Web bengali.cri.cn   
বাংলাদেশে ৮৬ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি
  2014-05-26 19:01:39  cri

রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে গত তিন বছরের মধ্যে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি- এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাগুলোর পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণ করে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশের ওপরে। বেড়েছে মাথাপিঁছু আয়ও। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে উঠে এসেছে এমন ভালো ভালো সব খবর।

চলতি সপ্তাহে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক বৈঠকে এসব তথ্যউপাত্ত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল। মন্ত্রী জানান, দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। মাথাপিঁছু আয় ১ হাজার ৪৪ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১৮০ ডলার। রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এডিপি বাস্তাবায়ন হয়েছে ৫৬ শতাংশ- গত দুবছরের একই সময়ে যা ছিল যথাক্রমে ৫৪ ও ৫৫ শতাংশ।

একনেক বৈঠকে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থনীতির এই ইতিবাচক প্রবণতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে থাকবে- এ বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। মাথাপিঁছু আয় বেড়ে যাওয়া জনগণের জীবনমানের উন্নয়নের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এডিপি বাস্তবায়নকে তার সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধির পরিচায়ক বলেও দাবি করেন তিনি।

আগামী অর্থবছরে বেড়েছে এডিপি বরাদ্দ

২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপি বরাদ্দ ছিল ৭৩ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে তা প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮৬ হাজর কোটি টাকা। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় এ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এক হাজার ১৮৭টি প্রকল্পের বিপরীতে দেওয়া হয়েছে এ অর্থের অনুমোদন।

পরিকল্পন কমিশন ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এডিপির জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকা চায় সরকারের কাছে। তবে, বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি ৭৯ হাজার ৩১ কোটি টাকা বরদ্দের সুপারিশ করে। অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর সঙ্গে আরো এক হাজার ২৮৪ কোটি টাকা বাড়ানোর নির্দেশ দেন। এর সঙ্গে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার উন্নয়ন কর্মসূচি যুক্ত হওয়ায় এডিপির আকার দাঁড়ায় ৮৬ হাজার কোটিতে। প্রসঙ্গত: এবারই প্রথম স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার উন্নয়ন ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এডিপিতে।

এডিপিতে সর্বাধিক গুরুত্ব পরিবহন খাতে

পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, আগামী অর্থবছরেও এডিপিতে নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ৯৮ কোটি টাকার বেশি। এর পরেই রয়েছে শিক্ষা ও ধর্ম খাত। এ খাতে বরাদ্দ ৯ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। কৃষি খাতে বরাদ্দ ৫ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এডিপির ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবাহ ও গৃহায়ণ খাতে বরাদ্দ এডিপির ১০ শতাংশ। এডিপির ১ হাজার ১৮৭টি প্রকল্পের মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ৮৭৯টি। ১৩৪টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প, ২১টি জেডিসিএফ প্রকল্প এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প রয়েছে ১৫৩টি।

একক প্রকল্প হিসেবে পদ্মা সেতু বরাদ্দের শীর্ষে

এডিপিতে একক প্রকল্প হিসেবে পদ্মা সেতুতে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা এবং ভারত থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। প্রসঙ্গত: চীনের খ্যাতনামা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী নির্মাণ করবে পদ্মা সেতুর মূল অংশ। ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থে ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করবে কোম্পানিটি । চলতি সপ্তাহে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ কাজের জন্য চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানীকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040