|
'লিইয়োলি'হল বু ই জাতির কথা নিয়ে নির্মিত নাটক ।চীনের আনদা গ্রুপের ৭ কোটিরও বেশি ব্যয়ে নির্মিত বৃহত্তম উষ্ণপ্রস্রবণ প্রদর্শনী মঞ্চে বু ই জাতির নাচ, গান, অপেরাসহ বিভিন্ন প্রাচীন শিল্পের ধারণাসম্পন্ন এবং আধুনিক শিল্পের মিশ্রণে নির্মিত নাটক 'লিইয়োলি' এখন প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ নাটকে মনোমুগ্ধকর কন্ঠে বু ই জাতির পাহাড়ের গান, লাংশাও ও মদ গান গাওয়ার মাধ্যমে বু ই জাতির লোকজনের পরিশ্রম ও বুদ্ধির প্রশংসা করা হয়েছে এবং বু ই জাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রীতিনীতি এবং প্রাণচঞ্চলতা ও পূর্বপুরুষের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্য উত্তরাধিকারের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। এ প্রদর্শনী মঞ্চ স্থানীয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক দৃশ্য ছাড়াও আরেকটি সাংস্কৃতিক-সম্পদ সমৃদ্ধ দৃশ্যে পরিণত হয়েছে।
এ নাটক সম্পর্কে কুইচৌ আনদা গ্রুপের সিইও ই চিয়াং পিং বলেছেন, "আমরা ভাবছি বু ই জাতির জীবনযাপনের প্রতিফলন ঘটানো 'লিইয়োলি' নামক এ নাটকটি দীর্ঘদিন ধরে মঞ্চস্থ করবো। এভাবে আমরা ভালভাবে পর্যটকদের কাছে বু ই জাতির উন্নয়ন ও বংশবৃদ্ধির ইতিহাস তুলে ধরা যায় এবং পর্যটকদের মনে আমাদের জাতির উন্নয়নের ইতিহাস আরও গভীর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।"
ওয়ানফেংলিন এলাকার নাহুই গ্রামের গ্রামবাসী থান তা ওয়েন কুইচৌ প্রদেশের ষষ্ঠ পর্যটন উন্নয়ন সম্মেলন আয়োজনের উপলক্ষ্যে নাহুই গ্রামে একটি বু ই জাতির বস্ত্রবয়ন চর্চা স্টেডিয়াম স্থাপন করেছেন। এই ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রবয়ন প্রযুক্তি হল স্থানীয় অঞ্চলের বু ই জাতির মানুষদের পূর্বপুরুষের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে অর্জন করা হস্তশিল্পের কলাকৌশল। বু ই জাতির এলাকায় বিভিন্ন পরিবারে বস্ত্রবয়ন ও রঞ্জন পাত্র দেখা যায়। বু ই জাতির মহিলারা সবাই বস্ত্রবয়ন ও সূচিকর্মে দক্ষ । বয়ন করা কাপড় হল বু ই জাতির পোশাক, বিছানার চাদর ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রধান কাঁচামাল।
বু ই জাতির বস্ত্রবয়ন কৌশলের ধারণা ভিন্ন রকম। তাদের তৈরি কাপড় ঐতিহ্যবাহী ও সুন্দর রঙয়ের। এর চমত্কার বুননকৌশল ও বৈশিষ্ট্যময় শিল্প অনেক বিখ্যাত। বু ই জাতির লোকদের তৈরি কাপড়ের নকশা সুন্দর, নানা রঙ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। দূর থেকে দেখলে ছবির আকার অতি চমত্কার মনে হয়। বু ই জাতির বেসরকারী বস্ত্র শিল্পীরা এখন এ কৌশল চীনের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অবৈষয়িক সংস্কৃতি ঐতিহ্যের সংরক্ষণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বু ই জাতির ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রবয়ন চর্চা স্টেডিয়াম চালু করার পর পর্যটকদের মধ্যে তা এখন অতি জনপ্রিয়। চিয়াংসু প্রদেশ থেকে আসা পর্যটক থিয়ান কুই লান বস্ত্রবয়নের কৌশল চর্চা করার পর বলেছেন, "খুবই মজা লাগে। তবে বস্ত্রবয়ন একটি সহজ ব্যাপার নয়।"
বর্তমানে কুইচৌ প্রদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন শিল্পে খাওয়া, থাকা, যাত্রা, পর্যটন, কেনা ও খেলাসহ ৬টি প্রধান বিষয়যোগ্য পর্যটন শিল্পের স্কেল গড়ে তুলা হয়েছে। আরও জনপ্রিয় ও বিখ্যাত হওয়ার পর পর্যটন এজেন্সির ব্যবসাও ধীরে ধীরে উন্নত হয়েছে। হুয়ালোং পর্যটন এজেন্সির জেনারেল ম্যানেজার রান সিং পু বলেছেন, "আমাদের পর্যটন এজেন্সির কর্মীরা কুয়াংতুং প্রদেশের মাওমিং শহর, কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নাননিং শহর এবং ইউয়ুন্নান প্রদেশের খুমিং শহর ও ছুচিং শহর থেকে ৪০০জনেরও বেশি পর্যটককে অভ্যর্থনা করেছে। পর্যটকরা সিংই পর্যটন এলাকার প্রশংসা করেছেন। তাছাড়া, আমাদের পর্যটন উন্নয়ন সম্মেলন সিংই পর্যটন এলাকার পরিচয়ের বেলায় যেন এক নামকার্ডের মতো। এ সম্মেলন আয়োজনের পর সিংই অনেক বিখ্যাত হয়েছে এবং এখানে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।"
গত বছরের অক্টোবর মাসে চীনের জাতীয় দিবসের উত্সবমুখর সপ্তাহ চলাকালে, কুইচৌ প্রদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা ১৬ লাখ ১৯ হাজার ৯ শো পার্সনটাইমে দাঁড়িয়েছে, পর্যটনের আয় ৬৩.৭ কোটি ইউয়ান হয়েছে। এর মধ্যে ওয়ানফেং হ্রদ-ওয়ানফেংলিন পর্যটন এলাকার পর্যকের সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি পার্সনটাইমসে দাঁড়িয়েছে, শুয়াংরু পাহাড়সহ বিভিন্ন দৃশ্যের কারণে কুইচৌ প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল নতুন পর্যটন স্থানে পরিণত হয়েছে।(সুবর্ণা/শান্তা)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |