Web bengali.cri.cn   
হাংচৌ: শহরতো নয়, যেন স্বর্গ
  2012-09-19 11:05:55  cri
 ক. হাংচৌ চীনের চেচিয়াং প্রদেশের রাজধানী। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্থানটি বিশ্বখ্যাত। হাংচৌ শহরের ইতিহাস ২২০০ বছর বা তারচেও পুরনো। প্রাচীনকাল থেকেই চীনে একটি কথা প্রচলিত আছে। আর তা হল: হাংচৌ শহর স্বর্গের মতো সুন্দর। ইতালির পর্যটক মার্কো পোলো একে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও সমৃদ্ধ শহর হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

খ. হাংচৌ শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ দারুণ সুন্দর। নদী, হ্রদ, পাহাড় ও জলাভূমি—এসব নিয়ে এ-শহর। এখানে পাহাড়ের পরিমাণ মোট আয়তনের ৬৫.৫ শতাংশ। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ কৃত্রিম খাল-- চিংহাং শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। প্রাচীনকাল থেকেই পেইচিং থেকে হাংচৌ পর্যন্ত এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। তা ছাড়া, বিশ্ব বিখ্যাত ছিয়ানথাং নদীও শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। হাংচৌ শহরের পশ্চিম, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল—সবই পাহাড়াঞ্চল। এর উত্তর-পূর্বাঞ্চল সমতলভূমি, সেখানে হ্রদ বেশি এবং বিভিন্ন ধরনের খাবারের উত্পাদন প্রচুর। হাংচৌ শহর 'মাছ চাল জন্মস্থান', 'রেশমকেন্দ্র' ও 'মানুষের স্বর্গ' হিসেবে আখ্যায়িত। আমরা চলতি সপ্তাহ থেকে হাংচৌ শহরের বিভিন্ন সুন্দর পর্যটন স্থান নিয়ে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচার করবো।

ক. হ্যাঁ, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার আগে আমরা শ্রোতাবন্ধুদের শোনাবো হাংচৌ শহরকে নিয়ে রচিত একটি সুন্দর গান। গানের নাম 'বসন্তকালের সিহু হ্রদ'। সিহু হ্রদ হাংচৌ-এর বিখ্যাত পর্যটন স্থানগুলোর অন্যতম। এস্থান সম্পর্কে অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প ও কাহিনী প্রচলিত আছে। তো, যে-গানটি শ্রোতারা এখন শুনবেন, সেটির কথাগুলো মোটামুটি এমন: "বসন্তকালের বাতাসে সোয়ালো পাখি ফিরে আসে; সিহু হ্রদের পাশে পিচ ফুলও ফুটেছে। তুমি নৌকায় বসে দাঁড় দোলাও, শান্ত সিহু হ্রদও দাঁড়ের সাথে দোলে/ বসন্তের বাতাস নরম ও গরম, উইলো গাছের শাখা সুন্দরীর মতো নড়ায়/ দু'জনের চোখ পরস্পরকে দেখতে অনেক মিষ্টি লাগে....

খ. গানের কথা শুনে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, এটি একটি রোমেন্টিক গান। প্রিয় শ্রোতা, চলুন এখন শোনা যাক হাংচৌ শহরের সুন্দর পর্যটন স্থান সম্পর্কে। শুরুতেই 'লিংইন মন্দির'  প্রসঙ্গ। চীনা ভাষায় এ-নামের অর্থ হচ্ছে: দেবতা গোপন থাকার স্থান। হাংচৌ শহরের উপকন্ঠের পাহাড়াঞ্চল অবস্থিত এ-মন্দির সম্পর্কে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। প্রাচীনকালে চীনের থাং রাজবংশ আমলে বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক প্রচলন ছিল। কথিত আছে, তখন ভারতের একজন সন্ন্যাসী হাংচৌ সফরের সময় 'লিংইন মন্দির'-সংলগ্ন পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য দেখে বলে উঠেছিলেন: "এ-যেন দেবতাদের লুকিয়ে থাকার জায়গা।" এ-কারণেই নাকি 'লিংইন মন্দির' নির্মাণ করা হয়েছে।

ক. এ-মন্দির সম্পর্কে প্রচলিত আরেক কাহিনীতে বলা হয়েছে: ১৪০০ বছরেরও আগে একজন সন্ন্যাসী বিচিয়াং পাহাড়ের কাছে বাস করতেন। একদিন তিনি বনে প্রবেশ করে কাঠ কাটেন এবং প্রচণ্ড গরমে অস্থির হয়ে গায়ের কাপড় খুলে গাছের শাখায় ঝুলিয়ে রাখেন। ঠিক তখন, একটি বন্য হাঁস হঠাত্ তাঁর কাছাকাছি চলে আসে এবং গাছের শাখা থেকে তার কাপড় নিয়ে দক্ষিণ দিকে উড়ে যায়। সন্ন্যাসী তার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে বনের মধ্যে একটি উন্মুক্ত মাঠে চলে আসেন। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য ছিল দারুণ সুন্দর। খোলা মাঠ দেখে মনে হয় একটি বড় ঈগল মাটিতে বসে আছে। সন্ন্যাসী বিষয়টিকে দেবতার ইংগিত বলে মনে করে, মাঠটিতে একটি মন্দির নির্মাণ করলেন। তখন থেকেই এ-মন্দিরে আগত সন্ন্যাসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040