Web bengali.cri.cn   
ইয়ান আনের গান
  2015-08-17 20:03:21  cri

প্রিয় শ্রোতা, থাই হাং  পাহাড় চীনের শানশি প্রদেশ এবং হুয়া পেই সমতল ভূমির মাঝখানে অবস্থিত। জাপানবিরোধী যুদ্ধের সময় হোপেই এবং শানশির আট রুট বাহিনীর ১২৯ ডিভিশন লিউ দে ছেং, তেং সিয়াও পিংয়ের নেতৃত্বে থাই হাং অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়। থাই হাং পাহাড় থেকে শুরু হওয়া গেরিলা যুদ্ধ দ্রুতই ব্যাপকভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে বিকশিত হয়েছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখল করেছে।

১৯৩৮ সালে সুরকার সিয়ান শিং হাই এবং লেখক কুই শেং থাও 'থাই হাং পাহাড়ে' নামে একটি গান রচনা করেন। ১৯৩৮ সালের জুলাই মাসে উ হান জাপানবিরোধী যুদ্ধ জয়ের এক বছর পূর্তি সংগীতানুষ্ঠানে এ গান প্রথমবারের মতো পরিবেশন করা হয়। এরপর গানটি দ্রুত জাপানবিরোধী ঘাঁটিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ গানে থাই হাং পাহাড়ের গেরিলা দলের সদস্যদের উত্তেজনাকর লড়াই ও তাদের অদম্য সাহসী এবং আশাবাদী চরিত্রের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।

থাই হাং পাহাড়

বন্ধুরা, এবার শুনুন 'থাই হাং পাহাড়ে' নামে গানটি। এ গানে অদ্ভূতভাবে চীনাদের প্রচন্ড দেশপ্রেম প্রতিফলিত হয়েছে। গানে বলা হয়েছে, "লাল সূর্যালোক প্রাচ্যকে আলোকিত করছে। মুক্তর দেবতা ইচ্ছেমত গান গায়। তাকিয়ে দেখুন, জাপানবিরোধী আগুন থাই হাং পাহাড়ে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। শুনুন, মা ছেলেকে জাপানী আগ্রাসীকে আঘাত হানতে বলছে। স্ত্রী তার স্বামীকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাচ্ছে। শত্রু যে জায়গা থেকেই আক্রমণ করুক, আমরা সেখানেই তাকে নির্মূল করবো।"

জাপানবিরোধী যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি গেরিলাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৩৭ সালে বিখ্যাত সুরকার হো লিউ ডিং'গেরিলা দলের গান' নামের একটি গান রচনা করেন। এ গানের সুর বেশ প্রাণবন্ত ও সাবলীল। গানটি বিংশ শতাব্দীর ৯০'র দশকের প্রথম দিকে 'বিংশ শতাব্দীর সর্বোত্কৃষ্ট চীনা সংগীত' হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।

বন্ধুরা, এবার শুনুন কণ্ঠশিল্পী ইয়ু জুন চিয়ানের গাওয়া 'গেরিলা দলের গান'। এ গানে বলা হচ্ছে, "আমরা সবাই অব্যর্থ লক্ষ্যে গুলি চালাই। প্রতিটি গুলি একজন শত্রুকে নির্মূল করে। গভীর বনে কমরেডদের বাসস্থান। উচু পাহাড়ে আমাদের অসংখ্য ভাই রয়েছে। খাওয়া দাওয়া নেই আমাদের। বন্দুক ও কামান নেই। শত্রু রা আমাদের হত্যা করতে তৈরি। আমরা এখানে বড় হয়েছি, এখানকার প্রতি ইঞ্চি মাটি আমাদের নিজেদের। কেউ জোর করে দখল করতে চাইলে আমরা তার সঙ্গে লড়াই করবো।"

চীন জাপানের আগ্রাসনের শিকার হলে তত্কালীন ক্ষমতাসীন পার্টি চীনের কুওমিনতাং পার্টি এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দীর্ঘ আট বছর অদম্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে। শত্রুর লাইনের পিছনে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠিত ঘাঁটিকে 'মুক্ত অঞ্চল' বলা হতো। অর্থাত জাপানী আগ্রাসীদের হাত হতে মুক্ত করা অঞ্চল। মুক্ত অঞ্চলে যাওয়া হচ্ছে তত্কালীন চীনাদের স্বপ্ন। ১৯৪৩ সালে লিউ শি লিন স্থানীয় লোকসংগীতের ভিত্তিতে 'মুক্ত অঞ্চলের আকাশ' নামে একটি গান রচনা করেন। এ গানে বলা হয়েছে, "মুক্ত অঞ্চলের আকাশ হচ্ছে সূর্যালোকিত গান। মুক্ত অঞ্চলের জনসাধারণ খুব খুশি। গণ সরকার জনগণকে ভালোবাসে। কমিউনিস্ট পার্টির দয়ার কথা বলে শেষ করা যায় না।"

জাপানবিরোধী যুদ্ধের সময় চীনা শিল্পীরা গান, নাটক ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শত্রুদের নির্মূল করার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করেন এবং সারা চীনের জনগণকে উত্সাহ দেন। ১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বরে সুরকার সিয়ান শিং হাই এবং লেখক চাও ছি হাই 'শত্রুদের পেছনে হটাবো' নামে গান রচনা করেন। এটাও তত্কালীন খুব জনপ্রিয় একটি জাপানবিরোধী গান। এ গানে বলা হয়েছে, "শত্রুদের পিছু হটিয়ে তাদের দেশের বাইরে বহিষ্কার করবো। বৃষ্টি বা বাতাস আমরা কিছুই ভয় করি না। আজ এক গ্রাম আক্রমণ করি তো আগামীকাল এক শহর অধিগ্রহণ করি। পশ্চিম থেকে পূর্ব, পেইটিং থেকে নানচিং সব জায়গায় আমাদের গেরিলা আছে। সব জায়গায় আমাদের দেশপ্রেমী ভাই আছে। আমাদের পতাকা পূর্ব চীনের তিনটি প্রদেশ ও হোয়াং হো নদীর পূর্ব তীরে প্রবেশ করছে। শত্রুদের পিছু হটিয়ে তাদের দেশের বাইরে বহিষ্কার করবো।"

1 2 3 4 5
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040