চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৯ আগস্ট প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, জুলাই মাসে চীনের অধিবাসীদের ভোক্তা মূল্যসূচক, সিপিআই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৫ শংতাশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধির হার জুন মাসের চেয়ে ০.১ শতাংশ বেশি হওয়ায় নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির গতি স্পষ্টতই মন্থর হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঋতুর কারণে খাদ্যের দাম উঠানামা করাই চীনের সিপিআই'র প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর হওয়ার প্রধান কারণ।
প্রকাশিত উপাত্ত দেখে বুঝা যায়, খাদ্যের দাম সিপিআইর প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিচ্ছে। জুলাই মাসে চীনের খাদ্যপণ্যের দাম অনুরূপ সময়ের তুলনায় ১৪.৮ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে শূকরের দাম অনুরূপ সময়ের তুলনায় ৫৬.৭ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমির সামষ্টিক অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ইউয়ান কাং মিং বলেন, যদি সিপিআই'র প্রবৃদ্ধির হার আগের মাসের চেয়ে ০.১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, তাহলে বলা যায়, প্রবৃদ্ধির মাত্রা স্পষ্টভাবে মন্থর হয়েছে। তিনি বলেন, 'প্রবৃদ্ধির মাত্রা স্পষ্টভাবে মন্থর হওয়া মানে গত মাসে শূকরের দাম বৃদ্ধির অবস্থা পরিবর্তন হয়েছে অর্থাত্ দ্রুত বৃদ্ধি থেকে হ্রাস শুরু হয়েছে। দাম বৃদ্ধি প্রায় শেষ পর্যায় এসেছে। আগামী মাসে দামের পতন হবে। খাদ্যপণ্যের দাম উচ্চ বৃদ্ধি হলেও তেমন ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ খাদ্যপণ্যের দামের সাথে ঋতুর উপাদান সংশ্লিষ্ট। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে তা নেমে যাবে।'
প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, জুলাই মাসে জাতীয় শিল্প উত্পাদনকারীর কারখানা থেকে বের হওয়াকালীন দাম অর্থাত্ পিপিআই জুন মাসের সমান হয়েছে। তবে গত বছরের অনুরূপ সময়ের তুলনায় ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সম্পর্কে ইউয়ান কাং মিং বলেন, 'সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম অথবা জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাবের কারণে চীনের কাঁচামালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখন জ্বালানির দাম ও কাঁচামালের দাম উভয়ই নেমে গেছে। বিশেষ করে জ্বালানি ও তেলের দাম অনেক নেমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের উঠানামার সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। পরবর্তীকালে দাম বৃদ্ধির অবস্থা কিছুটা প্রশমিত হবে।'
আন্তর্জাতিক শ্রেণী যাচাই সংস্থা – স্ট্যান্ডার্ড পুরস ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ক্রেডিট শ্রেণী নামিয়ে দিয়েছে। ৮ আগস্ট এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ার বাজার কালো সোমবার-এর সম্মুখীন হয়েছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের এ-শেয়ার বাজারের বিপুল মাত্রায় পতন ঘটেছে। ইউয়ান কাং মিং বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় পরিষদের অধিবেশনের মর্ম অনুযায়ী, আমাদের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা খুব বেশি বাড়তে পারে না, নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে বড় আকারের উঠানামাও ঘটবে না। এখন স্ট্যান্ডার্ড পুরসের শ্রেণী নামানোর কারণ সৃষ্ট শেয়ার বাজারের পতন সম্ভবত পরবর্তী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পতন সৃষ্টি করবে এবং চীনের অর্থনীতির ওপর তা প্রভাব ফেলবে। সুতরাং এখন চীনের সামষ্টিক নিয়ন্ত্রণ কাজের সার্বিক ভারসাম্যের ওপর দৃষ্টি দেয়া উচিত।' (ইয়ু)