Web bengali.cri.cn   
বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ২০১৪-১৫ : ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো বাজেট পাস
  2014-06-30 17:39:50  cri

কর কাঠামোয় সামান্য পরিবর্তন ছাড়া প্রায় অপরিবর্তিতভাবেই পাস হলো বাংলাদেশের ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। নির্দিষ্টকরণ বিল অনুমোদনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদে রোববার পাস হয় দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ বাজেট। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে বাজেট পাসের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। অর্থমন্ত্রী ৫ জুন সংসদে বাজেট পেশের পর প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতাসহ রেকর্ড ২৬৫ জন সংসদ সদস্য বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।

অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার বাজেট অপরিবর্তিত রূপে পাস হয় সংসদে। বিদায়ী বাজেটের চেয়ে তা ২৮ হাজার ১৫ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটের মতোই রাজস্ব আয় ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা আর ঘাটতি থাকছে ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপি ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকাও অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমবারের মতো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার উন্নয়ন বাজেট নিয়ে এডিপির মোট আকার থাকছে ৮৬ হাজার কোটি টাকায়। বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৪১ কোটি টাকা।

১ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এ বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৬টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা ২৪৯টি ছাটাই প্রস্তাব আনেন। তবে এসব ছাটাই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।

বাজেটে কর ও শুল্ক কাঠামোয় আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন । পুঁজি বাজার থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রির ওপর থেকে কর প্রতি বর্গফুটে ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৫ টাকা ৭৬ পয়সা করা হয়েছে। টুথপেস্ট, সাবান, ডিটারজেন্টের ওপর থেকে কর ২০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হলেও তা কমেনি। প্রসাধন সামগ্রীর ওপর কর আগের মতো ৪৫ শতাংশই বহাল রয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডার আমদানির ওপর কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব অনুযায়ী মোবাইল ফোনসেট আমদানির কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী মোবাইল ব্যবহারের ওপর সারচার্জ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে অর্জিত তহবিল শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট সময়োপযোগী ও গণমুখী হওয়ায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। এ বাজেট সরকার বাস্তবায়ন করবে বলেও প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এবারো বাজেটে আবাসন খাতে বিনিয়োগের শর্তে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। শনিবার জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী। পদ্মা সেতুর মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনা কোম্পানীকে কার্যাদেশ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের জন্য অর্থের অভাব হবে না। প্রধানমন্ত্রীর চীন ও জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, তার এ সফরের ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, কিছুটা উচ্চাভিলাসি হলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

তবে, কর কাঠামো পুনর্বিন্যাসের সমালোচনা করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মিজ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরণে সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার সমালোচনা করে মিজ্জা আজিজ বলেন, এতে করে প্রকৃত করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040