম: প্রিয় বন্ধুরা, মাকে মন্দিরের তথ্য জানার পর এখন আবারো গানের পালা। গানের নাম 'ম্যাকাওয়ের লোকসংগীত'। গানের কথাগুলো এমন: পূর্ব দিকে সমুদ্র, পশ্চিম দিকেও সমুদ্র/ ম্যাকাও অবস্থিত সমুদ্রের মধ্যে/ বাতাস আগের কথা জিজ্ঞেস করে এবং ঢেউ প্রকাশ করে মনের দুঃখ/ ৪০০ বছর ধরে ম্যাকাও জন্মস্থান থেকে দূরে/ তাসানবা তোরণ, মাকে মন্দির, শাপলা ফুল নানা জায়গায় ফোটে/ লোকদের মুখে দেখা দেয় হাসি/ ১৯৯৯ সালে ম্যাকাও চীনের কোলে ফিরে আসে...

সুবর্ণা: ম্যাকাও-য়ের পূর্ব দিকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে হংকং অবস্থিত। উত্তরে ম্যাকাও চীনের চুহাই শহরের সাথে সংলগ্ন। ম্যাকাও-এর এ-স্থানে অবস্থিত বিশ্বের চারটি বৃহত্তম ক্যাসিনোর একটি। ক্যাসিনোটির নাম 'লিসবো ক্যাসিনো'। ক্যাসিনোটির স্থাপত্য খুবই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। লিসবো ক্যাসিনো দুটি ভবন নিয়ে গঠিত; একটি পুরনো এবং অন্যটি নতুন। পুরনো লিসবো ক্যাসিনো বাইরে থেকে দেখলে একটি বড় আকারের খাঁচার মতো মনে হয়। ক্যাসিনোর মালিক হো হুং শেং হংকং ও ম্যাকাওয়ে খুবই বিখ্যাত একজন ধনী ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, 'ক্যাসিনোর ব্যবসা করলেও, আমি কখনো জুয়া খেলি না। জুয়ার নেশায় আসক্ত হয়ে গেলে, জীবনে আর অন্য কাজ করা যায় না। তাই আমি ইচ্ছে করেই ক্যাসিনোটি খাঁচার আকৃতিতে তৈরী করেছি; যাতে সবাই জুয়া সম্পর্কে আমার মনোভাব উপলব্ধি করতে পারে।"

আলিম: আপনিতো নিশ্চিয়ই ক্যাসিনোর ভেতরে গিয়েছিলেন। কেমন লেগেছে?

সুবর্ণা: আমি ভেতরে প্রবেশ করেছিলাম; তবে জুয়া খেলিনি (হাসি)। হলিউডের ছবিতে যেমন দেখা যায়, ক্যাসিনোর ভেতরটা ঠিক তেমনই। জুয়া খেলার বিচিত্র ধরণের সব মেশিন দেখে আমি রীতিমতো অবাক হয়েছি। আমি ক্যাসিনোর বাইরের অনেক ছবি তুলেছি। ক্যাসিনোর বাইরের দিকটা রাতের বেলা আলোয় ঝলমল করে। দেখতে দারুণ সুন্দর লাগে।

আলিম: বেশ বুঝতে পারছি, আপনি ম্যাকাওয়ে অনেক ঘোরাঘুরি করেছেন। তা ঘুরতে ঘুরতে যখন ক্লান্ত হয়েছেন, হয়েছেন ক্ষুধার্ত, তখন কী খেয়েছেন? সেখানকার স্থানীয় খাবার কেমন?

সুবর্ণা: ম্যাকাওয়ের এক ধরনের মিষ্টি বিশ্ব বিখ্যাত। এর নাম 'পর্তুগিজ ডিম টার্ট'। এটি খেতে খুবই মিষ্টি, সুগন্ধময় ও নরম। খেতে ভারী মজা। তা ছাড়া, ম্যাকাওয়ের অলিগলির দোকানগুলোতে নানা ধরনের মিষ্টি বিস্কুট পাওয়া যায়। এগুলো ক্যানটুনিস স্বাদের মিষ্টি। সেখানে বেড়াতে গেলে এই বিস্কুট আর মিষ্টি চেখে দেখতে অনুরোধ করবো। সত্যি বলছি, মজা পাবেন।

আলিম: পর্তুগিজ ডিম টার্ট বা মিষ্টি বিস্কুট খেতেতো আমাদের অপেক্ষা করতে হবে; কিন্তু একটি মিষ্টি গান শুনে নেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। হ্যা, বন্ধুরা, আবারো গান শোনার পালা। এবার আমরা যে-গানটি শুনবো সেটির নাম: 'ম্যাকাওয়ের গল্প'। চলুন গানটি শোনা যাক।

সুবর্ণা: শ্রোতাবন্ধুরা, দেখতে দেখতে আমাদের অনুষ্ঠানের সময় শেষ হয়ে এলো। তবে যাবার আগে, আমি একজন শ্রোতার চিঠি পড়ে শোনাতে চাই। বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজির জনাব এ এস ফয়সাল আহমেদ তার চিঠিতে লিখেছেন: 'চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান আমার খুব ভাল লাগে। অন্যান্য বেতারের অনুষ্ঠানও আমি শুনি। কিন্তু চীনের রেডিও অনুষ্ঠান কেন যেন একটু ব্যতিক্রম লাগে। তাই আমি ও আমার বন্ধুদের অনেকেই চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনি। একদিন না-শুনলে কেন যেন খারাপ লাগে। তবে পরের অনুষ্ঠান শুনলেই মন আবার ভালো হয়ে যা। বাংলাদেশের সব জেলা এমনকি বিভাগীয় শহর ঘুরে দেখাও আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আর চীনের কথাতো কল্পনাও করা যায় না। তবুও চীনের বেতারে যখন অনুষ্ঠান শুনি, তখন মনে হয় আমি চীনে আছি। শুধু তাই না, আমি যেন চীনের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করছি। যাহোক, রেডিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীনের গুরুত্বর্পূর্ণ দর্শনীয় স্থানগুলো সম্বন্ধে ভাল ধারণা পাওয়া যায়।

আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন চীনের অনুষ্ঠান শুনে যাবো।

আলিম: বন্ধু ফয়সাল, আপনার চিঠির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল আয়োজন। আমাদের অনুষ্ঠান যখন আপনাদের ভালো লাগে, তখন তা জেনে আমরা আরো ভালো অনুষ্ঠান তৈরী করতে উত্সাহিত হই। আমরা আপনাদের প্রতিক্রিয়া ও মতামত জানার জন্য অপেক্ষায় থাকি। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

সুবর্ণা: শ্রোতাবন্ধুরা, আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপানাদের যে-কোনো মতামত বা পরামর্শ জানাতে আমাদের কাছে লিখুন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা ben@cri.com.cn সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম)


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040