সভাপতি মহোদয় ও সম্মানিত সদস্যগণ:
এবারের শীর্ষসম্মেলনে গৃহীত ২০১৫ সালপরবর্তী উন্নয়ন কর্মসূচি বৈশ্বিক উন্নয়নের নতুন নীললকশা এঁকেছে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমাদের উচিত একে নতুন সূচনাস্থল হিসেবে গ্রহণ করা এবং যৌথভাবে এক ন্যায্য, উন্মুক্ত, সর্বাত্মক ও উদ্ভাবনমুখী উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া ও বিভিন্ন দেশের অভিন্ন উন্নয়নের জন্য কাজ করা।
---আমাদেরকে সমউন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে, যাতে সকল দেশ উন্নয়নের সমান সুযোগ পায়। বৈশ্বিক উন্নয়নে সকল দেশেরই অংশগ্রহণের, অবদান রাখার, এবং এর সুবিধা ভোগ করার সমান অধিকার রয়েছে। বৈশ্বিক উন্নয়নের সুবিধা শুধু এক বা গুটিকতক দেশ ভোগ করবে এবং অধিকাংশ দেশ তা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবে—তা ঠিক নয়। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সামর্থ্য ও মানে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে সকল দেশেরই দায়িত্ব পালন করতে হবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রশাসনকে আরও উন্নত করতে হবে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে, এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়নে সকল দেশের সমান ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকতে হবে।
----আমাদেরকে উন্মুক্ত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে উন্নয়নের সুফল সকল পক্ষ ভোগ করতে পারে। অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের এ যুগে সকল দেশকে নিজ নিজ দরজা খোলা রাখতে হবে এবং উত্পাদনের ফ্যাক্টরগুলোকে বিশ্বব্যাপী আরও অবাধে প্রবাহিত হবার সুযোগ দিতে হবে। সকল দেশের উচিত যৌথভাবে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থা রক্ষা করা, উন্মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলা, এবং পারস্পরিক আলোচনা ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এর সুবিধা ভাগাভাগি করা। আমাদেরকে পরস্পরের উন্নয়নপথকে সম্মান করতে হবে এবং একে অপরের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে হবে। উন্নয়নের বিভিন্ন পথ ধরেই আমাদেরকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে হবে এবং উন্নয়নের সুফল বিশ্বের সকল মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
---আমাদেরকে সর্বাত্মক উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নভিত্তিকে আরও মজবুত করতে হবে। উন্নয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্য জনগণের সেবা। দারিদ্র্য বিমোচন ও জীবনমান উন্নত করার প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমাদেরকে সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক মানুষ যাতে উন্নয়নের সুযোগ ও সুফল ভোগ করতে পারে—তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মানুষ ও সমাজ এবং মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে স্বাস্থ্যকর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
---আমাদেরকে উদ্ভাবনমুখী উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সুপ্ত শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়। উদ্ভাবন একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। উন্নয়নের সমস্যা কেবল উন্নয়নের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। সকল দেশের উচিত সংস্কার ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নয়নের সুপ্ত শক্তি জাগিয়ে তোলা, প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি বাড়ানো, এবং নিজ নিজ প্রতিযোগিতার ক্ষমতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা।
| ||||