0914yinyue.mp3
|
বন্ধুরা, এখন প্রচারিত হচ্ছে চীনের চলচ্চিত্র 'রঞ্জিত ত্বক' এর প্রধান সুর 'রঞ্জিত হৃদয়'।
'রঞ্জিত হৃদয়' নামের গানটি ২০০৯ সালের ১৯ এপ্রিল ২৮তম হংকং ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড এর সেরা মূল গানের পুরস্কার অর্জন করে। এ সুরটি বাজিয়েছেন চীনের গুচাং বাদক ছাং চিং। (শেষ)
ছাং চিং চীনের সিছুয়ান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকে তিনি লোং দে জুনের কাছ থেকে গুচাং বাজাতে শিখেন।
১৯৯১ সালে তিনি চীনের সংগীত শিক্ষালয়ে ভর্তি হন। এ শিক্ষালয় থেকেই ১৯৯৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক পাশ করে চীনের প্রাচ্য অভিনয় শিল্প গোষ্ঠীর গুচাং বাদক হন।
২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি থাইল্যান্ডের রাজকুমারীর গুচাং বাজানোর শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তিনি বহু বছর ধরে গুচাং বাজানো ও গুচাংয়ের সুর করার ওপর মনোযোগ দিয়ে আসছেন। গুচাংয়ের উপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, তাইওয়ান, হংকং ও চীনের মূলভূভাগের বেশ কিছু ডিস্ক কোম্পানি থেকে অনেক ডিস্ক প্রকাশ করেছেন।
ছাংচিং বহু নামকরা শিল্পীদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। বন্ধুরা, এবার শুনুন ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি চীনের টেলিভিশন কেন্দ্রের বসন্ত উত্সবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মার্কিন বাদক ইয়ানি ও ছাং চিং এর বাজানো একটি সুর।
২০১০ সালে ছাং চিং নিজের সৃষ্ট কর্ম বাজানোর জন্য একটি বাদকদল গঠন করেন। এ বাদকদলটি প্রধানত গুচাং, বেহালা, পিয়ানো ও পার্কাশন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গঠিত হয়। তিনি সাহস করে খুন অপেরা সহ চীনের সংগীতের উপাদান এতে যোগ করেন। তিনি প্রায়শই এ বাদকদল নিয়ে চীনের জাতীয় থিয়েটার, পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছর বক্তৃতা হল, শাংহাই প্রাচ্য কলাশিল্প কেন্দ্র, সিঙ্গাপুরের কাঁঠাল থিয়েটার সহ নানা জায়গায় সাফল্যের সঙ্গে বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন পিপা বীণা নামে একটি সুর। এ সুরটি বাজিয়েছেন চীনের আধুনিক পিপা বাদক ছাও ছোং। তিনি কেন্দ্রীয় জাতিগত বাদকদলের পিপা বাদক ও জাতীয়ভাবে প্রথম পর্যায়ের শিল্পী।
ছাও ছোং ১৯৭৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলায় তিনি ভাইয়ের সঙ্গে পিপা শিখতেন। তারপর সুন শুলিন ও অধ্যাপক লি কুয়াং হুয়ার কাছ থেকে তিনি পিপা শেখেন। তিনি 'থিয়েন হুয়া কাপ' শীর্ষক জাতীয় যুব পিপা প্রতিযোগিতার প্রথম শ্রেণীর পুরস্কার, প্রথম কেন্দ্রীয় সংগীত ইনস্টিটিউটের 'লোং ইন কাপ' শীর্ষক জাতিগত বাদ্যযন্ত্র প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ পুরস্কার, চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত 'শ্রেষ্ঠ যুব খেতাব'সহ নানা গৌরব অর্জন করেছেন।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন ছাও ছোংয়ের বাজানো 'শিন্ডলার্স লিস্ট' নামের একটি সুর। এই একই নামের একটি চলচ্চিত্র ১৯৯৪ সালে ৬৬তম অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের খ্যাতি অর্জন করে।
২০০০ সালে ছাও ছোং কেন্দ্রীয় সংগীত ইনস্টিটিউট থেক স্নাতক হন এবং একই সালে তিনি কেন্দ্রীয় জাতিগত বাদকদলে যোগ দেন। তিনি বহু বার কেন্দ্রীয় জাতিগত বাদকদল, চীনা ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রা ,চীনের সিমফনি অর্কেস্ট্রা, টোকিও নগর সিমফনি অর্কেস্ট্রা, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল সিমফনি অর্কেস্ট্রা, ডেনমার্কের বেতার সিমফনি অর্কেস্ট্রাসহ নানা বিখ্যাত অর্কেস্ট্রার সঙ্গে সুর বাজিয়েছেন। নিউইয়র্কের লিঙ্কন কেন্দ্র, কার্নেগাই হল, ওয়াশিংটন জাতীয় হল, প্যারিস চেজ এলিজ থিয়েটার, জাপানের সাপ্পোরো হল, নেদারল্যান্ডের অ্যামস্টারড্যাম হল ও সেন্ট পিটার্সবার্গ থিয়েটার সহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর শ্রুতিমধুর বাদ্যযন্ত্রের সুর রয়েছে।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন চাও ছোংয়ের বাজানো 'লিয়াংজু' নামে সুর।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড বলতেন, 'আমি উত্তেজিত মন নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আপনার সুর শুনতে চাই।'
দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক সিউল পত্রিকা চাও ছোংকে 'সংগীত কূটনীতিবিদ' মনে করে।
গ্র্যামি পুরস্কারের জুরি জেফ রোনা বলেন, 'চাও ছোংয়ের বাজানো চীনের 'শুনো' নামের সংগীত হচ্ছে বিশ্বের গীতিকারদের চোখে সবচেয়ে সুন্দর চীনের লোকসংগীত।"
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন 'চন্দ্র নদী' নামে সুর। সুরটি বাজিয়েছেন চীনের বিখ্যাত বাঁশি বাদক চেন ইউয়ান।
চেন ইউয়ান চেনচিয়াং প্রদেশের হাংচৌ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় বছর বয়স থেকে বাবার কাছ থেকে বাঁশি বাজাতে শিখেন। ১২ বছর বয়স থেকে তাঁর সুনাম অর্জন শুরু হয়। বর্তমানে তিনি হচ্ছেন চীনের সংগীত ইনস্টিটিউটের জাতীয় সংগীত বিভাগের উপ-অধ্যাপক, চীনের বাঁশি কমিটির উপ-মহাসচিব। ২০১৩ সালে তিনি কেন্দ্রীয় টেলিভিশন কেন্দ্রের 'চীনের সেরা দশ জন বাঁশি বাদক' নির্বাচিত হন।
চেন ইউয়ান যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও বৃটেনসহ অনেক দেশ ও অঞ্চল সফর করেছেন এবং বহু বার বিদেশী শীর্ষনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। তিনি চীনের লোকসংগীত বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের জন্য লক্ষণীয় অবদান রেখেছেন।
বন্ধুরা, এবার শুনুন তাঁর বাজানো 'যদি মেঘ জানে' নামে সুর।
এ পর্যন্ত চেন ইউয়ান নয়টি অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। প্রায় দু'এক বছর পরপরই তাঁর এক একটি নতুন বাঁশি অ্যালবাম বাজারে মুক্ত হয়। প্রতিটি অ্যালবামে নতুন ধারণা থাকে এবং এটি বিভিন্ন পক্ষের প্রশংসা অর্জন করে।
চেন ইউয়ান খুবই ব্যস্ত। শিক্ষাদান, পরিবেশনা, রেকর্ডিং ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের বাঁশি বাজানো শেখান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চার শরও বেশি ছাত্রছাত্রী তাঁর কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শেখে। তিনি চীনের লোকসংগীতকে জনপ্রিয় করে গড়ে তোলার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বন্ধুরা, এবার শুনুন চেন ইউয়ানের বাজানো 'গ্রীষ্মকালের শেষ গোলাপ' নামে সুর।
শ্রোতাবন্ধুরা, এতোক্ষণ আপনারা চীনের কয়েকজন যুব বাদকের বাজানো শ্রুতিমধুর সুর শুনেলেন। এ অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু)
| ||||