বন্ধুরা, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনাদের বিদেশে যাওয়ার সাথে সাথে চায়না ইউনিয়ন পে কার্ডও বিশ্বে যাচ্ছে। আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ আর চীনের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ আছে। এ অঞ্চল হচ্ছে গত দশ বছরে চীনাদের বিদেশে ভ্রমণ ও ব্যবসা করার প্রথম ধাপ। চীনারা সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোতে ভ্রমণের সময় সুবিধার সাথে ইউনিয়ন পে কার্ড ব্যবহার করতে পারে।
বিদেশে চীনাদের অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন দিন দিন বৃদ্ধির সাথে সাথে চায়না ইউনিয়ন পে কর্তৃপক্ষ 'চীনা যেখানে যান, ইউনিয়ন পে কার্ড সেখানে ব্যবহার করা যায়' এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এখন চায়না ইউনিয়ন পে কার্ডের ব্যবসা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ক্যাম্বোডিয়া, ব্রুনেই, লাওস, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার ১২টি দেশে সম্প্রসারিত হয়েছে।
চায়না ইউনিয়ন পে ২০০৫ সালে সিঙ্গাপুরে তার প্রথম বিদেশি শাখা অফিস খোলে এবং তারপর তার ভিত্তিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে প্রবেশ করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইয়াং ওয়েন হুই বলেন, "আসিয়ান অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলের ভূমিকা পালন করে সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরসহ আসিয়ানের অন্য দেশগুলোর ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিস্থিতি চীনের সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে। পর্যটনসম্পদ খাতে চীনের সঙ্গে পারস্পরিক পরিপূরকতা আছে। চীন আর এ এলাকার দূরত্বও অপেক্ষাকৃত কম। সুতরাং দশ বছর আগে থেকে বিপুল সংখ্যক চীনা পর্যটক বিদেশে ভ্রমণ শুরু করার সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চীনাদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় ছিল।"
তা ছাড়া, সিঙ্গাপুর সরকার সবসময় সক্রিয়ভাবে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সে দেশে বিনিয়োগে উত্সাহ দেয়। ইয়াং ওয়েন হুই বলেন, "সিঙ্গাপুর সরকার বিদেশি পুঁজিকে স্বাগত জানায়। সিঙ্গাপুরে শুল্কসংক্রান্ত কিছু আনুষঙ্গিক সুবিধাজনক নীতি আছে। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে সদরদপ্তর প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য বহুবিধ সহায়তা নীতি আছে। সিঙ্গাপুরের সংশ্লিষ্ট সংস্থা আমাদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রাখছে। আমরা সিঙ্গাপুর সরকারের ইতিবাচক ও উন্মুক্ত মনোভাব উপলব্ধি করতে পারি।"
আসিয়ানের জাতীয় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করার সাথে সাথে চায়না ইউনিয়ন পে আর স্থানীয় ব্যাংক ও অন্যান্য সহযোগিতার অংশীদারগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা শুরু হয়েছে। এখন স্থানীয় মার্কেট, হোটেল, পর্যটন স্থান ও নামকরা রেঁস্তোরাগুলো ইউনিয়ন পে কার্ড গ্রহণ করে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে কর্মরত ও অধ্যায়নরত চীনা আর চীনা পর্যটকরা ইউনিয়ন পে কার্ড ব্যবহারের সময় তার সুবিধা উপলব্ধি করেছেন। যেমন সিঙ্গাপুরের উন্নয়ন ব্যাংকের সকল এটিএম মেশিন ইউনিয়ন পে কার্ড ব্যবহার করা যায়।
ইয়াং ওয়েন হুই বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চায়না ইউনিয়ন পের সিঙ্গাপুরের শাখা কোম্পানির গত কয়েক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে বুঝা যায়, আমাদের বিদেশে যাওয়ার পথ হচ্ছে আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের নানা সম্প্রদায়ের সঙ্গে অপরিচিত থেকে সুপরিচিত হওয়া এবং সহযোগিতা শুরু থেকে গভীর সহযোগিতা করার প্রক্রিয়া। চায়না ইউনিয়ন পে আর আসিয়ানের সহযোগিতা দু'পক্ষের ওপরই অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ইয়াং ওয়েন হুই বিশ্বাস করেন, চায়না ইউনিয়ন পে আর সিঙ্গাপুর ও আসিয়ানের অন্য দেশগুলোর ব্যাংকের সহযোগিতার ভবিষ্যতে আরও বিস্তীর্ণ হবে। (ইয়ু/এসআর)
| ||||