ছবি: শিল্পী ফেরদৌস আরা
‘আমি বড় আপার চেয়ে ভালো গান গাই, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের চেয়েও ভালো গাই’- ডানপিটে ছোট্ট মেয়েটির কথা শুনে ওস্তাদজি তো থ!
বললেন তবে শোনাও দেখি-
অমনি ছোট্ট মেয়েটি নির্ভয়ে গাইলো-
নি সা গা মা পা নি সা রে গা
গা, গারে পাখি গা,
সোনার শিকল দেব, সোনার খাঁচা দেব
সোনায় ভরিয়ে দেব গা!
ওস্তাদজি আবারো তাজ্জব বনে গেলেন! বললেন, সত্যি তুমি ছোট নও; অনেক বড়! তারপর ছড়াগান রেখে তাকে তালিম দিলেন প্রথম নজরুলসংগীতে- ইয়া মোহাম্মাদ বেহেশত্ হতে খোদায় পাওয়ার পথ দেখাও- সেই থেকে শুরু!
ছোটবেলায় দস্যিপনা করে বেড়ানো, বাচ্চাদের ছাড়াগান শিখতে না চাওয়া সেই মেয়েটি আজকের প্রখ্যাত নজরুলসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও গবেষক ফেরদৌস আরা। দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে নজরুলের অজস্র গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। নজরুল সংগীতকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা তার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি মিউজিক কলেজে খণ্ডকালীন অধ্যাপনা, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নজরুল সংগীতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নজরুল ইনস্টিটিউটের প্রতিটি কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি।
নজরুলের বিষয়ে তার গবেষণাগ্রন্থ সংগীত ভূবনে নজরুল এবং সঞ্চিতার কথাবার্তা বই দুটি পাঠক মহলে সমাদৃত হয়েছে।
নজরুল সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেব তিনি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল পদক ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নজরুল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ নজরুল একাডেমী তাকে নজরুল পুরস্কার ও আসানসোলের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে। এছাড়াও বাচসাস পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল স্বর্ণপদকসহ দেশবিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাকে আজীবন সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে শিল্পী ফেরদৌস আরা জানালেন তার দীর্ঘ পাঁচ দশকের সংগীত সাধনার গল্প। তার স্বর্ণালীকণ্ঠে শুনিয়েছেন নজরুলে কয়েকটি বিখ্যাত গান।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম।