|
১৫ সেপ্টেম্বর চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংক ভারতে মুম্বাই শাখা ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এটা ভারতের বাজারে একমাত্র চীনের মূলভূভাগের কোন ব্যাংকের শাখা ব্যাংক। মুম্বাই শাখা ব্যাংক খুললে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের পরিচালনার নেট আরো সুসম্পন্ন হয়েছে। এটা সে অঞ্চলের আর্থিক সেবার দক্ষতা সবচেয়ে শক্তিশালীর বিদেশী পুঁজি আর্থিক সংস্থার একটি।
চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংক ২০০৯ সাল থেকে ভারতে শাখা ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করে। চীনের ব্যাংক তত্ত্বাবধান কমিশনের অনুমোদন পাওয়ার পর ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করে। এ বছরের ১৬ মে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চূড়ান্তভাবে চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের মুম্বাই শাখা ব্যাংক খোলার সম্পূর্ণ ব্যবসায় লাইসেন্স দিয়েছে। মুম্বাই শাখা ব্যাংক হচ্ছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ ও করাচি শাখা ব্যাংকের পর দক্ষিণ এশিয়ায় এ ব্যাংকের তৃতীয় শাখা ব্যাংক।
ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত চাং ইয়ান, চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের গর্ভণর ইয়াং খাই শেং প্রমুখ প্রতিনিধিরা মুম্বাই শাখা ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মুম্বাই শাখা ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের গর্ভণর ইয়াং খাই শেং বলেন, শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংক ভারতে শাখা ব্যাংক খোলা থেকে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভবিষ্যত সম্ভাবনার ওপর তাদের আস্থা প্রমাণিত হয়েছে এবং চীন ভারতের বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের সেতু স্থাপনের সদিচ্ছা প্রকাশিত হয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার আর্থিক সেবা নেটের মধ্যে একটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে মুম্বাই শাখা ব্যাংক 'খরিদ্দারকে কেন্দ্র করে সেবার মধ্য দিয়ে মূল্য সৃষ্টি করা' এর পরিচালনার লক্ষ্য অনুসরণ করে নিরন্তরভাবে আর্থিক সেবার মান উন্নীত করবে, স্থানীয় সমাজে মিশে যাওয়া এবং স্থানীয় তত্ত্বাবধান বিভাগের স্বীকৃতি, খরিদ্দারদের প্রশংসা ও জনসাধারণের আস্থা পাওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে।
ভারতের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। বিশ্বের চারটি প্রাচীন সভ্যতা দেশের অন্যতম এবং দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ হিসেবে সে দেশের জনসংখ্যা পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। গোল্ডেন ব্রিকস দেশ হিসেবে গত পাঁচ বছরে ভারতের জি.ডি.পির গড় বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশেরও ওপর বজায় রেখেছে। ভারতকে একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বিরাট সুপ্ত শক্তির অধিকারী উন্নয়নশীল বড় দেশ এবং আকর্ষণীয় নবোদিত অর্থনৈতিক সত্তা হিসেবে মনে করা হয়।
চীন ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরে দু'পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সার্বিক দ্রুত অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দী প্রবেশের পর দু'দেশের মধ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি মুখী কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা দ্রুতই বিকশিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মূল্য প্রায় ৪৯ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হার বজায় রেখেছে। ২০১০ সালে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মূল্য ৬১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। দশ বছরের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। চীন ভারতের প্রথম বড় বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতও চীনের সর্বাধিক বাণিজ্যিক অংশীদার।
চীন ও ভারতের মধ্যকার দিন দিন ঘনিষ্ঠ হওয়া অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদানপ্রদান আর বিনিয়োগের সহযোগিতা আর্থিক শিল্পের উন্নয়নের জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ভারতে চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংক উন্নয়নের জন্য বিশাল অবকাশ সরবরাহ করেছে। মুম্বাই শাখা ব্যাংক খোলার পর শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংকের খরিদ্দার ভাণ্ডার, অর্থ, নেট ও প্রযুক্তির প্রাধান্য কাজে লাগিয়ে ভারতে চীনের বিনিয়োজিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সর্বক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করবে, স্থানীয় টেলিযোগাযোগ, পরিবহন, বিদ্যুত্সহ অবকাঠামো নির্মাণ সমর্থন করবে, সক্রিয়ভাবে ভারী যন্ত্রপাতি ও মোটর গাড়িসহ নানা খাতে আর্থিক সেবা করবে, ভারতের কোম্পানি ও ব্যক্তিগত খরিদ্দারদের জন্য শ্রেষ্ঠ ও সুবিধাজনক আর্থিক সেবা সরবরাহ দেবে, চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের জন্য সেবা দেয়া, ভারতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য নিজের অবদান রাখবে।
| ||||
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |