বিংশ শতাব্দীর বিশ্ববিখ্যাত যুদ্ধ আলোচিত্রশিল্পী রবার্ট কাপা মার্কিন 'লাইফ' ম্যাগাজিনে তাইএরচুয়াং সম্পর্কে বলেন, "মানবজাতির ইতিহাসে যুদ্ধের কারণে বিখ্যাত জায়গা অনেক। যেমন ওয়াটারলু, ভারটান। আজ আরেকটি নাম যুক্ত হয়েছে, যার নাম তাইএরচুয়াং। যুদ্ধজয় পেইচিং-হাংচৌ খালের কাছে একটি ছোট জেলা তাইএরচুয়াংকে চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রামে পরিণত করে।"

প্রাচীনকালে চীনের ইতিহাস বইয়ে লিপিবদ্ধ ছিল তাইএরচুয়াং খাল মিং রাজবংশের ওয়ানলি আমলে নির্মিত। ছিং রাজবংশের ছিয়ানলোং আমলে এখানকার জীবনযাপন ছিল সুখী এবং ব্যবসায়ীদের সম্মিলনের একটি সমৃদ্ধ নগরে পরিণত হয়। তবে যুদ্ধের কারণে এ খালের পাশে সমৃদ্ধ নগর ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়।

দু হাজার আট সালে চাওচুয়াং শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ তাইএরচুয়াং পুরনো নগর পুনর্গঠনের কথা ঘোষণা করে। তখন প্রণালীর দুই তীরে শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন পরিস্থিতি প্রতিফলিত হয়। সে কারণে তাইএরচুয়াং পুরনো নগরের পুনর্গঠন কাজকে দুই তীরের আদান-প্রদান কেন্দ্র হিসেবে নির্মাণের ধারণা দাখিল করা হয়। এ সম্পর্কে চাওচুয়াং পৌর মেয়র ছেন ওয়েই বলেন, পুরনো নগরের পুনর্গঠন কাজ ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার ভিত্তিতে করা হচ্ছে। "কিভাবে ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখি? এটা হলো যুদ্ধের পর বিরাজমান ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ করা। যেমন পুরনো নগরের দেয়াল, পুরনো বাসভবন, পুরনো স্থাপত্য ইত্যাদি।"

তাছাড়া, ইতিহাসের ভিডিও, গ্রন্থ ও স্থানীয় প্রবীণদের স্মৃতির ভিত্তিতে বিধ্বংস পুরনো স্থাপত্যের ধারণা অনুযায়ী পুনর্গঠন করবো। মেয়র ছেন ওয়েই সংবাদদাতাদের নিয়ে তাইএরচুয়াং যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষের অন্যতম তিংচিচিয়ে গলিতে যান। যদিও ঘটনার পর ৭০ বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে, তবুও দেয়ালের গুলির গর্ত এখনও স্পষ্টভাবে দেখা যায়। "এ এলাকাটি হলো তখনকার সবচেয়ে তুমুল লড়াইয়ের অন্যতম এলাকা। এ গুলির ক্ষুদ্র গর্তাগুলো সবই যুদ্ধের সময় থেকে রয়েছে। এতে চীনা জাতির আত্মপ্রত্যয়ী চেতনা প্রতিফলিত হয়। আমরা নির্দিষ্টভাবে তা সংরক্ষণ করবো।"

এখানে হাত দিয়ে গুলির ক্ষুদ্র গর্তাবিশিষ্ট দেয়াল-পাথর স্পর্শ করলে ৩০ হাজার চীনা সৈন্যের সাহসী চেতনা অনুভব করা যায়।

পুরনো নগরে হেঁটে হেঁটে প্রাচীন মিং ও ছিং রাজবংশের স্থাপত্যের পাশে শতাধিক বছরের দোকান, যুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ও যুদ্ধের ছবি দেখলে বোঝা যায়, এ পুরনো নগরের কেমন মর্যাদা রয়েছে।