তিয়েই, সিয়াওলৌ ও চুছিয়ানের জটিল সম্পর্ক চীনের আকস্মিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। তাদের এ অবস্থায় জাপানী দখলদার, কুওমিনতাং শাসন, ১৯৪৯ সালের স্বাধীনতা, গণমুক্তি ফৌজের শহরে প্রবেশ এবং সর্বোপরি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পিকিং অপেরা সামন্ততান্ত্রিক হিসেবে আক্রান্ত হয়। ছিয়াওসি নামের পরিত্যাক্ত শিশুটি যে তিয়েইর দেয়া শিক্ষাদান পদ্ধতির প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল; তার সাথে কথা কাটাকাটির সময় মৌনতা পালন করতো, সে তিয়েইর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময়, ছিয়াওসি সরকারকে জানায় যে, ছিয়াওলৌ এ সরকারের বিরোধী। ছিয়াওলৌ সরকারবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং সে অনুতপ্ত হওয়ার সুযোগ চায়। অনেক চাপ ও ভয়ভীতির মধ্যে সে স্বীকার করে যে তৌজি জাপানীদের পক্ষে ছিল এবং ইউয়ান শিসিংয়ের সাথেও তার সম্পর্ক থাকতে পারে। ক্রুদ্ধ তৌজি বিপ্লবীদের বললো যে, চুছিয়ান ছিল একজন পতিতা। শিতৌ ভুলে গিয়েছিল এবং স্বীকার করলো যে সে পতিতাকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু সে দিব্যি খেয়ে বললো যে, পতিতাকে সে বিয়ে করেছিল ঠিকই কিন্তু তাকে কখনো ভালবাসেনি এবং আর কখনো তাকে দেখতেও চায় না। শিতৌর এ কথায় চুছিয়ান খুব কষ্ট পায় এবং অবশেষে আত্মহত্যা করে।
ছবিটির শুরু থেকেই এর এ্যাকশন চলে যায় শরীর চর্চ্চা কেন্দ্রের দৃশ্যের দিকে। তিয়েই ও ছিয়াওলৌ সম্পূর্ণ পোশাকেই বিখ্যাত 'ফেয়ারওয়েল মাই কনকিউবাইন' ছবিটিতে অভিনয় করেছেন, যা অভিনয় জীবনে তাদের আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে।
পুরস্কার:
'ফেয়ারওয়েল মাই কনকিউবাইন' নামের বিখ্যাত ছবিটি অনেকগুলো পুরস্কারে ভূষিত হয় এবং পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। ১৯৯৩ সালে ৬৬ তম একাডেমি এ্যাওয়ার্ডসে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে 'ফেয়ারওয়েল মাই কনকিউবাইন' ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার হিসেবে কু চ্যাংওয়েই মনোনীত হন। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ'র শ্রেষ্ঠ বিদেশি ছবি, ১৯৯৩ সালের কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নিউজিল্যান্ডের 'পামে দ্য' ওর-'দ্য পিয়ানো'র সঙ্গে যৌথ জেন চ্যাম্পিয়ন,এফআইপিইএসসিআই এ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, বৃটিশ একাডেমি এ্যাওয়ার্ড (BAFTA),১৯৯৩ শ্রেষ্ঠ ছবি(ইংরেজী ভাষা নয়), একই বছর মাইনিচি ফিল্ম কনকোর্স ও গোল্ডেন গ্লোব এ্যাওয়ার্ডসে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার ছবি, একই বছর লসএঞ্জেলেস চলচ্চিত্র সমালোচনা সংস্থা ও বোস্টন চলচ্চিত্র সমালোচনা সমিতি শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার ছবি, চীনের সাংস্কৃতিক সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চলচ্চিত্র সমিতির বিশেষ পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ সহযোগি অভিনেত্রী হিসেবে নিউইয়র্ক চলচ্চিত্র সমালোচনা সংস্থার পুরস্কার, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব দ্য আর্ট অব সিনেমাটোগ্রাফী(ক্যামেরাইমেজ)'র কু চ্যাংওয়েই সিলভার ফ্রোগ পুরস্কার লাভ ও কু চ্যাংওয়েই গোল্ডেন ফ্রোগ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। ১৯৯৪ সালে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ছবি হিসেবে সিজার এওয়ার্ড পুরস্কার এবং জাপানী চলচ্চিত্র সমালোচনা সমিতির বিদেশি ছবির শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে লেসলি ছুয়াং পুরস্কার পান। (মফিজুর রহমান)
1 2