Web bengali.cri.cn   
সুরের ধারায় আসর: বংশীবাদক ইয়ু সুন ফা
  2015-11-10 19:59:54  cri


বন্ধুরা, আজকের সুরের ধারায় আসরে আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো চীনের বিখ্যাত বংশীবাদক ইয়ু সুন ফা ও তার বাজানো বাঁশির সুরের সঙ্গে। এখন আপনারা শুনছেন 'লাং ইয়া বিষয়ক মনোরম সুর'। এ সুর ১৯৮৪ সালে শাংহাইয়ের বসন্ত প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার জয় করেছে।

ইয়ু সুন ফা ১৯৪৬ সালের ৮ জানুয়ারি শাংহাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন শাংহাই জাতীয় অর্কেস্ট্রার প্রথম শ্রেণীর বাদক, চীনের সংগীতজ্ঞ সমিতির সদস্য। চীনে 'প্রাচীনকালে ইয়ু পো ইয়া ছিলেন আর বর্তমান যুগে আছেন ইয়ু সুন ফা' এমন কথা প্রচলিত ছিল। এতেই বোঝা যায়, তার বাঁশির সুর কতটা চমত্কার ও মনোমুগ্ধকর।

ইয়ু সুন ফা ছোট বেলা থেকেই চীনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্র পছন্দ করতেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি মাস্টার লু ছুন লিংয়ের কাছে যন্ত্রসংগীত শিখেন। ১৯৬২ সালে তৃতীয় 'শাংহাইয়ের বসন্তকাল' নামের প্রতিযোগিতায় প্রথম বারেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি ধারাবাহিকভাবে শাংহাই অর্কেস্ট্রা, শাংহাই পিকিং অপেরা অর্কেস্ট্রা ও চীনের শিল্পকলা দলে প্রায় আট বছর বাদ্যযন্ত্র বাজান। বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমেতিনি বাঁশি বাজানোর ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি পর পর ফাং জি ছুন, লিউ কুয়ান ইয়ুন ও চাও সোং টিং প্রমুখ বাঁশির শিক্ষকদের কাছে প্রশিক্ষণ নেন।

ইয়ু সুন ফা বাঁশি দিয়ে ২০টি একক সুর সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে 'শরত্কালের জ্যোত্স্না রাতের হ্রদের দৃশ্য' ১৯৮৪ সালে শাংহাইয়ের বসন্ত শীর্ষক প্রতিযোগিতার শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার পেয়েছে। বন্ধুরা, এবার শুনুন ইয়ু সুন ফার বাজানো শরত্কালের জ্যোত্স্না রাতের হ্রদের দৃশ্য নামে সুরটি।

ইয়ু সুন ফা বাঁশি বাজানোর ক্ষেত্রে ১৭টি নতুন শৈলী সৃষ্টি করেন এবং তা বই আকারে প্রকাশ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি 'মুখের বাঁশি' আবিষ্কার করেন, ১৯৭৩ সালের ১ মে শাংহাই স্টেডিয়ামে তা দিয়ে বাজালে উপস্থিত দর্শকরা তাকে প্রচুর করতালি দেয়। এরপর 'মুখের বাঁশি' চীনের জাতীয় উপহার হিসেবে বিদেশি রাষ্ট্র প্রধানকেও দেওয়া হতো।

ইয়ু সুন ফার বাঁশি অ্যালবাম 'ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে শরত্কালের চিন্তা' ১৯৯২ সালের অক্টোবরে পেইচিং দ্বিতীয় জাতীয় স্বর্ণ ডিস্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। বন্ধুরা, শুনুন 'ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে শরত্কালের চিন্তা' নামে সুর।

ইয়ু সুন ফা গত শতাব্দীর ৭০'র দশকের প্রথম দিক থেকে পর পর ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকার ত্রিশটিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল সফর করেন। তিনি অনেক বার আমন্ত্রিত হয়ে তাইওয়ান, হংকং ও ম্যাকাওয়ে সংগীতানুষ্ঠান ও লেকচার দেন। তিনি বিদেশসফরের মাধ্যমে চীনের জাতীয় সংগীত আর পশ্চিমা সংগীতের ইতিবাচক সমন্বয় ঘটান।

তার 'শীতকালের নদীতে তুষারপাত' নামে বাঁশির অ্যালবাম ১৯৯১ সালে দ্বিতীয় জাতীয় স্বর্ণ ডিস্ক পুরস্কার পেয়েছে। বন্ধুরা, এবার শুনুন 'শীতকালের নদীতে তুষারপাত' নামের সুরটি।

ইয়ু সুন ফা ২০০৬ সালের ২১ জানুয়ারি রোগে আক্রান্ত হয়ে শাংহাইয়ে মৃত্যুবরণ করেন। চীনের জাতীয় সংগীত ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে শাংহাইয়ের প্রথম সংস্কৃতি ও শিল্পকলা পুরস্কার দেওয়া হয়।

বংশীবাদক ইয়ু সুন ফা আর নেই, তবে তার সৃষ্টি ও বাঁশির মনোমুগ্ধকর সুরগুলো চিরকাল বেঁচে থাকবে এবং আমাদের মুগ্ধ করবে।

বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা চীনের বিখ্যাত বংশীবাদক ইয়ু সুন ফার সংক্ষিপ্ত পরিচয় এবং তার বাজানো কয়েকটি জনপ্রিয় সুর শুনলেন। এ অনুষ্ঠান শোনার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।

আজকের সুরের ধারায় আসর এ পর্যন্তই। আমি বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু/তৌহিদ)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040