Web bengali.cri.cn   
ম্যাকাও: চীনের বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা
  2013-01-04 19:06:36  cri

আলিম: এইমাত্র আমরা যে-গানটি শুনলাম, সে গানটিতে 'ম্যাকাও' তাকে 'আওমেন' বলে ডাকার জন্য বলছে। 'আওমেন' হচ্ছে ম্যাকাও-এর চীনা নাম। তবে, ষোড়শ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে পর্তুগিজ উপনিবেশে পরিণত হবার আগে, ম্যাকাও পরিচিত ছিল 'হাওচিং' বা 'চিংহাই' নামে। এর অর্থ 'আয়না সমুদ্র'। ধারণা করা হয় যে, ম্যাকাও নামটি এসেছে 'আ-মা মন্দিরের' নাম থেকে। চীনা ম্যান্ডারিন ভাষায় 'আ-মা মন্দির'-কে বলে 'মাকে মিয়াও'। ১৪৪৮ সালে জেলেদের দেবী 'মাতসু'-কে উত্সর্গ করার জন্য এ-মন্দির নির্মিত হয়েছিল। বলা হয়, পর্তুগিজ নাবিকরা ওই মন্দিরের কাছাকাছি সমুদ্র উপকূলে নেমে জায়গাটির নাম জিঙ্গেস করেছিল। স্থানীয়রা তখন উত্তরে বলেছিল: এ-জায়গার নাম 'মাকে'। পর্তুগিজরা তখন উপদ্বীপটির নাম দেয় 'ম্যাকাও'। এখানে আরেকটি তথ্য শ্রোতাদের জানাতে চাই। চীনের প্রাচীন ইতিহাস অনুসারে, রাজা ছিনশিহুয়াং যখন চীন একীকরণ করেন, তখন ম্যাকাও আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছিল। প্রাচীনকালে ম্যাকাও-য়ের বাসিন্দারা মূলত কৃষিকাজ করতো বা মাছ ধরে জীবিকা অর্জন করতো। তখন ম্যাকাও ছিল মূলত জেলেদের ভূমি।

সুবর্ণা: তবে আধুনিক কালে এসে ম্যাকাও অনেক বদলে গেছে। বর্তমানে এটি বিশ্বের একটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন শহর। এখানকার তাসানবা তোরণ, মাকে মন্দির, ভিউ টাওয়ার, সোনালী শাপলা চত্বর, ম্যাকাও গভর্নর ভবন, জেলে বন্দর, লিসবো কাসিনো, পোস্ট অফিস জাদুঘর এবং ক্যাথলিক ধর্মের বিভিন্ন চার্চসহ নানা দর্শনীয় স্থান পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে। এসব স্থানের মধ্যে তাসানবা তোরণ আবার সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয়। ম্যাকাও আসলে যে-কোনো পর্যটক এ-তোরণ পরিদর্শনে আসবেনই আসবেন। তাসানবা তোরণের ইংরেজী নাম 'রুইনস্ অব সেইন্ট পল'। এটি ১৫৮০ সালে নির্মিত সেইন্ট পল চার্চের সামনের অংশ। এখানে একটি দারুণ সুন্দর গোথিক স্টাইলের স্থাপত্য ছিল। কিন্তু ১৮৫৩ সালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চার্চটি বিধ্বংস্ত হলে সেই স্থাপত্যও বিনষ্ট হয়। এখন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চার্চের একটি তোরণ।

আলিম: শুনেছি, ২৬ মিটার উচ্চতার তাসানবা তোরণ একটি দারুণ রোমান্টিক জায়গা। অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা ও বর-কণে নাকি এখানে বেড়াতে আসেন। আমাদেরকে ব্যাপারটা একটু খুলে বলুন। আপনার কেমন লেগেছে জায়গাটি?

সুবর্ণা: আমি মনে করি ম্যাকাও বেড়াতে গেলে আপনার উচিত হবে অন্তত একবারের জন্য হলেও তাসানবা তোরণ দেখে আসা। তোরণটি পর্যন্ত পৌঁছাতে আপনাকে যে-সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হবে, সে-সিঁড়িতে ৬৮টি ধাপ আছে। সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় মনে এক পবিত্র অনুভূতি জেগে ওঠে। সব মিলিয়ে চমত্কার এক পরিবশে। হ্যা, এই পরিবেশকে রোমান্টিক বলা যেতে পারে। সে-কারণেই সম্ভবত প্রেমিক-প্রেমিকারা একসঙ্গে এখানে আসেন এবং ছবি তোলেন। এখানে মাঝেমধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠানও হয়; বর-কণে বিয়ের ছবি তোলেন। রাতের বেলা তোরণ এলাকা নানা রংয়ের বাতিতে ঝলমল করে। দূর থেকে এ দৃশ্য দেখার মতো। তোরণের কাছাকাছি স্থানে একটি জায়গা আছে, সেখানে ম্যাকাওয়ের দর্শনীয় বিভিন্ন স্থানের ভিউকার্ড পাওয়া যায়। আমি সেখান থেকে কয়েক কার্ড কিনেছি এবং বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কাছে সেগুলো পাঠিয়েছি।

আলিম: আমি ইন্টারনেটে এই তোরণের ছবি দেখেছি। খুবই সুন্দর। আশা করি ভবিষ্যতে নিজের চোখে এটি দেখার সুযোগ পাবো। তবে, এখন তাসানবা তোরণ নিয়ে লেখা একটি গান শোনা যেতে পারে। গানটির নাম 'ম্যাকাওয়ের গান'। গানের কথাগুলোকে বাংলা করলে মোটামুটি এমন দাঁড়াবে: সোনালী আলোতে তাসানবা তোরণের পানে হাঁটি/ সেখানে ডেইজি, পিওনি ও সেইন্ট মারিয়ার মূর্তি খোদাই করা/ নীল আকাশ ও সবুজ সমুদ্র মিলেমিশে, পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের সংস্কৃতি এখানে মিলেমিশে একাকার/ ম্যাকাও বেড়াতে আসলে তোমাকে অবশ্যই মাকে মন্দির পরিদর্শন করতে হবে এবং উপভোগ করতে হবে পর্তুগিজ খাবার...


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040